মা বাবাকে “কষ্ট দিও না”

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আসসালামুয়ালাইকুম। আমি আবারো হাজির হলাম সম্পূর্ণ নতুন আরো একটি আর্টিকেল নিয়ে। আমি আজ আপনাদের সামনে মা-বাবার প্রতি সম্মান- মর্যাদা, মা-বাবার প্রতি সদাচরণ, প্রভৃতি বিষয় নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব।

সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, এই পৃথিবীতে মা বাবা ছাড়া আমরা কেউ আসতে পারি নাই। এই পৃথিবীর আলো-বাতাস, অনাবিল সুখ -শান্তি, পৃথিবীর সুন্দর সুন্দর জীবন উপকরণ ইত্যাদি আজ আমরা দেখতে পেয়েছি শুধুমাত্র মা-বাবার কল্যাণেই। আমরা মাতৃগর্ভে দশ মাস দশ দিন বিচরন করে এই দুনিয়াতে প্রেরিত হয়েছি।

এই পৃথিবীতে মহান আল্লাহ পাক যত সংখ্যক সৃষ্টি পাঠিয়েছেন তারমধ্যে মানুষই হলো সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। মহান আল্লাহ এই মানুষের মধ্যে তার সন্তানদের প্রতি মায়া সৃষ্টি করে দিয়েছেন। এজন্য প্রত্যেক মা বাবা তার সন্তানকে নিজের জীবনের চাইতেও অত্যন্ত ভালোবাসেন। সন্তানের সুখই হলো মা বাবার সুখ, সন্তানের দুঃখই মা-বাবার দুঃখ। সন্তান সুখে থাকলে মা বাবার মুখে হাসি ফোটে,  পিতা-মাতার চেহারায় আনন্দের ছাপ ভেসে ওঠে।পক্ষান্তরে সন্তানের জীবনে দুঃখের ছায়া নেমে আসলে মা-বাবা সুখে থাকতে পারে না।

সন্তানের সুখ ফিরিয়ে আনতে মা-বাবা নিজস্ব সুখ-শান্তি কে বিসর্জন দিতে পিছপা হয় না। এই মা-বাবা ছোট্ট থেকে আমাদেরকে লালন-পালন করে বড় করে এই পৃথিবীর পরিবেশ সম্পর্কে জানাতে শিখিয়েছেন। আজকের সমাজের বিভিন্ন স্তরে দিকে দিকে শোনা যায় সেই মা-বাবার লাঞ্ছনা-গঞ্জনা,মা-বাবার প্রতি অসম্মান ও অশ্রদ্ধা ও অভক্তির অজস্র খবরাখবর। সন্তান কি কখনো ভাবে না যে মা-বাবা তাকে জন্ম না দিলে সে পৃথিবীতে কথা পর্যন্ত বলতে পারতোনা।

যে মা বাবা সন্তানকে কথা বলতে শিখিয়েছেন সেই কথা দিয়েই  কিভাবে একজন সন্তান হয়ে তার স্বীয় মা-বাবাকে কষ্ট দেয়?? আমার বুঝে আসেনা। পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলোতে মা-বাবাকে সম্মান এবং ইজ্জত করার জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আল্লাহর এবাদত এর পরে সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিত্ব হচ্ছে তোমার মা-বাবা। এজন্য মা-বাবাকে আমরা কষ্ট দিব না দুঃখ দিবো না। মা-বাবার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকব।

অভাবের সংসারে মা বাবা না খেয়ে তোমার মুখে খাবার তুলে দেন। ঈদ পবনে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিজে কোন পোশাক ক্রয় না করে তোমাকে পোশাক কিনে দেন। তুমি যখন অসুস্থ হও তোমার মা-বাবা সারারাত না ঘুমিয়ে তোমার পাশে সেবা-যত্ন দিয়ে তোমাকে সুস্থ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়। তুমি কোন কিছু খেতে না চাইলে মা-বাবা তোমাকে যত্নসহকারে মুখে তুলে তুলে খাবার খাইয়ে দেয়।

এত কষ্ট করে তিলে তিলে তোমাকে ছোট্ট থেকে আজকের সমাজে পরিচিত করে দিয়েছে, স্বাবলম্বী করে দিয়েছে তাদের প্রতি কি তোমার কোনো দায়িত্ব কর্তব্য নেই?? হে সন্তান ভুলে যেও না এ পৃথিবী কিন্তু তোমার না এ পৃথিবী তোমার মা-বাবার। তোমার মা-বাবাই তোমার জন্য এই পৃথিবীর দিশারী। মা বাবাকে কষ্ট দিও না, মা বাবাকে দুঃখ দিও না, তাদেরকে অসম্মান করোনা, তাহলে তুমি ইহকাল ও পরকালে শান্তিতে থাকতে পারবে। যে সমস্ত সন্তানেরা স্বীয় মা-বাবাকে কষ্ট দেয় তারা এই পার্থিব দুনিয়াতে তার কর্মফল স্বচক্ষে দেখতে পাবে।

তাই আসুন আমাদের যাদের মা-বাবা পৃথিবীতে বেঁচে আছেন তাদেরকে সময় থাকতে আমরা সেবাযত্ন করি,  ভালোবাসা দিয়ে তাদের দোয়া নিয়ে নিজেকে ধন‍্য করি। আজ তারা বৃদ্ধ, আর তুমি যুবক,  সবল শক্তিধর। আজ তারা শিশুসুলভ জীবন-যপন করে তুমি কি মনে করো না তুমিও একদিন শিশু ছিলে??? আজ তারা অসহায় তুমি কি ভাবো না একদিন তুমিও ছোট বয়সে মা বাবার প্রতি চেয়ে থাকতে অসহায় অপলক দৃষ্টিতে??

সন্তান তাদেরকে কষ্ট দিও না তারা কষ্ট পেলে আমি হলফ করে বলতে পারি তুমি কোনভাবেই শান্তিতে থাকতে পারবে না। তাই আসুন আমরা আমাদের মা-বাবাকে যথাযথ সম্মান করি এবং মা-বাবার প্রতি যে হক আমাদের রয়েছে হকগুলো যথাযথভাবে পূরণ করে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে সৎ পথে চলার চেষ্টা করি।।

Related Posts

16 Comments

মন্তব্য করুন