রিয়েলমি সাধ্যের মধ্যে সামর্থ্যের আরেক নাম!
আমরা সবাই জানি এ বছর প্রথম দিকে রিয়েলমি বাংলাদেশে লঞ্চ করে। এরপর থেকে একের পর এক চমক দিচ্ছে মিড রেঞ্জ বাজেটের এই স্মার্টফোন কোম্পানি টি। সর্বশেষ বাংলাদেশে গ্লোবালি লঞ্চ হলো Realme C17. অর্থাৎ বাংলাদেশেই সর্বপ্রথম ফোনটি তারা লঞ্চ করেছে অন্য কোনো দেশে লঞ্চ করার পুর্বেই। তাই এটিই রিয়েলমির বাংলাদেশে লঞ্চ হওয়া সর্বশেষ স্মার্টফোন।
তো চলুন এবার দেখে নেয়া যাক Realme C17 নিয়ে কেন এত হইচই! ফোনটির স্পেশালিটি কি কি? ফোনটির ফিচার গুলো এই বাজেটের অন্য ফোন গুলো থেকে এগিয়ে নাকি পিছিয়ে।
ওয়েল, যে কারণে রিয়েলমি C17 স্মার্টফোনটি আলোচনায় আসে তা হলো 90Hz রিফ্রেশ রেট + এইচডি ডিসপ্লে। যদিও এইচডি প্লাস ডিসপ্লে নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। কিন্তু 90Hz রিফ্রেশ রেটই এই ফোনের বিশেষত্ব।
ডিজাইন এবং ডিসপ্লেঃ
ফোনের রিভিউ এর ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি উঠে আসে তাহলে ফোনে ডিজাইন এবং ডিসপ্লে ডিজাইনের দিক দিয়ে এই ফোনটি এই রেঞ্জের অন্যান্য সকল ফোনের মতই। প্লাস্টিক বডি এবং পেছনের দিকে হালকা টেক্সট অর দেয়া যা রীতিমতো এখন একটা ট্রেন্ড এ পরিণত হয়েছে অবশ্য ফোনটি হাতে না নিলে বোঝার উপায় নেই যে এটি প্লাস্টিক মেটেরিয়ালের তৈরি। অবশ্য এই বাজেটের একটা ফোনের মধ্যে মেটাল বডি আশা করাটাই বোকামী।
ফোনটিতে এইচডি প্লাস ডিসপ্লে ইউজ করা হয়েছে যেটির রেজুলেশন ৭২০*১৬০০ পিক্সেল। ডিসপ্লে সাইজ ৬.৫ ইঞ্চি। ডিসপ্লে প্রটেকটেশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে গরিলা গ্লাস ৩। ফলে ডিসপ্লেতে স্ক্র্যাচ পড়ার সম্ভাবনা খুবি কম।
স্টোরেজ ও ব্যাটারিঃ
ফোনটিতে 6 জিবি রেম এর পাশাপাশি 128gb রম দেয়া হয়েছে অর্থাৎ ফোনটিকে আপনি পুরো 128 জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ পাচ্ছেন। ফলে র্যাম রম কম্বিনেশন বেশ হয়েছে!
এছাড়াও এর ব্যাটারি সেকশনে থাকছে ৫০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ার লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি। এটি নন রিমুভেবল। ৫০০০ mAh ব্যাটারির সাথে ১৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং ফোনটির অারেকটি অন্যতম ফিচার। ব্যাটারিটি ফুল চার্জ দিয়ে মডারেট ইউজে অনায়াসে একদিন ব্যাক আপ পাওয়া যাবে। আর নরমাল ইউজ করলে দেড় থেকে দুইদিন সহজেই ব্যাক আপ পাওয়া যাবে।
ক্যামেরাঃ
নিঃসন্দেহে ক্যামেরা যে কোনো ফোনের গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। এই ফোনের পেছনে কোয়াডকোর ক্যামেরা সেটআপ ব্যবহার করা হয়েছে। এর কম্বিনেশন ১৩+৮+২+২। এখানে মুল ক্যামেরা ১৩ মেগাপিক্সেল বাকি গুলো সেন্সর৷ ফোনটির ফ্রন্টে ৮ মেগাপিক্সেলের একটি ক্যামেরা দেয়া হয়েছে যেটি ডে লাইটে মোটামুটি ভালো মানের সেলফি তুলতে সক্ষম। এছাড়াও পেছনের ক্যামেরা দিয়ে অন্ধকারে তোলা ছবিতে নয়েজ থাকলেও ডে লাইটে বা দিনের আলোয় তোলা ছবি গুলো বেশ ভালো।
প্রসেসরঃ
ফোনটির অন্যান্য দিকে নজর দিতে গিয়ে প্রসেসরে এসে ঘাটতি থেকে গেছে। এতে প্রসেসর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে অক্টাকোর আপ টু ১.৮ গিগাহাটর্জ (Octa core, up to 1.8 GHz) জিপিও হিসেবে আছে Adreno 610 । ফোনটির চিপসেট হিসেবে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬১০ (Qualcomm Snapdragon 460) ব্যবহৃত হয়েছে।
গেমিংঃ
কোনো ফোনের রিভিউ দিবো অথচ ফোনটির গেমিং পারফর্মেন্স নিয়ে কথা বলবো তা তো হয় না। বিশেষ করে এই করোনাকালীন মানুষজন যখন বাসায় বসে গেমের জগতে বিস্তর সময় পার করছে। গেমের কথা বললেই অবধারিত ভাবে চলে আসে পাবজির নাম! তুমুল জনপ্রিয় এই গেমটি Realme C17 ফোনে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে খেলা যাবে। হুম, ডিফল্ট সেটিং এ পাবজি এবং এরকম জনপ্রিয় হাই গ্রাফিক্স গেম গুলো খেলতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না। তবে সেটিংস যদি আপগ্রেড করেন সেক্ষেত্রে ফ্রেম রেট ড্রপ হবে তা আগে বাগে বলা ভালো। মোট কথা কোন বাড়াবাড়ি ছাড়া আপনি পাবজি সহ হাল আমলের সকল জনপ্রিয় গেম এতে খেলতে পারবেন।
অন্যান্যঃ
উল্লেখিত ফিচার গুলো ছাড়াও এই ফোনের আরো অনেক ফিচার আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
* দুটি ন্যানো সিমের পাশাপাশি ডেডিকেটেড এসডি কার্ড স্লট।
* ৩.৫ এম এম অডিও জেক
* ইউ এস বি টাইপ সি
* ওটিজি সাপোর্ট
* ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ফেস আনলক
* প্রক্সিমিটি, ফিঙ্গার প্রিন্ট এক্লেরোমিটার,ই-কম্পাস
ফিচার নিয়ে তো অনেক কথা হলো এবার আসি দামের ব্যাপারে। রিয়েলমি C17 (Realme C17) ফোনটির দাম রাখা হয়েছে ১৫,৯৯০। এবার অনেকের মনে হতে পারে এই দামের মধ্যে এই ফোনটি বেস্ট নয় আবার অনেকের মতে দাম অনুযায়ী ফোনটির ফিচার সবকিছু ঠিকঠাক আছে। ওয়েল আপনি যদি গেমিং করতে ভালোবাসেন এছাড়াও টুকটাক ব্রাউজিং, হালকা মাল্টি টাস্কিং এবং 90Hz রিফ্রেশ রেট স্মুথ এক্সপেরিয়েন্স নিতে চান তবে ফোনটি আপনার জন্য! আর যদি এগুলোর কিছুই আপনার ভালো না লাগে তাহলে অপেক্ষা করুন হয়তো শাওমি বা রিয়েলমি আপনার চাহিদা পুরণে আরো চমৎকার কিছু নিয়ে আসছে!! আর সেই চমৎকার ফোনের রিভিউ আপনার প্রিয় ব্লগ গ্রাথারে পেতে অপেক্ষা করুন। আজ এই পর্যন্তই।
ভালো থাকবেন। আপনার ও আপনার পরিবারের সুন্দর সময় কাটুক সেই প্রত্যাশায় আজকের মতো বিদায়।