ফাইভ-জি, আসলে কি এই ফাইভ-জি। এটি কি আসলেই নতুন এক দৃষ্টান্ত নাকি শুধু মোবাইল অপারেটরদের আরেকটি নতুন মার্কেটিং এর উপায়। আজ জানবো 5G এর সম্পর্কে। জানবো এটি কি ও কিভাবে কাজ করবে এবং এটি দিয়ে কি আমরা আসলেই উপকৃত হতে পারবো?
ফাইভ-জি হলো মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির পঞ্চম প্রজন্ম। ওয়ান-জি, টু-জি, থ্রি-জি এবং ফোর-জি আসার পর এখন অপেক্ষা আসলে ফাইভ-জির। প্রত্যেক ১০ বছর পরে নতুন এসব মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি সামনে আসে। আমরা এর আগে টু-জি ও থ্রি-জি ব্যাবহার করেছি এবং বর্তমানে ফোর-জি ব্যবহার করছি। এসব নেটওয়ার্কের প্রত্যেকটি প্রজন্মে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এতে পূর্বের প্রজন্মের সকল সুবিধা রয়েছে এবং আরো নতুন সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে।
ফাইভ-জির প্রধান হাইলাইটেড ফিচারটি হচ্ছে গিগাবাইট ইন্টারনেট স্পীড। যেখানে ফোর-জির স্পীড ১০০ মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ড সেখানে ফাইভ-জির স্পীড ১ থেকে ১০ গিগাবাইট কিংবা তার অধিক হতে পারে। ফাইভ-জির আরো একটি মজার দিক হলো অত্যন্ত নিম্ন লেটেন্সি। ফাইভ-জি একটি অসাধারণ প্রযুক্তি। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ইন্টারনেট শুধু আপনার মোবাইল কিংবা কম্পিউটার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না। আপনার বাসার ইলেক্ট্রনিক সকল জিনিস ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত করতে পারবেন। আর সেগুলো খুব সহজে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এই ধারণাকেই ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটি বলা হয়।
উপরের এই বিষয়গুলো থেকেই বোঝা যায় আর মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে ব্যাপক পরিমাণে ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন হবে। তাছাড়া এই ফাইভ-জি প্রযুক্তিকে এমনভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে যাতে এটি যেকোনো ইলেক্ট্রনিক্সে সহজে কাজ করতে পারে। যেমন আগামী দিনের কম্পিউটার মাদারবোর্ডে সরাসরি ফাইভ-জি চিপ লাগানো থাকবে। এর ফলে ডিভাইসগুলো সরাসরি সেল টাওয়ার থেকে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হতে পারবে।
আগামী কিছু বছরের মধ্যে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হতে পারে এমন সেলফ ড্রাইভিং কার অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পাবে। ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করা হবে ৬ গিগাহার্জ রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি, যার ফলে একসাথে অনেকগুলো কাজ একত্রে করা সম্ভব হবে।
এখন প্রশ্ন হলো এই ফাইভ-জি আসলে আসবে কবে? ফাইভ-জি প্রযুক্তি এখনো ঠিকভাবে তৈরি হয়নি, তবে অতি দ্রুত এ প্রযুক্তি উন্মোচন হতে চলেছে। ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক প্রদান করার জন্য মোবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্ক সিস্টেম সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তন করার প্রয়োজন হবে। মোবাইল টাওয়ার আপগ্রেড থেকে শুরু করে ইন্টারনেট লাইন গুলো পর্যন্ত আপগ্রেড করার প্রয়োজন পড়বে। যেহেতু ফাইভ-জি প্রযুক্তি অনেক হাই ফ্রিকোয়েন্সি এর উপর কাজ করবে এজন্য সঠিকভাবে সিগন্যাল পৌঁছাতে অনেক ইনপুট আউটপুট সিগন্যাল বুস্টার ব্যবহার করতে হবে। এজন্য এই কাজ গুলো অবশ্যই অনেকটা সময় সাপেক্ষ। বিশেষজ্ঞদের মতে ২০৩০ সালের মধ্যে ফাইভ-জি সারা দুনিয়াতে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করতে সক্ষম হবে।