আল্লাহ্ সম্পর্কে তিনি নিজেই পবিত্র কালামে মজীদে এরশাদ করিয়াছেন – তিনিই আল্লাহ্, যিনি ব্যতীত অন্য কেহ মা’বুদ (উপাস্য) নাই । তিনি চিরজীবন্ত ও চিরস্থায়ী, তাঁহাকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করিতে পারে না । আসমান ও জমিনের মধ্যে যাহা কিছু আছে, সমস্তই তাঁহার জন্য ।
কে এমন আছে যে, তাঁহার নির্দেশ ছাড়া তাঁহার কাছে সুপারিশ করিতে পারে ? তিনি অগ্র-পশ্চাতের সমস্ত কিছু জানেন । আল্লাহ্র ইচ্ছা ব্যবতীত তাঁহার ইল্মের সামান্যতম অংশও কেহ আয়ত্ত করিতে সক্ষম নয় । তাঁহার (জ্ঞানের) সিংহাসন সমস্ত আসমান-জমিন ব্যাপিয়া পরিব্যাপ্ত রহিয়াছে । উদাহদের রক্ষণাবেক্ষণ করিতে হাতার একটুও বেগ পাইতে হয় না । তিনি বিরাট ও মহান । “ (সূরা বাকারা ২৫৫তম আয়াত)
মাহান প্রতিপালক আল্লাহ্ তাআ’লা সমস্ত প্রাণী জগতের জীবন ও মৃত্যু দানকারী এবং পানাহারদানকারী । তিনি আইন- কানুন ও বিধি-বিধান দাতা । জিন ইনসান যাহা কিছু করিয়া ও বলিয়া থাকে এবং যাহা কিছু অন্তরে গোপন করিয়া রাখে, তিনি সমস্তই গানেন । তাঁহার প্রতিদ্বন্দি নেহই নেই । তাঁহার ইচ্ছার প্রতিবাদ বা মুকাবিলা করিবার সাহস শক্তি কাহারো নাই । এই সকল মাহান গুণের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ্ তাআ’লা , তিনি ব্যাতীত অন্য কেহ ইবাদতের যোগ্য নাই । তিনিই সবকিছুরই প্রতিপালক ও ইবাদতের মানিক । তিনি এচিতস্থায়ী, তাঁহার গুণাবলীও চিরস্থায়ী, অনন্তকালব্যাপী আছেন ও থাকিবেন । তাঁহার কোন শরীক নাই, তিনি অদ্বিতীয় । তিনি নিরাকার ও নিরাহার, তিনি কাহারো মুখাপেক্ষী নহেন, বরং জগদ্বাসী তাঁহার মুখাপেক্ষী ।
তিনি দাতা, দয়ালু, ধৈর্যশীল ও ক্ষমাশীল । আল্লাহ্র কোন বান্দা অন্যায় করিলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি দেন না, বরং বান্দা ক্ষমা ভিক্ষা চাইলে তিনি তাঁহাকে ক্ষমা করিয়া দেন । অতএব এই মহান আল্লাহ্র প্রতি ঈমান স্থাপন করা প্রত্যেকটি মানুষের জন্য ফরজ । আল্লাহ্র প্রতি ঈমানের তাৎপর্য হইল, আল্লাহ তাআ’লার জাতসত্তা ও তাঁহার সমস্ত ছেফাতী নাম সমূহের এবগ্ন গুণাবলীর প্রতি জবানের স্বীকৃতিসহ অন্তরের সহিত দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করা যে, আল্লাহ্ তাআ’লাই একমাত্র উপাস্য, অর্থাৎ ইবাদতের যোগ্য ।। অতঃপর তাঁহার বিধানমত আমল করা ।
অর্থাৎ কালেমা তাইয়্যেব মুখে পাঠ করা উহা অন্তরের সহিত বিশ্বাস করা এবং আমলের দ্বারা কার্যে পরিণত করা । ইহাকেই আল্লাহ্র প্রতি ঈমান বলা হয় ।
ঈমানের পরিচয়
ঈমান শব্দের অভিধানিক অর্থা বিশ্বাস বা আস্থা স্থাপন করা । এবং ইসলামী পরিভাশায় উহার অর্থ, মুখের স্বীকারোক্তিসহ আল্লাহ্ তাআ’লা ও তাঁহার গুণাবলী সম্পর্কে অন্তরের সহিত বিশ্বাস স্থাপন করা এবং হযরত রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও আল্লাহ তাআ’লার তরফ হইতে তাঁহার বান্দাগণের কাছে যাহা কিছু পৌছিয়াছে, উহা সমস্তই সত্য ধারণা করতঃ বিশ্বাস স্থাপন করা এবং তদনুযায়ী আমল করা । ইহাকেই সাধারণ অর্থে ঈমান বা সংক্ষিপ্ত ঈমান বলা হয় । ইসলামী শরীয়ত ইহাকে ঈমানে মুজমাল নামে আখ্যিত করিয়াছে ।
ইহা হচ্ছে । আ-মান্তু বিল্লা-হি কামা-হুওয়া বিআস্মা-ইয়িহীওয়া ছিফা-তিহী-ওয়া ক্বাবিল্তু জামী-ইয়া’ আহকা-মিহী ওয়া আরকা-নিহী ।
বাংলা অর্থঃ- আমি আল্লাহ্র প্রতি ও তাঁহার যাবতীয় নাম ও গুণাবলীর প্রতি যাথাযথভাবে বিশ্বস স্থাপন করিলাম এবং তাঁহার সব প্রকার আদেশ-নির্দেশ ও বিধান সমূহ মানিয়া লইলাম ।