অনলাইন মার্কেটপ্লেস
ডিজিটাল মার্কেট প্লেস হলো অনলাইনে ব্যবসা করার একটি সাইবার। বর্তমানে এটি একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। এর মাধ্যমে অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। ডিজিটাল মার্কেটটিং এবং সাধারণ ব্যবসা প্রায় একই। তাই এর অবকাঠামোগত দিকও একই।
ডিজিটাল মার্কেটিং পরিকল্পনার গুরুত্ব
ব্যবসায় শুরু, সুষ্ঠুভাবে পরিকল্পনা ও এর লক্ষ্য অর্জনে ব্যবসায় পরিকল্পনার গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যবসা পরিকল্পনার প্রধান প্রধান গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো নিম্নরূপ :
১• ব্যবসা পরিচালনার দিকনির্দেশনাঃ ব্যবসায় পরিকল্পনার ব্যবসায়ের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ,কখন কী কাজ, কীভাবে এবং কত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা থাকে। ফলে এটি ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তার কাছে একটি দিকনির্দেশক দলিল হিসেবে কাজ করে।
২• মূলধন সংগ্রহ ও বিনিয়োগঃ কোনো ব্যবসায়ের যখন অধিক মূলধনের প্রয়োজন দেখা দেয় এবং উদ্যোক্তার পক্ষে নিজস্ব তহবিল থেকে এর মূলধন জোগাড় করা সম্ভব হয় না, তখন তাকে ব্যাংক ঋণ বা অন্যান্য বাহ্যিক উৎস থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে হয়। এক্ষেত্রে ঋণদাতা বিনিয়োগকারী মূলধন সরবরাহ করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা পরিকল্পনাটি বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
৩• সরকারি সুযোগ সুবিধা এর সদ্ব্যবহারঃ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা গুলো সরকারের নিকট থেকে অনেক সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে । ব্যবসা পরিকল্পনা ঐ সকল সুযোগ-সুবিধা পেতে সাহায্য করে।
৪• সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তাঃ ব্যবসায় এর প্রতিযোগী সম্পর্কে ধারণা করা, আগামীদিনের ব্যবসা কোন দিকে সম্প্রসারণ করা উচিত হবে এবং কোন ব্যবসাটি অধিক লাভজনক হবে এবং ভবিষ্যতে কি পণ্য উদ্ভাবন করা উচিত ইত্যাদি ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যবসা পরিকল্পনা সহায়তা করে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এ ব্যবসা পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রক্রিয়াঃ
একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এর উদ্যোক্তা বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে কয়েকটি সম্ভাব্য ধারণা চিহ্নিত করে একটি তালিকা তৈরি করে । এ তালিকাবদ্ধ ধারনাগুলি বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে মূল্যায়ন করে ব্যবসা প্রকল্প নির্বাচন করেন। দুটি পদ্ধতির মাধ্যমে তিনি ধারণাগুলো মূল্যায়ন করে প্রকল্প নির্বাচন করা যায়। এটি হলো মাইক্রোস্ক্রিনিং ও মাইক্রোস্ক্রিনিং।
ম্যাক্রোস্ক্রিনিং
ম্যাক্রোস্ক্রিনিং হল এমন একটি পদ্ধতি যা কতগুলো প্রভাবক বা উপাদানের ভিত্তিতে ব্যবসায় ধারণাগুলো মূল্যায়ন করে একটি প্রকল্প ধারণা নির্বাচন করতে সহায়তা করে। সকল ব্যবসায়ী বা শিল্প প্রতিষ্ঠান কার্যাবলী উদ্যোক্তার নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কতিপয় উপাদান দ্বারা কম বেশি প্রভাবিত হয়। এগুলো হলো জনসংখ্যা অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক ও আইনগত পরিবেশ।
জনসংখ্যা : একটি ব্যবসায়ের অস্তিত্ব, প্রবৃদ্ধি ও অগ্রগতি যে এলাকায় ব্যবসাটি অবস্থিত, সে এলাকার জনগোষ্ঠীর উপর নির্ভর করে । ব্যবসায় কর্তৃক প্রস্তুতকৃত পণ্য বা সেবা সামগ্রী বাজারে আকার , বর্তমান জনসংখ্যা জনসংখ্যা , বৃদ্ধির হার ও জন্ম-মৃত্যু হার দ্বারা প্রভাবিত হয়।
অর্থনৈতিক পরিবেশ : পণ্য বা সেবার চাহিদা ব্যবসা টির চারদিকে বসবাসকারী ভোক্তাদের আয়, সঞ্চয় , খরচ করার প্রবণতা , জীবনযাত্রার মান ইত্যাদি দ্বারা প্রভাবিত হয় । তাই প্রকল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এগুলোর প্রভাব যথাযথভাবে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
প্রাকৃতিক পরিবেশ : সঠিক ব্যবসা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিরাট ভূমিকা পালন করে । শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল প্রকৃতি-পরিবেশ থেকে আসে। তবে সে সকল শিল্প-কারখানা পরিবেশকে দূষণ করে সে সব ব্যবসা পরিত্যাজ্য।
রাজনৈতিক পরিবেশ: রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা , প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের দর্শন ও রাজনীতিবিদদের আচরণ ব্যবসায় কার্যক্রমের প্রভাবিত করে।
সাংস্কৃতিক পরিবেশ : শিক্ষারহার , কারিগরি শিক্ষার প্রসার, সামাজিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় অনুভূতির ব্যবসায়ের প্রকল্প নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।
আইনগত পরিবেশ : দেশের প্রচলিত আইন ব্যবসায়ে ও শিল্প নীতি ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে ।
মাইক্রোস্কিনিং এর ভিন্নতা
মাইক্রোস্কিনিং হলো বাজারের চাহিদা , কারিগরি বাণিজ্য ও আর্থিক দিক এবং জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান ইত্যাদির দিক বিবেচনা করে প্রকল্প সম্ভাব্যতা যাচাই করা বিস্তারিত প্রক্রিয়া। নিচে মাইক্রোস্কিনিং এর উপাদান গুলো ব্যাখ্যা করা হলো :
বাজার চাহিদাঃ বাজার জরিপ ও গবেষণার মাধ্যমে পণ্যের চাহিদা , ক্রেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও আগ্রহ বাজারের প্রতিযোগিতা এবং পণ্য বা সেবার সুযোগ যথার্থ যাচাই করা হয়।
কারিগরি দিকঃ প্রকল্পের কারিগরি দিক যাচাই করা হয় প্রযুক্তিগত যান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে এ ধরনের কাজের মধ্যে রয়েছে উৎপাদন প্রক্রিয়া , প্রযুক্তি নির্ধারণ, যন্ত্রপাতি নির্ধারণ , প্রকল্প বাস্তবায়নে সহজসাধ্যতা ইত্যাদি ।
বাণিজ্যিক দিকঃ প্রকল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে উক্ত প্রকল্পের বাণিজ্যিক লাভজনকতা নির্ধারণ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এক্ষেত্রে উৎপাদন খরচের উপাদান , বিক্রয় মূল্য, আনুমানিক লাভ ইত্যাদি বিষয়ে খুব সতর্কতার সাথে বিবেচনা করতে হয় ।
আর্থিক দিকঃ এক্ষেত্রে প্রকল্প ব্যয় নিরূপণ , অর্থায়ন উপায় মূলধন বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত সম্ভাব্য লাভ ইত্যাদি হিসেব করে প্রকল্প বাছাই করতে হয়।
জাতীয় অর্থনীতিতে অবদানঃ জাতীয় অর্থনীতিতে প্রকল্পটির কিভাবে অবদান রাখবে তা পরীক্ষা করা বাঞ্চনীয় । অর্থনীতিতে অবদান যাচাই করার মাপকাঠি হলো কর্মসংস্থানের সুযোগ জাতীয় কোষাগারে কর প্রদানের পরিমাণ ইত্যাদি ।
ডিজিটাল মার্কেটিং এ ব্যবস্থাপনা
পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পাদিত কার্য গুলিকেই ব্যবস্থাপনা বলা হয়, আর তারা যখন ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাথে যুক্ত হয় তখন তাকে বলা হয় ডিজিটাল মার্কেটিং এ ব্যবস্থাপনা। ডিজিটাল মার্কেটিং এ ব্যবস্থাপনার দিকগুলো হলো :
১• পরিকল্পনা প্রণয়ন ( Planning ) : পরিকল্পনা হলাে ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের দিক – নির্দেশনা । কোনাে ব্যবসায় সংগঠনের পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভবিষ্যতে কী কাজ , কে , কীভাবে , কখন করবে তা নির্ধারণ করাই হলাে পরিকল্পনা । ব্যবস্থাপনার প্রথম কাজ হচ্ছে পরিকল্পনা প্রণয়ন ।
২. সংগঠিতকরণ ( Organizing ) : ব্যবসায়ের প্রয়ােজনীয় সকল মানবিক ও বস্তুগত উপকরণ এবং সম্পদকে যথাযথভাবে ব্যবহার করার জন্য কর্মীদের মধ্যে দায়িত্ব ও ক্ষমতা বণ্টন এবং আন্তঃসম্পর্ক তৈরির কার্যাবলিকে সংগঠিতকরণ বলা হয় ।
৩. কর্মীসংস্থান ( Staffing ) : প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উপাদান হচ্ছে তার কর্মী বাহিনী । কর্মী বাহিনীকে ব্যবসায়ের অন্যতম মানবিক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয় । কার্য সম্পাদনের জন্য উপযুক্ত কর্মী সংগ্রহ , নির্বাচন , নিয়ােগ ও প্রশিক্ষণ প্রদান , পদোন্নতি , বদলি , ছাঁটাই প্রভৃতি কাজ কর্মসংস্থানের অন্তর্ভুক্ত ।
৪. নির্দেশনাদান ( Directing ) : পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কর্মীদের আদেশ – নির্দেশ প্রদান করাকে নির্দেশনা বলে । ব্যবস্থাপক কর্মীদের কোন কাজ কখন , কীভাবে সম্পন্ন করতে হবে তার নির্দেশনা প্রদান করে থাকেন । যথার্থ নির্দেশনা দিতে পারলে কর্মীরা সর্বাধিক দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারে । অনেকে নির্দেশনাদানকে নেতৃত্বদানের সাথে তুলনা করেছেন ।
৫. প্রেষণাদান ( Motivating ) : প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরকে কাজের প্রতি আগ্রহী ও উৎসাহী করার প্রক্রিয়াকে প্রেষণা বলা হয় । প্রেষণার ফলে কর্মীরা আগ্রহ নিয়ে দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ হয় এবং মানসম্মত কাজ সম্পাদনে সক্ষম হয় ।
৬. সমন্বয়সাধন ( Co – ordinating ) : সমন্বয় সাধন প্রক্রিয়ায় ব্যবসায় সংগঠনের কর্মী , বিভিন্ন বিভাগ ও উপবিভাগের মধ্যে কার্যকর যােগাযােগ স্থাপন করা হয় । সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সকলে মিলে একটি দলে পরিণত হয় যা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ সম্পাদনে সহায়তা করে ।
৭. নিয়ন্ত্রণ ( Controlling ) : পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্য সম্পাদিত হচ্ছে কিনা তা তদারক করা , ত্রুটি – বিচ্যুতি নির্ণয় করা এবং প্রয়ােজনে সংশােধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার সার্বিক প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ বলা হয় । নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজতর হয় । নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সঠিক ও সুদৃঢ় ভূমিকার কারনে ব্যবসায় সংগঠন তার আভ্যন্তরীন ও বাহ্যিক সকল অচলাবস্থা ও বাধা মােকাবেলা করে উন্নতির দিকে ধাবিত হয় । মূলত নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে সঠিক কাজ সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক সময়ে সংঘটিত হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করা হয় ।
উপযুক্ততার নীতি
ডিজিটাল মার্কেটিং এ প্লেস পেতে হলে কিছু বিষয়ে সতর্ক হতে হয়। এই সকল বিষয় আলোচনা করা হলো,
স্বল্পমেয়াদি তহবিল দিয়ে চলতি মূলধন ও দীর্ঘমেয়াদি তহবিল দিয়ে স্থায়ী মূলধন সরবরাহ করা অর্থায়নের একটি নীতি । একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে রাখার জন্য যে নিত্যনৈমিত্তিক অর্থের প্রয়ােজন হয় , সেটিই চলতি মূলধন ; যেমনঃ কাঁচামাল ক্রয় , শ্রমিকের মজুরি প্রদান ইত্যাদি । অন্যদিকে মেশিন ক্রয় , কারবারের দালানকোঠা নির্মাণ ইত্যাদি হলাে স্থায়ী মূলধন । চলতি মূলধনের পরিমাণ কম হয় বলে এর উৎসও কম হয় , ফলে এটি স্বল্পমেয়াদি উৎস হতে সাহ করা ভালাে।
বাণিজ্যিক ব্যাংক , বিভিন্ন অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান , বিনিয়োগ ব্যাংক , ডিবেঞ্চারহােল্ডার , এই ধরনের উৎসগুলো দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করে থাকে । পক্ষান্তরে বিক্রয়লব্ধ অর্থ দিয়ে চলতি মূলধন ব্যবস্থাপনা করা উচিত । দীর্ঘমেয়াদি উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহের জন্য ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলােকে অধিক হারে সুদ প্রদান করতে হয় । ফলে যদি চলতি বা নির্বাহের জন্য দীর্ঘমেয়াদি উৎস হতে অর্থ সংগ্রহ করা হয় , তবে দেখা যায় উপার্জিত আয় হতে ঋণের সুদ পরিশােধ করা অসম্ভব হয়ে পরে।
কারবারের বৈচিত্রায়ণ ও ঝুঁকি বন্টন তহবিল
বিনিয়ােগের ক্ষেত্রে কারবারি পণ্য বা সেবা যতদূর সম্ভব বৈচিত্র্যপূর্ণ হলে কারবারের ঝুঁকি বন্টিত হয় ও হাস পায় । প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনিশ্চিত ভবিষ্যকে কেন্দ্র করে মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করে । ফলে ব্যবসাকে নানামুখী ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয় এই ঝুঁকিগুলো বিভিন্ন কারণে সৃষ্টি হতে পারে । যেমন : অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক , সামাজিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন , বাজারে নতুন পণ্যের উপস্থিতি , প্রাকৃতিক দুর্যোগ , আকস্মিক দুর্ঘটনা ইত্যাদি ।
এসব পরিবর্তনগুলােকে নিয়ন্ত্রণ করা বা এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ব্যবস্থাপকদের পক্ষে সাধারণত সম্ভব নয় । তবে ঝুঁকি বণ্টনের নীতি অনুসরণের ফলে অনিশ্চিত বাজার পরিস্থিতিতেও প্রত্যাশিত মুনাফা অর্জন সম্ভব । একজন ব্যবসায়ী যদি শুধু একধরনের পণ্যের ব্যবসা করে , তাহলে ব্যবসায়ের মুনাফা অর্জন বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায় ।
পক্ষান্তরে কারবারের পণ্য যদি বিভিন্ন ও বৈচিত্র্যপূর্ণ হয় , তাহলে ঝুঁকি বণ্টিত হয়ে যায় । অর্থাৎ কোনাে একটি পরিস্থিতিতে একটি পণ্যের বিক্রয় হ্রাস পেলে অন্যান্য পণ্যের বিক্রয় দিয়ে কারবারটির হাসকৃত বিক্রয় পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হয় , ফলে সব ধরনের অবস্থায় কাক্ষিত পরিমাণ মুনাফা অর্জিত হয় । একজন মুদি ব্যবসায়ী যদি তার দোকানে সনাতনী সাবান ও হালাল সাবান দু’ধরনের সাবানই বিক্রয় করেন তবে দু’ধরনের ক্রেতারই দোকানে সমাগম হবে ।
দোকানি যদি শুধু সাধারণ বা সনাতনী সাবান রাখেন , তবে হালাল সাবানের ক্রেতারা অন্য দোকানে গিয়ে হালাল সাবান কিনবে , এতে শুধু সনাতনী সাবান বিক্রেতার মােট বিক্রয় হাস পাবে । আবহাওয়া ও ঋতুভেদেও কোনাে কোনাে পণ্যের বিক্রয় হাস বা বৃদ্ধি হয় । যেমন : শীতবস্ত্রের চাহিদা শুধু শীতকালে বেশি থাকে । ফলে এই সময়ে এর বিক্রয় বৃদ্ধি পায় ।
একজন কাপড় বিক্রেতা যদি শীতবস্ত্র ও গ্রীষ্মকালীন বস্ত্র দুই ধরনে বক্সই তার দোকানে বিক্রয় করেন , তবে ঋতুভিত্তিক পণ্যের চাহিদা হ্রাস – বৃদ্ধির কারণে মুনাফা অর্জন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না । এমনিভাবে একটি বইয়ের দোকানে যদি শুধু কবিতার বই বিক্রয় করা হয় , আর পাশাপাশি অন্য একটি দোকানে যদি কবিতার বই , গল্পের বই , ধর্মীয় বই , বিভিন্ন শিক্ষণীয় বই বিক্রয় করা হয় , তবে দেখা যায় ক্রেতারা বই কেনার আগ্রহী হবে।
ডিজিটাল মার্কেটারদের দায়বদ্ধতা
ডিজিটাল মার্কেটারদের কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে সেসব নিছে আলোচনা করা হলোঃ
রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা ( Responsibility to State ) :
জনগণের স্বার্থ রক্ষা করে ব্যবসা পরিচালিত হােক এটাই রাষ্ট্রের লক্ষ্য । ব্যবসায় স্থাপন ও অগ্রগতির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে জনগণের চাহিদা মেটানাে হলে অর্থাৎ পণ্য বা সেবা প্রদানের পাশাপাশি নিয়মিত কর প্রদান করা হলে সরকার খুশি । ব্যবসায়কে রাষ্ট্রের প্রতি নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়।
ক• সরকারকে নিয়মিত কর ও রাজব প্রদান করা ।
খ • সরকারের নিয়মনীতি যথাযথভাবে পালন করা ।
গ • কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা ।
সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা ( Responsibility to Society);
সমাজ থেকে বিভিন্ন সুযােগ – সুবিধা গ্রহণ করেই ব্যবসায়ের উন্নতি ও সমৃদ্ধি ঘটে । তবে ব্যবসায়কে সমাজের প্রতি নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয় ।
ক . সমাজের প্রয়ােজন মাফিক মানসম্মত পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ করী ।
খ . কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি করা ।
গ . বিভিন্ন জনহিতকর কাজে সহায়তা করা ।
ঘ . জাতীয় দুর্যোগে জনগণের পাশে দাড়ানাে ।
ঙ . পরিবেশ দূষণ থেকে এলাকাকে রক্ষা করা ।
চ • পণ্যের মজুতদারি না করা ।
ক্রেতা ও ভােক্তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা ( Responsibility to Customer and Consumer ) :
ক্রেতা ও ভােক্তাদের আস্থা ও সহযােগিতার উপর ব্যবসায়ের সফলতা নির্ভর করে । তাই ব্যবসায়ীকে নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়
ক . পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা ।
খ , মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করা ।
গ , পণ্য সামগ্রী প্রাপ্তি সহজতর করা ।
ঘ , পণ্য ও বাজারসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করা ।
শ্রমিক – কর্মচারীদের প্রতি দায়বদ্ধতা ( Responsibility to Employees ) :
শ্রমিক ও কর্মচারীদের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলেই ব্যবসায়ে মুনাফা অর্জিত হয় । তাই তাদের স্বার্থকে অবহেলা করে ব্যবসা পরিচালনা করা যায় না । ব্যবসায় উন্নতির সাথে তাদের বেতন – ভাতা বৃদ্ধি ও বােনাস প্রদান করা এবং তাদের অবস্থার উন্নতির চেষ্টা করা উচিত । একজন ব্যবসায়ীকে তার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ও কর্মচারীদের প্রতি নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়।
ক . উপযুক্ত পারিশ্রমিক ও আর্থিক সুবিধা দান ।
খ . চাকরির নিরাপত্তা বিধান করা ।
গ . কাজের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা ।
ঘ , প্রশিক্ষণ ও পদোন্নতির ব্যবস্থা করা ।
ঙ . বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
ডিজিটাল মার্কেটিং এ অংশীদারি আইন ও নির্দেশনা
আইনগত ঝামেলা না থাকায় অংশীদারি ব্যবসায়ের গঠনও বেশ সহজ । চুক্তি সম্পাদনের জন্য যােগ্য একাধিক ব্যক্তি মৌখিক বা লিখিত চুক্তির মাধ্যমে এ ব্যবসায় শুরু করতে পারে ।
একাধিক ব্যক্তি বলতে সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ২০ জনকে বােঝায় । ব্যবসায়টি যদি ব্যাংকিং সংক্রান্ত হয় তখন সদস্য সংখ্যা ১০ জনের বেশি হতে পারবে না।
অংশীদারদের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অংশীদারি ব্যবসায়ের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে । চুক্তিবদ্ধ সম্পর্কের আলােকেই এ ব্যবসায় গঠিত , পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় । এরূপ চুক্তি হতে পারে মৌখিক বা লিখিত , নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত ।
এ ব্যবসায়ের অংশীদারগণ চুক্তিতে বর্ণিত নিয়মানুযায়ী মূলধন সরবরাহ করে থাকে । ব্যবসায়ের লাভ লােকসানও চুক্তি অনুযায়ী বণ্টিত হয় । চুক্তিতে কিছু উল্লেখ না থাকলে সমান হারে লাভ – লােকসান বণ্টিত হবে ।
আবার চুক্তিতে উল্লেখ থাকলে কেউ মূলধন না দিয়েও অংশীদার হতে পারে । তবে প্রত্যেক অংশীদারের দায় ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে অসীম । অর্থাৎ কোনাে দেনা পরিশােধের জন্য ব্যবসায়িক সম্পদ যথেষ্ট না হলে অংশীদারগণের ব্যক্তিগত সম্পদ সেজন্য দায়বদ্ধ থাকে । কোনাে অংশীদার দেউলিয়া হলেও তার দায় অবশিষ্ট অংশীদারগণকে বহন করতে হয় ।
পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে এ ব্যবসায় গড়ে উঠে এবং এ ব্যবসায়ের সফলতা এর উপর নির্ভরশীল । অন্যদিকে অংশীদারগণের মধ্যে আস্থাহীনতা , বিশ্বাসের অভাব ও বিরােধ দেখা দিলে ব্যবসায়ের বিলােপ ঘটে ।
অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয় । তবে যে সকল অংশীদারি ব্যবসায় নিবন্ধিত হয় , সেগুলাে অনিবন্ধিত ব্যবসায় থেকে বেশ কিছু বেশি সুবিধা ভােগ করে থাকে । নিবন্ধিত হলেও এ ব্যবসায়ে কোনাে আইনগত সত্তার সৃষ্টি হয় না ।
ফলে ব্যবসায় নিজস্ব নামে পরিচালিত হতে পারে না । ব্যবসায়ের সকল লেনদেনও অংশীদারদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে হয়েছে বলে ধরা হয় । পৃথক আইনগত সত্তা না থাকায় এ ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব অংশীদারদের ইচ্ছা – অনিচ্ছার উপর নির্ভরশীল ।