ইন্টারনেট
আসসালামু আলাইকুম। সকলে কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালই আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তো আজকে আপনাদের সাথে একটা বিষয় নিয়ে কথা বলবো, যেটা ছাড়া পুরো দুনিয়া অচল। সেটা হলো ইন্টারনেট। ইন্টারনেট ছাড়া এক মুহুর্ত ও ভাবা যায়না। ইন্টারনেট ছাড়া মোবাইল ফোন,কম্পিউটার, রেডিও,টেলিভিশন সব কিছুই অচল। তো চলুন ইন্টারনেট সম্পর্কে আরো কিছু জেনে নিই।
ইন্টারনেট হলো টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য কম্পিউটারের মধ্যকার আন্তঃযোগাযোগের নাম।১৯৬৯ সালে সর্বপ্রথম বিশ্বে ইন্টারনেট প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়।এবং বাংলাদেশে আসে ১৯৯৬ সালের ৬ই জুন।সর্বপ্রথম এর নাম ছিলো “আর্পানেট”। উক্ত প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনে আমেরিকার উদ্দেশ্য ছিলো ” নিউক্লিয়ার ইবেন্ট”- এর সহায়তায় সামরিক বাহিনী এবং সরকারের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে তথ্য আদান-প্রদান করা। সেই উদ্দেশ্যে স্থাপিত আর্পা নামক নেটওয়ার্ক সিস্টেমটি পরবর্তীতে ‘ইন্টারনেট’ নাম ধারণ করে। ইন্টারনেটকে অনেকে নেটওয়ার্ক এর নেটওয়ার্ক হিসেবে অভিহিত করেন। নেটওয়ার্ক এর নেটওয়ার্ক অর্থাৎ নেটওয়ার্ক এর রাজা। সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য কম্পিউটার যেগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামরিক প্রশাসন, গবেষণা কর্ম, ব্যক্তিগত প্রয়োজন ইত্যাদী বহুমুখী কর্মকান্ডে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাঁদের নিজস্ব প্রয়োজনে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সাধারন নেটওয়ার্কিং প্রক্রিয়া ব্যবহার করে কাজের গতিকে ত্বরান্বিত করছেন। এভাবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নেটওয়ার্ক সমূহ একত্রিত হয়ে বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কিং প্রক্রিয়া স্থাপিত হয়েছে, যা ইন্টারনেট নামে পরিচিতি লাভ করেছে।ইন্টারনেটের কাজ অনেক সূক্ষ্ম, সহজ ও দ্রুত। কোনো লোক ইন্টারনেট সংযোগসম্পন্ন একটি ইলেকট্রিক যন্ত্র তথা মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে ব্রাউজ করলে ইন্টারনেট সংযোগ তাকে দ্রুত তার প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশের ও দেশের বাইরের কম্পিউটারের সাথে সংযোগ করে দিবে। এটি আধুনিক বিশ্বে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক মাইলফলক। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাই। এটি ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ইন্টারনেট ভিত্তিক ই-কমার্স ভোক্তাদের নিকট খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। কারণ ভোক্তারা বাজারে না গিয়েই এর মাধ্যমে কোনো কিছু কিনতে কিংবা পছন্দ করতে পারে। তাছাড়া এর সাহায্যে শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারে না গিয়েও বই পড়তে পারে। বর্তমানে উন্নত বিশ্বের অনেক দেশে তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো স্থান থেকে তাদের ক্লাস লেকচার গ্রহণ করতে পারে। তাদেরকে আর শ্রেণীকক্ষে যেতে হয় না।ইন্টারনেট যোগাযোগ মাধ্যমটি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোনো সম্পত্তি নয়। এটির কোনো মূল কেন্দ্র নেই। একটি সার্বার থেকে অন্য আরেকটি সার্বার এর সমন্বয়ের ফলেই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠেছে বিশাল ইন্টারনেট নেটওয়ার্কিং সাম্রাজ্য। বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত যে কোনো একটি সার্বার এর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করলেই সমগ্র বিশ্বের সকল সার্বার এর সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হয়। বাংলাদেশের ইন্টারনেট আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা খুলে দিয়েছে। সাম্প্রতিক কালের ফোর-জি প্রযুক্তি আমাদের দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ফলে মানুষ ঘরে বসেই অনেক আধুনিক সুবিধা উপভোগ করছে। মুহুর্তের মধ্যেই এক দেশের খবর অন্য দেশে পৌছে যাচ্ছে। এ সব কিছুই ইন্টারনেটের কারণে সম্ভব হচ্ছে। সরকার আমাদের দেশে এ সুন্দর বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। পরিশেষে বলব, ইন্টারনেট বর্তমান বিশ্বে একটি জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম। এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অদূর ভবিষ্যতে এর ব্যবহার আরি বাড়বে। রাষ্ট্র ব্যবস্থার অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করবে এ ইন্টারনেট।