আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি নতুন টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি ( হিজড়া মারা গেলে কি করে, হিজড়াদের সম্পর্কে ইসলাম কি বলে )। তো আজকে আমি আপনাদের সামনে হিজড়াদের নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি। তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
সূচনাঃ নারী ও নয় আবার পুরুষও নয় এমন একটি শ্রেণির মানুষদেরকে আমরা হিজড়া হিসেবে জেনে থাকি বা বলে থাকি। এরা মূলত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। তাদের মধ্যে সাধারণত নারী ও পুরুষ উভয় ধরণের বৈশিষ্ট্য থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় লোকজন তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।
তাদের নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাদের পিতা-মাতা পর্যন্ত তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। তাদের অভিশাপ হিসেবে বিবেচনা করে। আসলে তারাও আমাদের মতো মানুষ। আমাদের উচিত তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করা ও সর্বদা তাদের সম্মান করা।
হিজড়াদের সুযোগ সুবিধা
বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সহায়তা করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে প্রথম হিজড়াদের সহায়তা করার পাইলট কর্মসূচি আরম্ভ হয়। সেসময় ৭২ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেই তৃতীয় লিঙ্গদের সহায়তা করার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ২০২১-২০২২ অর্থবছরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা।
হিজড়া জনগোষ্ঠীকে স্কুলগামী করে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য প্রতি শিক্ষার্থীকে মাসিক ভাতা (উপবৃত্তি) দেওয়া হয়। একজন হিজড়াকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চতর শ্রেণিতে পড়ার জন্য মাসিক ৭০০ টাকা, ৮০০ টাকা, ১০০০ ও ১২০০ টাকা হারে উপবৃত্তি দেওয়া হয়।
তাছাড়া ৫০ বছর বয়সী ও তদুর্ধ বয়সের অক্ষম ও অসচ্ছল ব্যক্তিকে মাসিক ৬০০ টাকা হারে উপবৃত্তি দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি হিজড়াদের কর্মক্ষম করে গড়ে তোলার জন্য ও দক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
ইসলামে হিজড়াদের অধিকার
ইসলামে হিজড়া বা যেকোনো ধরণের ব্যক্তিলে সম্মান দেখাতে বলা হয়েছে। তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। আল্লাহর যাকে যেভাবে তৈরি করতে চান তাকে সেভাবে তৈরি করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তিনি (আল্লাহ) মাতৃগর্ভে তোমাদের যেমন ইচ্ছা তেমন রূপ দেন। (সূরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৬)।
তারাও মানুষ। তারাও আশরাফুল মাখলুকাত (সৃষ্টির সেরা জীব)। শুধুমাত্র তারা আমাদের আলাদা তাই বলে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা যাবেনা। তাদের অপমাণ করা যাবেনা। বরং তাদের সর্বদা শ্রদ্ধা করতে হবে আর পারলে সাহায্য করতে হবে।
হিজড়া মারা গেলে কি করে
অনেক ক্ষেত্রে তারাই মৃত্যুর পরের সব তার সব ব্যবস্থা করে আর পরিবারকে লাশ দেওয়া হয়না কিংবা পরিবার আদৌ লাশ নিতেই চায়না। আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে লাশ দিয়ে দেওয়া হয় যদি পরিবার চায় তাহলে।
উপসংহারঃ সবশেষেবলা যায় আমাদের হিজড়া/তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের সম্মান ও ভালোবাসা দিতে হবে। তারা আমাদের সহানুভূতি পাওয়ার অধিকার রাখে। যে আল্লাহ বা সৃষ্টকর্তা আমাদের সৃষ্টি করেছে সেও আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তাই তাদের সৃষ্টি করেছে। তারাও মানুষ।
আর আপনাদের কারো হিজড়া সন্তান হলে তাকে ফেলে দিবেননা বা তাকে অপমাণ করে তা কষ্ট দিয়ে কথা বলবেন। তাকেও আপনার অন্যান্য সন্তানদের মতো ভালোবাসুন। অনেকে তাদের ঘৃণা করে কারণ তারা মানুষের কাছ থেকে জোর করে টাকা নেয় কিংবা চাঁদা উঠায় তাই। কিন্তু তাদেরকে যদি শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া হতো চাকরির সুযোগ করে দেওয়া হতো কিংবা তাদের জন্য চাকরিতে আলাদা কোঠা তৈরি করা হতো তাহলে এমন হতনা।
তো আজকের জন্য এতটুকুই। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সেই কামনায় আজকের জন্য বিদায় জানাচ্ছি। পোষ্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর Facebook Group এর সাথেই থাকুন।