আমরা প্রায় সকলেই কমবেশি মস্তিষ্কে চাপ অনুভব করে থাকি। পড়াশুনার চাপ, অফিসের চাপ, বাসার চাপ, রিলেশনের চাপ, এমন আরও অনেক চাপ বা স্ট্রেসে আমরা প্রতিনিয়ত ভুগে থাকি।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে ৮০% মানুষের জীবনে কোনো না কোনো ক্ষেত্রে স্ট্রেস অনুভব করে থাকে। যদি একজন মানুষ প্রতিদিনই স্ট্রেসের মধ্য দিয়ে দিন পার করতে থাকে, তবে তার কি অবস্থা হবে? আজ আমরা সে সম্পর্কে জানবো। তো মানসিক চাপ কিভাবে আসে এবং এর কারণে কি কি সমস্যা দেখা দেয় আর এর থেকে আমরা কিভাবে পরিত্রাণ পেতে পারি? তো চলুন জেনে নেয়া যাক-
মাত্র এক সেকেন্ডের মধ্যেই এটি আপনার ব্রেইনের ইমোশন প্রসেস ইউনিটে অ্যাড্রেনাল গ্লাডে অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেমে পৌঁছে যাবে এবং স্ট্রেসের প্রাথমিক অনুভূতিগুলো অনুভব হতে থাকবে। যেমন- হৃৎকম্পন বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়াসহ শ্বাস-প্রশ্বাস বেড়ে যাবে।
দশ মিনিট একটানা চাপের মধ্যে থাকার ফলে, আপনার আচরণ চেঞ্জ হয়ে আক্রমণাত্মক হয়ে যেতে পারে। আর ত্রিশ মিনিট এভাবে চলতে থাকলে, আপনার মনে রাখার ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। কেননা, স্ট্রেস লং টার্ম মেমোরি লস ঘটায় এবং সেই সাথে মনোযোগে বিঘ্ন ঘটায়।
পুরো এক দিন যদি আপনি চাপের মধ্যে দিয়ে পার করেন, তবে আপনার যৌনশক্তি হ্রাস পাবে। এই কারণে যৌনতায় অক্ষম রোগীদের প্রথম চিকিৎসা হিসেবে- চাপমুক্ত এবং রিলাক্স থাকতে বলা হয়।
একমাস এভাবে পার করার পর, আপনার অবস্থা অনেকটাই শোচনীয় হবে। আপনার কগনিটিভ ফাংশন পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। একটি পরীক্ষায় উঠে এসেছে- যেসব এমপ্লয়ী প্রচণ্ড চাপের মধ্যে কাজ করে থাকে, তাদের কাজের আউটপুট অন্যদের থেকে অনেক কম হয়। তাদের কাজে ভুল বেশি হয় এবং তাদের শারীরিক অবস্থাও অনেক শোচনীয় হয়ে যায়।
এছাড়াও এরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে যায় এবং এদের উদ্বেগ বেড়ে যায়। এই সবকিছুই হয় কর্টিসোল হরমোন বেড়ে যাওয়ার কারণে। যদিও আমরা জানি, কর্টিসোল আমাদের মানসিক আঘাত জনিত প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এর পরিমাণ অতিরিক্ত বেড়ে গেলে উপরোক্ত নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়।
নিয়মিত স্ট্রেস অনেক রোগের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন- হতাশা, হার্টের রোগ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়া- যার ফলে সর্দি-জ্বর বেশি হওয়া, ঘুম কম হওয়া, মুখে অরুচি, বন্ধ্যাত্ব, মনে রাখার ক্ষমতা হ্রাস এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকিও থাকে। তো বুঝতেই পারছেন মানসিক চাপ আমাদের কতটা সমস্যায় ফেলে দিচ্ছে।
সুতরাং, চাপ মুক্ত থাকার চেষ্টা করা আমার মনে হয় সব থেকে বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
চাপ মুক্ত থাকার জন্য আপনাকে যা করতে পারেন:
পারিবারিক সম্পর্ক
ঘরে বন্ধ থাকা অবস্থায় পারিবারিক সম্পর্ক গুলোর যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে কথা হচ্ছে বিশ্বজুড়েই। এখনকার পরিস্থিতিতে কাছের মানুষরাই কিন্তু হতে পারে একটা নির্ভরতার জায়গা।
আমরা পারিবারিক বন্ধনগুলো- যেগুলো একটু অযত্নে পড়ে গিয়েছিল, অবহেলায় পড়ে গেছিল, সেগুলোকে আরো দৃঢ় করার জন্য পরস্পরের প্রতি আরো বেশি মন খুলে কথা, কাজ ইত্যাদি আমরা আরো বাড়াতে পারি। যাতে করে, একজন আরেকজনের ভেতরে কি কষ্ট হচ্ছে, কি ধরনের অসহায়ত্ব হচ্ছে সেটি ভালো করে বুঝতে পারি।
ব্যায়াম
শুধু শারীরিক সুস্থতার জন্য না, মানসিকভাবে ভালো থাকলেও নিয়মমাফিক ব্যায়াম করাটা অত্যন্ত কার্যকর।
ব্যস্ততা
ঘরে থাকতেও নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। যেমন: সক্ষমতা থাকলে- ঘরের কাজগুলো ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। এতে করে কিন্তু পরিবারের সম্পর্কটা ভালো হয়। তাছাড়া যতটা সম্ভব সৃজনশীল কাজে মনোযোগ দিতে পারেন। পাজল বা ধাঁধার সমাধান করতে পারেন।
প্রার্থনা
যেকোনো দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে প্রার্থনা মনকে শান্ত রাখতে ভূমিকা রাখতে পারে। প্রার্থনা বা নামাজ পড়ে সৃষ্টিকর্তার কাজ থেকে যখন শক্তি চেয়ে নিই তখন কিন্তু ভেতরটা অনেক আরাম লাগে। মনে হয় যেন আমরা অন্তত কারো কাছ থেকে শক্তি চাইতে পারলাম।
মেডিটেশন
রোজ মেডিটেশন করা অত্যন্ত ভালো একটি। কারণ, মেডিটেশন করার ফলে, আমাদের মনটা ভবিষ্যতে বা অতীতে চলে যায় না। মনটাকে বর্তমানে ধরে রাখতে পারি। বুঝলেন তো- ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তা না করে বর্তমানকে ভালোভাবে কাটানোর চেষ্টা করতে হবে আর মেডিটেশন সাহায্যটা করতে পারে।
তাছাড়া নিঃশ্বাসের ব্যায়ামও আপনার মনকে শান্ত রাখতে বা শারীরিক সুস্থতা রাখতে সাহায্য করতে পারে। যদি গভীরভাবে নিঃশ্বাস নেন তাহলে ভেতরে অনেক অক্সিজেন প্রবেশ করে। সেই অক্সিজেন আমাদের মস্তিষ্কে যাবে। এবং আমাদের রক্তে সঞ্চালিত হবে। যাতে করে, আমাদের ভেতর একটু স্বস্তির অনুভূতি হয়। এতে করে আমরা অনেক বেশি ভালো থাকতে পারি।
Fine!
right
আসলে আমাদের জীবনের সমস্যা গুলো সবভাবে মিটানো যায় না। প্রয়োজনের খাতিরে নিজেকে বদলেই সমস্যাগুলোর থেকে কাটিয়ে উঠতে হয়।
GD
জানানোর জন্য ধন্যবাদ
nice post
❤️
Shundor Post
ধন্যবাদ