দ্য ওয়াল ব্যুরাে: কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের অ্যাডভাইজরি পাওয়ার পর বৃহস্পতিবারই ক্রিকেট অ্যাসােসিয়েশন অফ বেঙ্গলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল ১৮ মার্চ ইডেনে দর্শক ছাড়াই ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে ম্যাচ খেলতে হবে। শনিবার নবান্নে রাজ্যের সব ক্রীড়া সংগঠনগুলাের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি জানান, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ( দর্শক শূন্য ইডেনে ম্যাচ) সৌরভের উচিত ছিল রাজ্যের সঙ্গে কথা বলা। কাকতালীয়ভাবে তার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিসিসিআইয়ের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে বাকি দুই ম্যাচ বাতিল করা হল। অর্থাৎ ১৫ মার্চ লখনউ ও ১৮ মার্চ ইডেনের ম্যাচ দুটি বাতিল করা হল।
এদিন বৈঠকে মূলত ইডেনে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচ ও ইস্ট-মােহন ডার্বি নিয়ে আলােচনা হয়।
ইডেনে ম্যাচের প্রসঙ্গে মমতাকে জানানাে হয়, বিসিসিআইয়ের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাকি দুটি ম্যাচ দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলা হবে। তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দর্শকশূন্য আবার কী কথা। মাঠে প্লেয়ার থাকবে। সাপাের্ট স্টাফ থাকবে। অফিসিয়ালরা থাকবে। যে কারও মাধ্যমেই করােনা ছড়াতে পারে। ওটা তাে হাওয়াতে ছড়ায়। তারপরেই তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররা কলকাতায় আসার পর যেন আলাদা করে তাদের পরীক্ষা করে দেখা হয়।
এমনকি যে হােটেলে তাদের রাখা হবে, সেই হােটেলে আর কেউ না থাকলে সবথেকে ভাল হয়। রাজ্যকে না জানিয়ে যে এই সিদ্ধান্ত বিসিসিআই নিয়েছে তাতে স্পষ্টতই ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ওরা তা নিজেরাই ঠিক করে নিয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সৌরভের উচিত ছিল একবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলা, কলকাতা পুলিশের সঙ্গে কথা বলা।’ কাকতালীয়ভাবে বৈঠকের শেষের দিকে হঠাৎ করেই বাগান কর্তা সূঞ্জয় বসু বলেন, ‘দিদি এইতাে বিসিসিআই জানিয়ে দিয়েছে লখনউ ও ইডেনের বাকি দুটো ওয়ান ডে ম্যাচ বাতিল।’ তার উত্তরে মমতা বলেন, ‘তাহলে, তুমি তো এতক্ষণ লালটুস ছেলের মতাে ঝগড়া করছিলে।’
এই ঘটনার পরে নবান্নের অন্দরে একটা অংশের বক্তব্য, মমতা কোনও কথা ভাবনা চিন্তা না করে বলেন না। তিনি। যখন বলেছেন, সৌরভের উচিত ছিল রাজ্যের সঙ্গে কথা বলা, তখন নির্ঘাত তার আগে কোনও আধিকারিককে দিয়ে বিসিসিআই আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলিয়েছেন তিনি। ফঁাকা স্টেডিয়ামে খেলা হলেও রাজ্যের কী কী সমস্যা হতে পারে সেই কথা বলেছেন। সেই খবর নিশ্চয় সৌরভের কাছেও পৌছেছে। তাই হয়তাে বিসিসিআই এই ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘােষণা করেছে।
তাদের বক্তব্য, এমনটা নয় যে, নবান্ন সভাঘরে মমতা যা বলছেন, বিসিসিআই কর্তারা তার সরাসরি সম্প্রচার দেখছিলেন।শুক্রবারও যখন বিসিসিআই বারবার জানিয়েছে তখন হঠাৎ করে কী হল যে ম্যাচ বাতিল ঘােষণা হল। বিসিসিআইয়ের তরফে জানানাে হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে কোনও রকমের ঝুঁকি নিতে চাইছে না বাের্ড। ফাঁকা মাঠে খেলা হবে সেটা ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা দু’দলের ক্রিকেটারদের জন্যই ঝুঁকির হয়ে যেতে পারে। আর প্রথম ম্যাচও হয়নি। তাই বাকি দুই ম্যাচও বাতিল করা হল।