ভাতের মাড়ের বহু গুণ ও উপকারিতা।

ভাত বর্তমানে শুধু বাংলাদেশ, ভারত, চীনে নয় প্রায় সারাবিশ্বেই গত কয়েক দশকে ভাতের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির দৃশ্য চোখে পড়ার মতো।এখন সব উন্নত রাষ্ট্র গুলোতেও ভাতের চাহিদা দিনদিনই বাড়ছে।কিন্তু সমস্যা একটা জায়গায়। ভাত রান্নার সময় সবাই একটা বিশাল ভুল করে ফেলছেন।

সেই ভুলটি কি?ভাত রান্নার পর ভাতের মাড়টা ফেলে দিচ্ছেন।কিন্তু আপনি কি জানেন ভাতের সব গুণাগুণের সিংহভাগ ওই ভাতের মাড়টাতে?
হ্যাঁ,ভাত রান্নার সময় যে পানি দেয়া হয় রান্না শেষে সেটাই চালের বিভিন্ন উপাদান মিশ্রিত হয়ে আরও ঘন হয় আর এটাকেই আমাদের প্রচলিত ভাষায় মাড় বলে।এই মাড়েই চালের/ভাতের সিংহভাগ গুণাগুণ থাকে, যেটাকে আমরা ফেলে দেই।যার কারণে পরে থাকে শুধু সাদা ভাত যেটা খেলে ওজন বাড়া ছাড়া আর কিছুই হয় না।

ভাতের মাড় সম্পর্কে, এর উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না, তো আজ আমি আপনাদের তাই জানানোর চেষ্টা করবো।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এই ভাতের মাড় শরীর এবং ত্বক কে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এমনকি অনেক রোগের উপসমেও এই ভাতের মাড় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রাচীন একাধিক গ্রন্থেও এই ভাতের মাড় বা ফ্যানকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে বিভিন্ন রোগের উপসম করা যায়, কিভাবে রোগমুক্ত রাখা যায় শরীরকে সেই বিষয়ে অনেক কিছু লিখা রয়েছে।
এই লিখাতেও আধুনিক এবং প্রাচীন শাস্ত্রকে মিলিয়ে ভাতের ফ্যানের এমন কিছু উপকারীতা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, যা পড়তে পড়তে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন।

ভাতের মাড়ে উপস্থিত এন্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ,ভিটামিন ই সহ আরও বেশ কিছু কার্যকরী উপাদান আমাদের শরীর গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।সেই সঙ্গে আরও নানা কাজেও লাগে। যেমনঃ

. চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ভাতের মাড় খুবই কার্যকরী।সপ্তাহে তিনবার গোসলের আগে ভাতের মাড় চুলে লাগানএবং বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করার পর গরম পানি দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন।এভাবে একমাস করলেই দেখবেন আপনার চুলে আশানুরূপ ফল পাচ্ছেন।কেননা,এই ভাবে চুলে ভাতের মাড় দিলে চুলের গুড়া মজবুত হয়,চুলের গুড়ায় চুলের পুষ্টিগুণের অভাব মিটায়। এমনকি চুলপড়া সহ একাধিক স্কাল্প সম্পর্কিত রোগের প্রোকোপ কমতে শুরু করবে।সেই সঙ্গে চুলের উজ্জ্বলতাও বাড়বে বহু গুণে।

.ত্বককে সুন্দর এবং মসৃণ রাখতে মাড়ের ভূমিকা অসীম।গবেষণায় দেখা গেছে,প্রতিদিন ত্বকে মাড় মৈখে ম্যাসেজ করলে ত্বকের ছিদ্র ছোট হয়,ত্বকের উপরিভাগে মৃত কোষগুলো জমে যে আবরণ তাও সরে যায়,ত্বক মসৃণ এবং উজ্জ্বল হয়।
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে তুলোর সাহায্যে সারামুখে মাড় ভালোভাবে লাগান এবং সারারাত রেখে সকালে উঠে ধুয়ে নিন।তারপর আপনার মুখ দেখে আপনিই বিস্মিত হবেন।

.এছাড়াও প্রতিদিন দুবার করে মুখে ব্রুণস্থিত জায়গায় মাড় লাগালে ব্রুণের প্রকোপ থেকে সহজেই পরিত্রাণ পাওয়া যায়।কেননা,এই মাড়ে উপস্থিত ‘অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি‘ উপাদান ত্বকের অন্দরে প্রদাহ হ্রাস করে।তাই স্বাভাবিকভাবেই ব্রুণ কম হয়,ব্রুণ ভালো হয়ে যায়।

.ডায়ারিয়ার সমস্যায় ভুগছেন? অনবরত শুধু সব পানি খনিজ শরীর থেকে বেড়িয়েই যাচ্ছে?
তাহলে ভাতের মাড়ে একটু লবণ মিশ্রিত করে খান।উপকার মিলবে এবং শরীরে আবার পানি,খনিজ লবণ এসবের ঘাটতিও লাগব হবে।

.শরীর চর্চা করার আগে বেশ কিছু এনার্জি লোড করার জন্যে এই ভাতের মাড় খান।এতে ৮টি অ্যামাইনো এসিডডের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এতে করে শরীর চর্চা করার জন্যে উপযুক্ত এনার্জিও শরীরে যুক্ত হয়।

.প্রতিদিন দুইগ্লাস করে এটি খাবেন।আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

এছাড়াও আরও অনেক উপকার রয়েছে ভাতের মাড়ের যা লিখে শেষ করা যাবেনা।তবে অতি প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ গুলোই পেশ করতে চেষ্টা করলাম আপনাদের সামনে।আপনার কেনো উপকার হলো কিনা এটা পড়ে কমেন্ট করে জানাবেন অবশ্যই।

আসসালামু আলাইকুম

Related Posts

11 Comments

মন্তব্য করুন