জুমুআর খুতবায় খতিব সাহেব আজ (২৬-০২-২০২১) তাওবা, হাক্কুল্লাহ ও হাক্কুল ইবাদ নিয়ে আলোচনা করেছেন। হাক্কুল্লাহ তথা আল্লাহর হক হলো সালাত, সাওম, হাজ্ব ইত্যাদি। এগুলো যদি বান্দা পালন না করে, তবে আল্লাহ চাইলে শাস্তি দিতে পারেন অথবা ক্ষমা করে দিতে পারেন। এসব গোনাহের ব্যাপারে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে, ভবিষ্যতে এমন না করার সংকল্প করলে আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেবেন ইনশাআল্লাহ। কিন্তু হাক্কুল ইবাদ তথা বান্দার হক নষ্ট করলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না।
আপনি যদি কারো সম্পত্তি চুরি করেন কিংবা কেড়ে নেন, তাহলে এই গোনাহ আপনি আল্লাহর কাছে যতোই তাওবা করেন, আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। এজন্য আপনাকে ঐ ব্যক্তির সম্পদ তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে, তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ঐ ব্যক্তি যদি ক্ষমা করে দেন, তবে আপনি মাফ পাবেন; নয়তো হাশরের ময়দানে আপনাকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, যে ব্যক্তির সম্পদ আত্মসাৎ করেছেন, তাকে তখন আপনার অর্জিত সাওয়াব দেওয়া হবে, সাওয়াব শেষ হয়ে গেলে ঐ ব্যক্তির গোনাহ আপনাকে দেওয়া হবে। অর্থাৎ, হাক্কুল ইবাদ নষ্ট করা অত্যন্ত ভয়াবহ একটি বিষয়।
খতিব সাহেব হাক্কুল ইবাদ সম্পর্কে আরো কিছু মাসআলা আলোচনা করলেন। এসময় অনেককেই চিন্তামগ্ন দেখা গেল। সালাতশেষে নিজেদের কৃতকর্মের ব্যাপারে অনুতপ্ত হয়ে খতিব সাহেবের কাছে পরামর্শ চাইলেন, কী করা যায়। খতিব সাহেব কিছু পরামর্শ দিলেন। ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছেও গ্রামের দুয়েকজন যুবক নিজেদের অপকর্মের কথা জানিয়ে পরামর্শ চাইলেন। তাদের অপকর্মের কথা শুনে আসলে হতবাক হওয়া ছাড়া উপায় নেই। কত মানুষের গাছ থেকে, ক্ষেত থেকে কী পরিমাণ চুরি করেছেন, তার কোনো হিসেব নেই। একজন বলছিলেন, একজনের বেশ কয়েকটি নারিকেল গাছের অন্তত ২০০ ডাব তারা চুরি করেছেন! আরেকজন বললেন, একজনের আলু ক্ষেত থেকে রাতের বেলা বস্তাভরে আলু তুলে এনেছেন। এসব চুরি তারা বন্ধুদের সাথে মজা করেই করে ফেলেছেন; হয়তো এগুলোকে চুরিই মনে করেনি। তাদের মতো এমন অনেকেই হয়তো বন্ধুদের সাথে পার্টি দেওয়ার নামে এভাবে অন্যের হক্ব নষ্ট করেন। কিন্তু একটিবারও কি চিন্তা করে দেখেছেন, যাদের হক্ব মেরে খাচ্ছেন তাদের মনে কী অবস্থা হচ্ছে তখন?
আপনি যে আরেকজনের গাছের ডাব চুরি করলেন, গাছের মালিক হয়তো এই ডাবগুলো বিক্রি করে ছেলেমেয়েদের জন্য ভালো খাবার আনার চিন্তা করছিলেন। কৃষকের ক্ষেতের আলু নিয়ে আপনারা আলুর চবের পার্টি দিচ্ছেন, ওদিকে কৃষক হয়তো সম্পদ হারানোর শোকে খেতে পারছেন না। চুরিগুলো আসলে এমনই হয়। অন্যের হৃদয়ে ছুরিকাঘাত করে আপনি সুখে থাকার চিন্তা করছেন, তা আসলে সুখ নয়। আখিরাতে তো নয়ই, এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়াতেও এই সুখ আরো ক্ষণস্থায়ী।
তাওবা করুন, ফিরে আসুন রবের দিকে। ছোটোখাটো চুরির ব্যাপারেও আল্লাহকে ভয় করুন। আপনি আজ যে চুরিটিকে চুরিই মনে করছেন না, ভিনজায়গার কেউ এসে যদি আপনার গ্রামে এমনই ছোটোখাটো কোনো চুরি করে, তাকে পেটাতে কিন্তু আপনার বাঁধে না। তাকে ঠিকই চোর আখ্যা দেন। একবার চিন্তা করে দেখুন, আপনিও সেই চুরই গণ্য হবেন, হয়তো দুনিয়ার মানুষের থেকে আড়ালে থাকতে পারবেন, কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে নয়। হাশরের মাঠে ঠিকই আপনাকে চোর হিসেবে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজতে রাখুন।
Nice post
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
good…
বন্ধু, শব্দটাই শান্তির
nice
Good
Ok
সত্য
nice post.
excelent
❤️
সুন্দর
nice