আমরা কমবেশি সকলেই লেখালেখি করতে আগ্রহী। কিন্তু কিভাবে লিখতে হবে, কোথা থেকে শুরু করতে হবে এসব প্রশ্নের উত্তর না জেনেই লেখালেখি শুরু করতে গিয়ে আমাদের শুরুতেই হোঁচট খেতে হয়। আবার যারা বেসিক জিনিসগুলো জানে তারা খুব তাড়াতাড়ি ঝটপট একটি আর্টিকেল লিখতে গিয়ে মূল বক্তব্য থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন। এতে পাঠক আসল লেখার উদ্দেশ্য খুঁজে পান না। ফলে আমাদের আর্টিকেল লেখাটায় ব্যর্থ হয়ে যায়।
আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা দেখব, “ কিভাবে খুব সহজে একটি অসাধারণ আর্টিকেল লেখা যায়। “
♦♦ বিষয়বস্তু নির্ধারণ করুনঃ
একটি আর্টিকেল লিখতে সর্বপ্রথম আমাদের যে জিনিসটি প্রয়োজন তা হলো বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা আমরা কি নিয়ে আর্টিকেল লিখব তা সর্বপ্রথম আমাদের ঠিক করতে হবে তার পরেই আমরা আমাদের লেখা শুরু করতে পারব। লেখার জন্য হাজার হাজার বিষয়বস্তু থেকে কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত এবং কোনটি নিয়ে আপনি লিখতে চান বা কোন বিষয়ে আপনি দক্ষ তা নির্ধারণ করুন। আপনার পছন্দের বিষয়বস্তু নিয়ে লিখতে পারলে নিঃসন্দেহে আপনি খুব সহজেই সাফল্য লাভ করবেন এবং আপনার লেখা পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করবে। আর যদি আপনি বিষয়বস্তু নির্ধারণ করতে ব্যর্থ হন তাহলে আপনার লেখার শুরুতেই ফ্লপ হবে। এতে করে আপনি পাঠক হারাবেন এবং আপনার লেখা কেউ পড়তে চাইবে না।
♦♦ গবেষণা করুনঃ
আর্টিকেল লেখার একটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো গবেষণা বা রিসার্চ করা। আর্টিকেল লিখতে গিয়ে গবেষণা করার বিষয়টা অনেকের কাছে হাস্যকর থাকতে পারে। কিন্তু সত্যি হলো এটাই যে আপনি যদি রিসার্চ করা ছাড়া একটি আর্টিকেল লিখেন তাহলে সে আর্টিকেলটি সার্চ ইঞ্জিনের কাছে যতটা নির্ভরযোগ্য হবে, তার চেয়েও বেশি নির্ভরযোগ্য হবে যদি আপনি রিসার্চ করে একটি আর্টিকেল লিখেন। নিঃসন্দেহে মানুষ এমন কোন জিনিস চায় যেটি অনেক তথ্যবহুল এবং নির্ভরযোগ্য। সুতরাং আর্টিকেল লেখার আগে আপনাকে নির্বাচিত বিষয়বস্তু সম্পর্কে রিসার্চ করতে হবে।
♦♦ সমন্বয় করুনঃ
সমন্বয় সাধন বলতে বোঝায় গুছিয়ে লেখা বা ধাপে ধাপে লেখা। আর্টিকেল লেখার জন্য এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
কোন বিষয় নিয়ে লেখার জন্য আপনি বিষয়বস্তু নির্ধারণ করলেন এবং রিসার্চ ও করলেন। কিন্তু আপনি যদি লেখার মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে না পারেন তবে আপনার লেখাটা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। নিশ্চয় মানুষ স্বভাবতই সাজানো-গোছানো ও সুন্দর লেখা পড়তে চায়। সবাই গোছানো লেখা কে পছন্দ করে। এজন্য আপনাকে সাজিয়ে লিখতে হবে কোন বিষয়টির আগে কোন বিষয়টি দিবেন তা ধাপে ধাপে সুন্দর করে গুছিয়ে লিখতে হবে। আপনি যত বেশী গুছিয়ে লিখতে পারবেন আপনার লেখা তত বেশি জনপ্রিয় হবে এবং ততবেশি মানুষ আপনার লেখা পড়বে।
♦♦ একটি বার্তা দিনঃ
বলা হয়ে থাকে লেখার মাধ্যমে পুরো পৃথিবী পরিবর্তন করা সম্ভব। আমরা কাজী নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র, জসীমউদ্দীন সহ যত বিখ্যাত কবি সাহিত্যিক তাদেরকে আজও মনে রাখি কিন্তু এদের লেখার কারণেই!
সাধারণত আমাদের লেখার কোনো না কোনো উদ্দেশ্য থাকে। উদ্দেশ্যহীন লেখার কোন মানেই হয়না। আমাদের সেই উদ্দেশ্য টাকে আমরা লেখার মধ্যে যত বেশি হাইলাইট করতে পারব ততবেশি মানুষ লেখাটা কে গ্রহণ করবে। এর মাধ্যমে আমাদের উদ্দেশ্য সাধন হবে। ধরুন আমি যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় নিয়ে লিখলাম। আমার লেখায় যদি এই বিষয়ে কোন একটা মেসেজ না থাকে তাহলে মানুষ আমার লেখাটা কেন গ্রহণ করবে?!
সুতরাং লেখার মধ্যে একটি মেসেজ বা বার্তা দিন। যাতে মানুষ আপনার লেখার উদ্দেশ্য বুঝতে পারে।
♦♦ একটি সুন্দর উপসংহার পুরো লেখা কে সার্থক করেঃ
আমাদের লেখাটা পড়া শেষে উপসংহারে এসে এই লেখার উপর একটা ধারণা তৈরি হয়। তাই উপসংহার যদি ভাল হয় পাঠক লেখাটাকে ভালো হিসেবে গ্রহণ করে। আর যদি উপসংহার খারাপ হয় তাহলে তো আর কথাই নেই কমেন্ট বক্সে খারাপ ভাষা পর্যন্ত ব্যবহার করে ফেলে। তাই খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লেখার পরে আমাদের উপসংহারে এসে কিছুটা সময় দিতে হবে। যাতে আমাদের পুরো লেখাটা সুন্দর ও সার্থক হয়। আমাদের পুরো লেখা সৌন্দর্য কিন্তু নির্ভর করে উপসংহারেই! কাজে উপসংহারটা যত সুন্দর হবে লেখার মান ও তত বাড়বে।
লেখার শেষে আপনি পাঠকের মতামত জানতে চাইতে পারেন এবং কুশলাদি বিনিময় করতে পারেন। এর মাধ্যমে পাঠক ও লেখক এর মধ্যে একটা ঘনিষ্টতা তৈরি হয়। যার সূত্র ধরে পরবর্তীতে পাঠক ও লেখকের লেখা পড়তে একটু বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
লেখাটা আপনার কেমন লাগলো তা অবশ্যই অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর যদি এটি পড়ে আপনার এতোটুকু উপকার হয়ে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। দেখা হবে পরবর্তী পোষ্টে ততক্ষণ নিজের ও পরিবারের যত্ন নিন। করোনা প্রতিরোধে সতর্ক থাকুন। হোম কোয়ারেন্টেনে সময় কাটান, সুরক্ষিত থাকুন ও আতঙ্কিত হবেন না।