আসসালামু আলাইকুম, সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ৬ সপ্তাহের পরিকল্পিত এ্যাসাইনমেন্ট প্রোগ্রামে আজকে নিয়ে এলাম এই সপ্তাহে চলমান ৮ম শ্রেণির বাংলা (পার্ট-২, ৬ষ্ঠ সপ্তাহ) এ্যাসাইনমেন্টের সমাধান। তাহলে শুরু করা যাক।
উপস্থাপনা: ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু তাঁর শেষ ভাষণ দিয়েছিলেন। ১০ লক্ষাধিক লোকের সামনে পাকিস্তানি দস্যুদের কামান-বন্দুক-মেশিনগানের হুমকির মুখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঐদিন বজ্রকন্ঠে ঘোষণা করেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
যেসব যুক্তি তুলে ধরেছেন: সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, স্বাধীনতার স্থপতি, আমাদের প্রাণপ্রিয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য যেসব যুক্তি তুলে ধরেছেন তার মধ্যে অন্যতম সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা, নিজ ভূমিকা ও অবস্থান ব্যাখ্যা, পশ্চিম পাকিস্তানী রাজনীতিকদের ভূমিকার উপর আলোকপাত, সামরিক আইন প্রত্যাহারের আহ্বান, অত্যাচার ও সামরিক আগ্রাসন মোকাবেলার হুমকি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের সার্বিক হরতাল চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা এবং নিগ্রহ ও আক্রমণ প্রতিরোধের আহ্বান।
সামগ্রিক পরিস্থিতির পর্যালোচনা: যেকোনো মানুষের কাছে বিস্ময়কর মনে হবে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ২৩ বছরের মধ্যে কোন সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭০ এর ডিসেম্বরে। সেই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের জাতীয় পরিষদে ১৬৯ টি আসনের ১৬৭ টি লাভ করে। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ ছিল ৩০০ আসন বিশিষ্ট। পশ্চিম পাকিস্তান ৮৩ আসন পেয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। ওই নির্বাচন ছিল বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার প্রতি জনগণের রায়। ৭ই মার্চের ভাষণএ শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আলোচনা করেন। দেশের শাসন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।
নিজ ভূমিকা ও অবস্থান ব্যাখ্যা: স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনে তরুণ বাঙালি সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি শেখ মুজিব গঠন করলেন ছাত্রলীগ নামের এক অপরাজেয় ছাত্র সংগঠন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন জন্ম নেয় আওয়ামী লীগ।কারাবন্দি ২৯ বছরে শেখ মুজিবকে সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সামরিক আইন প্রত্যাহারের আহ্বান : পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২ মার্চ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। ৭ ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণের জনগণকে মুক্তি ও স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।
নির্যাতন বন্ধের হুমকি: বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের ভাষণ সব ধরনের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে বজ্র তুল্য ঘোষণা। যা কেবল একাত্তরেই নয়; বর্তমান সময়ে আমাদের অনুপ্রাণিত উজ্জীবিত করে চলেছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়ে গেছে।রেসকোর্স সে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষকে চারটি শর্ত দিয়ে ভাষণের শেষাংশে বজ্রকন্ঠে ঘোষণা করেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
উপসংহার: ৭ ই মার্চের ভাষণ হলো একজন ছান্দসিক কবিদের জন্য ছন্দময় দিকনির্দেশনা; একজন কবির মহাকালের মহাকবি-মহাকাব্য এক সম্মোহনী; সম্মোহিত মূর্ছনা ;এক জাগরণী; নব মানচিত্র তৈরি রংতুলি ;একটি লাল সবুজ পতাকা তৈরীর কারিগর; বিশ্বের বুকে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র তৈরি ক্ষিপ্ত তীর ধনুক ;অধিকার আদায়ের আন্দোলনে ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এক যুগান্তকারী চেতনা।
কোন সমস্যা হলে কমেন্ট করুন এবং পরবর্তী এ্যাসাইনমেন্টগুলো পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।
আগের পোস্টটি পড়তে ক্লিক করুন।