প্রিয় পাঠক,আসসালামু আলাইকুম। আশা করি ভালো আছেন। আজকের বিষয় সাইবার ক্রাইম বা ইন্টারনেরটের অপব্যাবহার এবং এর থেকে বাচার উপায়। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
সাইবার ক্রাইম বর্তমান বিশ্বের একটি বড়ো অপরাধ।এর জন্য জেল,জরিমানা এবং কঠর শাস্তি ঘোষনা করার পরও কিছুতেই রুখা যাচ্ছে না এই ক্রাইম।
সাইবার ক্রাইম শব্দটি কেবল বাংলাদেশেই নয়, এটি প্রতিটি দেশে অনেক পরিচিত এবং ভীতিজনক একটি শব্দ। এই শব্দের সাথে পরিচিত হোক বা না হোক, প্রতি দিন লক্ষ লক্ষ লোক এর শিকার হচ্ছে। সাইবার ক্রাইম বিশ্বের কোন নতুন ধরনের অপরাধ নয়। তথ্য চুরি, তথ্য বিকৃতি, জালিয়াতি, ব্ল্যাকমেইল, মানি লন্ডারিং ইত্যাদির মত সাধারণ অপরাধগুলি ইন্টারনেটের মাধ্যমে করা হলে তা সাইবার ক্রাইম হিসাবে ধরা হয়।
সহজ ভাষায়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে তাকে সাইবার ক্রাইম বলে। অন্যান্য ভাষায় বলা যায়, সাইবার ক্রাইম এমন একটি অপরাধ, যাতে প্রধানত কম্পিউটার বা অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র ব্যবহৃত হয় এবং অপরাধীরা বিশ্বব্যাপী অপরাধে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) সাইবার ক্রাইমকে চারটি মূল শ্রেণিতে বিভক্ত করে – ইনসাইডারস, হ্যাকার, ভাইরাস রাইটারস এবং ক্রিমিনাল গ্রুপ।
চলুন জেনে নেই সাইবার ক্রাইম এর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী সাইবার ক্রাইম এর শাস্তি কি??
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩)-এর-
৫৪ ধারা অনুযায়ী, কম্পিউটার বা কম্পিউটার সিস্টেম ইত্যাদির ক্ষতি, অনিষ্ট সাধন যেমন ই-মেইল পাঠানো, ভাইরাস ছড়ানো, সিস্টেমে অনধিকার প্রবেশ বা সিস্টেমের ক্ষতি করা ইত্যাদি অপরাধ। এর শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
৫৬ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে এমন কোনো কাজ করেন, যার ফলে কোনো কম্পিউটার রিসোর্সের কোনো তথ্য বিনাশ, বাতিল বা পরিবর্তিত হয় বা এর উপযোগিতা হ্রাস পায় অথবা কোনো কম্পিউটার, সার্ভার, নেটওয়ার্ক বা কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন, তবে এটি হবে হ্যাকিং অপরাধ, যার শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড বা ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে কোনো মিথ্যা বা অশ্লীল কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করে, যার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয় অথবা রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, তাহলে এগুলো হবে অপরাধ। এর শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড এবং ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
সাইবার ক্রাইম থেকে বাচতে হলে যথাযথ সতর্ক হতে হবে। সাধারনত সতর্কতা না থাকার কারনেই হ্যাকার রা খুব সহজে এই কাজ গুলো করে নিতে পারে।
কিছু সতর্কতাঃ-
১ঃ- কোন ওয়েব সাইটে লগ ইন করার পর কাজ শেষ করে লগ আউট করে নিন।
২ঃ- কারো মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকুন।
৩ঃ- আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সকল আইডি গুলাকে থার্ড পার্টি সিকিউরিটি সিস্টেম অন করে রাখুন।
৪ঃ- আপনার সাইটের পাসওয়ার্ড ও গোপন কোন তথ্য কারো সাথে শেয়ার করবেন না।
৫ঃ- গোপন কোন তথ্য কোথাও লিখে রাখবেন না, মনে থাকার মতো কোন বিষয় না এই গুলা।
চলুন আপনি, আমি, আমরা সকলেই সতর্ক হই।সাইবার ক্রাইম এর মতো বড়ো ধরনের অপরাধ করা থেকে বিরত থাকি এবং অন্যকে এই বিষয়ে সতর্ক করি। সকলের সতর্কতার মাধ্যমে সম্ভব নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার।
সময় নিয়ে পড়ার জন্য,ধন্যবাদ।