সুইডেনে যাওয়ার জন্য আপনার উদ্দেশ্য কী

সত্য কথা শুনতে তিতা।তবে মনে রাখতে হবে, সব পরামর্শ সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। কার ক্ষেত্রে কোন পরমার্শ প্রযোজ্য এবং কার জন্য উৎসাহিত বা নিরুৎসাহিত হওয়া যৌক্তিক তা বুঝতে হলে প্রথমেই সুইডেনে যাওয়ার জন্য আপনার উদ্দেশ্য কী, তা আগে বুঝতে হবে। তারপরে ভেবে দেখুন, এই গ্রুপ আপনাদের কিভাবে উপকারে আসতে পারে।

উদ্দেশ্য ১ঃ উচ্চ শিক্ষা ও ক্যারিয়ার তৈরি
এই লেখাটির মাধ্যমে তারাই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন, যাদের উচ্চশিক্ষা নিতে সুইডেনে যাওয়ার জেনুইন মোটিভেশন আছে। এই লেখাটির মাধ্যমে উপকৃত হবেন তারাই যাদের প্রধান উদ্দেশ্য সুইডেনে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করা, এবং তারপরে বা পাশাপাশি অন্যান্য পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা (যেমন, চাকুরি, ব্যবসা, সেটেল হওয়া, বা আরো অন্য কোন পরিকল্পনা)। এধরনের শিক্ষার্থীরা যদি সুইডেনে পড়ার আর্থিক সামর্থ্য (পারিবারিক সম্পদ) বা যোগান (স্কলারশিপ) থাকে, তাহলে এই লেখাটির মাধ্যমে অনেক বেশি উপকৃত হবেন। সুইডেনে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করার প্রক্রিয়ায় যদি নিজেকে সুইডেনের জব মার্কেটের জন্য নিজেকে তৈরি করতে পারেন, তাহলে সুইডেনে সেটেল করার চিন্তা করতে পারবেন। এই উদ্দেশ্যধারী শিক্ষার্থীরা শুধু সুইডেন নিয়ে হওতো বসে নেই, উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনে অন্যান্য দেশেও হয়তো চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

উদ্দেশ্য ২ঃ সুইডেনে সেটেল হওয়াই মূখ্য
এই ধরনের শিক্ষার্থীদের মূল উদ্দেশ্য হলো সুইডেনে সেটেল হওয়া। তাদের যোগ্যতা আছে, কিন্তু সুইডেনে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন না। স্টাডি পারমিট হলো সুইডেন গমনের একটা ভালো উপায়। সেটেল হওয়ার প্রক্রিয়ার পাশাপাশি যদি ডিগ্রিটা শেষ করা যায়, তাহলে শেষ করা, নয়তো স্টাডির কোন পর্যায়ে বাদ দেয়া। যদিও এই গ্রুপে এই ধরনের উদ্দেশ্যধারী শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা হয় না, কিন্তু আমার ব্যক্তিগত ধারনা হলো, এই ২য় গ্রুপের শিক্ষার্থীরাই সংখ্যাগুরু। তারপরো, এই ধরনের শিক্ষার্থীরাও লাভবান হতে পারেন এই গ্রুপের মাধ্যমে। কারণ তাদের উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করার মতো মেধা এবং ইচ্ছা রয়েছে – যদিও তা মূল উদ্দেশ্য নয়। যেহেতু সেটেল হওয়া মূল উদ্দেশ্য, তাই পরিকল্পনাটাও বাস্তবভিত্তিক হওয়া প্রয়োজন। এই গ্রুপের মাধ্যমে তুলে ধরা বাস্তবভিত্তিক তথ্য তাদের সেটেল হওয়া ও স্টাডির সমন্বয় করতে সহযোগিতা করবে। ব্যক্তিগত বাস্তবতার আলোকে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন, আবার অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এই ২য় উদ্দেশ্যের শিক্ষার্থীরা নিরুৎসাহিত হয়েও কিন্তু থেমে নেই। তারা অন্যান্য দেশেও নিজের সেটেল হওয়ার সুযোগ সন্ধান করে বেড়াচ্ছেন। এতে দোষের কিছু নেই। আপনার ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে মিলিয়ে আপনার উদ্দেশ্য যেখানে বাস্তবায়ন করতে পারবেন, আপনার সেভাবেই কাজ করা উচিত। হয়তো আপনার উদ্দেশ্য পূরনে সুইডেন সঠিক গন্তব্য নয়, আবার হতে পারে উত্তম গন্তব্য। সিদ্ধান্ত আপনার।

উদ্দেশ্য ৩ঃ বাংলাদেশে কাজের যোগ্যতা নাই বা তীব্র হতাশাগ্রস্থ অথবা বিপদে আছেন, তাই যেকোন ভাবে সুইডেনের মাটিতে গিয়ে ল্যান্ড করা- পরে যা হবার হবে। সুইডেনকে বেছে নেয়ার কারণ হলো, হয়তো কেউ (আত্মীয় বা এজেন্সি) বলেছে সুইডেনে যাওয়া সহজ। এই উদ্দেশ্যের অছাত্রের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়, হয়তো অনেক বেশিই। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, এই ধরনের শিক্ষার্থীরা এই গ্রুপকে ডিমোটিভেশনের ফ্যাক্টরি মনে করেন। বলে রাখা ভালো, এই গ্রুপটি এই ৩য় উদ্দেশ্যের কারো সাহায্যে লাগবে না। যারা আপনাদেরকে টাকার বিনিময়ে মোটিভেশন দিচ্ছে, আপনারা তাদের (কু)সেবা পাওয়ারই যোগ্য। আপনি যদি এই ৩য় উদ্দেশ্যের কেউ হন, তবে এই লেখাটি আপনার কোন উপকারে আসবে না।

কথাগুলো রোকন উদ্দিন ভাইয়ার থেকে শুনা |

Related Posts