আসসালামু আলাইকুম।
ধনী ব্যাক্তি আর বিলিয়নিয়ার বললেই বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গ এদের কথা আসে। কিন্তু আমাদের এই সোনার বাংলাদেশেও আছে ধনী এবং বিলিয়নিয়ার। শুধু তাই নয় তারা বিশ্ব রেংকিংয়েও স্থান পেয়েছে এবং দেশকে এগিয়ে নিতে নানাভাবে সাহায্য করে। আজ পরিচয় করিয়ে দিবো বাংলাদেশের শীর্ষ ৫ জন ধনী ব্যাক্তির সাথে। চলুন শুরু করি।
১) মুসা বিন শমসের:
মুসা বিন শমসের (বা প্রিন্স মুসা) হলেন একজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি। যাকে কিনা বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির জনক হিসেবেও মনে করা হয়ে থাকে।
*জন্মঃ ১৫ অক্টোবর ১৯৪৫ ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন, তৎকালীন ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)।
পেশাঃ বর্তমানে তিনি ড্যাটকো গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
*যেভাবে শুরু/অর্জনঃ মুসা বিন শমসের তরুণ বয়সেই ব্যবসা শুরু করেন। উনার প্রথম ব্যবসায়িক জীবনে ড্যাটকো নামের বৃহৎ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মুসা জনশক্তি রপ্তানিতে দেশের একজন দিকপাল হিসেবে পরিচিতি পান। শুধু তাই নয়, তিনি ১৯৭০ এবং ১৯৮০ এর দশকে আন্তর্জাতিকভাবে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবেও ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিলেন।
*ব্যবসাঃ DATCO Group, Arms Dealer.
*নেট মূল্যঃ $ ১২ বিলিয়ন।
২) তারেক রহমান
তারেক রহমান হলেন একজন রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। অনেকে তাকে তারেক জিয়া নামেই জানে।
*জন্মঃ ২০ নভেম্বর ১৯৬৭ সালে ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান। (বর্তমানে বাংলাদেশ)।
*যেভাবে শুরু/অর্জনঃ ছাত্র জীবন শেষ হলেই, তিনি ব্যবসাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এবং বস্ত্র শিল্প ও নৌ-যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া কমিটির সদস্য হিসেবে যোগদানের মাধমেই রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন।
বর্তমানে তিনি, ২০১৫ সালে চালু হওয়া WHITE AND BLUE CONSULTANTS LIMITED নামে কোম্পানির ডিরেক্টরের দায়িত্বে আছেন।
*ব্যবসাঃ White and Blue Consultants limited, Politics.
*নেট মূল্যঃ $ ১.৫ বিলিয়ন।
৩) আহমেদ সালমান ফজলুর রহমান (সালমান এফ রহমান)
আহমেদ সালমান ফজলুর রহমান হলেন একজন বাংলাদেশি শিল্পপতি, একাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বাণিজ্য সংস্থার সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন যার মধ্যে একটি হলো, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)।
*জন্মঃ ২৩ মে ১৯৫১ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ)।
*যেভাবে শুরু/অর্জণঃ সালমান এফ রহমান এবং সোহাইল রহমান(ভাই) তাদের পারিবারিক পাটকল শুরু করার মাধ্যমে ১৯৬৬ সালে ব্যবসায় প্রবেশ করেন।
পরে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সরকার পাটকলটি সরকারি করণের মাধ্যমে তারা পাটকল ব্যবসা হারান। এরপর ১৯৭২ সালে তারা এক্সপোর্ট এন্ড ইম্পোর্ট কোম্পানি বেক্সিমকো প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৬ সালে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ১৯৮২ সালে দুবাই ভিত্তিক গালাধারী ভাই গ্রুপের সাথে মিলে বাংলাদেশে এবি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। তবে ১৯৮৫ সালে সালমান এফ রহমান তার শেয়ার বিক্রি করে দেন এবং পরবর্তীতে আইএফআইসি ব্যাংকের ৩০% শেয়ার ক্রয় করেন। ২০১০ সালে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। এছাড়াও তিনি ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকা ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের মানিক। তিনি ১৯৯০ দশকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।
*ব্যবসাঃ বেক্সিমকো গ্রুপ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকা, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন।
*নেট মূল্যঃ $ ১.৩ বিলিয়ন।
৪) সজীব আহমেদ ওয়াজেদ (জয়)
সজীব ওয়াজেদ জয় হলেন একজন বাংলাদেশী আইসিটি পরামর্শক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রির ছেলে। বর্তমানে তিনি স্হায়ীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় বাস করছেন।
*জন্মঃ ২৭ জুলাই ১৯৭১ ঢাকায়, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান(বর্তমানে বাংলাদেশ)।
*যেভাবে শুরু/অর্জণঃ ১৯৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে জয় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালে তার নানা শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা হওয়ার পরে, জয় মায়ের সাথে জার্মানি এবং লন্ডন হয়ে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ভারতে। ২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, জয়কে পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ দেয়া হয়। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ ২০১৯ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত আছেন।
*পেশাঃ রাজনীতি, তথ্য প্রযুক্তি।
*নেট মূল্যঃ $ ১ বিলিয়ন।
৫) সৈয়দ আবুল হোসেন।
সৈয়দ আবুল হোসেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত বাংলাদেশের যোগাযোগ মন্ত্রী এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
*জন্মঃ ১ আগস্ট ১৯৫১ সালে মাদারীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ)।
*যেভাবে শুরু/অর্জণঃ সৈয়দ আবুল হোসেন ১৯৭২ সালে শিক্ষাজীবন শেষে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন এবং পরবর্তীতে চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করেন।
তিনি ১৯৭৫ সালে সাহকো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এবং সাহকো এনজিও প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এশিয়ার বোয়াও ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। নিজস্ব অর্থায়নে তিনি গড়ে তোলেন ৪টি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ, ৬টি কলেজ, ৫৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৮টি মাদ্রাসা ও ১০০টি কমিউনিটি বিদ্যালয়।
আলহাজ্ব সৈয়দ আবুল হোসেন ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৯ সালে পর পর চারটি সাধারণ নির্বাচনে মাদারীপুর-৩ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও তিনি পূর্ববর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক।
*ব্যবসাঃ সাহকো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনীতি।
*নেট মূল্যঃ $ ১ বিলিয়ন।
এই তথ্যগুলো Topinbangladesh থেকে নেওয়া হয়েছে।
ধন্যবাদ।