বর্তমানে নারীরাই যে শুধু ফ্যাশন সচেতন তা নয়। পুরুষেরাও নিজের ফ্যাশন নিয়ে বেশ সচেতন হয়ে উঠেছেন। তবে ফ্যাশন সচেতন মানুষ বলতে এটা বুঝায় না যে সে আরমানি/গুচি / নাইকি ব্রান্ডের পোশাক ছাড়া কাপড় এবং ব্র্যান্ডের এক্সেসরিজ বাদে কিছু ব্যবহার করতে চান না। ফ্যাশন সচেতন তাকেই বলা চলে যিনি সমসাময়িক ট্রেন্ড মাথায় রেখে হাতের কাছে বাজেটের ভেতর যা পাচ্ছেন তাই দিয়ে নিজেকে মার্জিত ও পরিপাটি রূপে ফুটিয়ে তুলতে পারছেন।
একটু বুদ্ধি খাটালেই হাতের কাছে পাওয়া যে কোন জিনিস দিয়ে এবং স্বল্প ব্যায়ে অনেক ফ্যাশনেবল হয়ে উঠা যায়। তাই বেশি পয়সা খরচ করে নয় বরং মাথা খাটিয়ে নিজেকে হালফ্যাশনে ধরে রাখতে চেষ্টা করুন।
আসুন দেখে নেই ফ্যাশনের জন্য যেসব বিষয় মাথায় রাখা দরকারি-
১। পোশাক-আশাক দামি নয় পরিপাটি হওয়া প্রয়োজন। আপনি অনেক দাম দিয়ে পোশাক কিনেছেন ঠিকই কিন্তু যত্নের অভাবে তা নষ্ট হয়ে গেছে ঘরে ভুল লন্ড্রি করাতে রঙ চলে গেছে এমন পোশাক দিয়ে তো কোনো কাজ নেই। পোশাক একটু কম দামি হলেও যদি যত্ন করে ব্যবহার করেন তবে তা অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকবে। (পোশাকের পরিচর্যার ব্যাপারে অন্য একটি পোস্টে বিস্তারিত বলবো)
২। চুলের কাটের ব্যাপারে সতর্ক হোন। আপনার চুলের ধরণ এবং মুখাকৃতির সাথে মিলিয়ে আপনাকে যে চুলের কাটে মানায় সেই ধরণের কাট দিন। বেশি পয়সা খরচ করলেই যে ভালো কাট হবে তা একেবারেই ঠিক নয়। একটি মানানসই চুলের কাট আপনাকে অনেকাংশে ফ্যাশনেবল করে তুলবে।আপনি কেমনটা চান তা চাইলে ইন্টারনেটে ছবি দেখেও ঠিক করতে পারেন। আপনার হেয়ারস্টাইলারকে প্রথমেই ছবি দেখিয়ে নিন যেরকমটা আপনি চান।
৩। চুলের পাশাপাশি দাড়ির দিকেও নজর রাখবেন। অনেককে একেবারে ক্লিন শেভে ভালো দেখায় আবার অনেককে ভালো দেখায় না। আপনার মুখে দাড়ির পরিমান অনুযায়ী স্টাইল বাছাই করুন। এতে করে আপনি হয়ে উঠতে পারেন ফ্যাশনেবল।
৪। মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা একটু বেশিই ঘেমে থাকেন। ছেলেরা যেহেতু বেশিরভাগ সময় ঘরের বাইরেই কাটান তাই অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন নিজের পারফিউমের দিকে। বাসা থেকে বেড়োনোর সময় বডি স্প্রে বা বডি রোল অন অথবা পারফিউম লাগাতে ভুলবেন না। তবে অতিরিক্ত পারফিউম ব্যবহার করবেন না একেবারেই।
৫। নানা এক্সেসরিজ যেমন ঘড়ি, সানগ্লাস, রুমাল ইত্যাদি ব্যবহার করুন। সাথে রাখুন স্টাইলিশ মানিব্যাগ। যারা কর্মজীবী মানুষ তারা সাথে রাখতে পারেন ভালো, মানানসই এবং সুন্দর ডিজাইনের সাইডব্যাগ।
৬। জুতার দিকে অবশ্যই নজর দিন। জুতা সব সময় পরিষ্কার রাখুন। অপরিষ্কার জুতা পড়বেন না। জুতো মলিন হয়ে এলে ভালো করে পালিশ করে নিন। মনে রাখবেন, একটা মানুষের জন্য পরিপাটি এক জোড়া জুতা ফার্স্ট ইম্প্রেশনে অনেক প্রভাব ফেলে।
৭। একই স্টাইল বেশি দিন ধারণ করবেন না। মাঝে মাঝে স্টাইল একটু আকটু পরিবর্তন করুন। পোশাক আশাকের ধরণে, চুলের কাটে এবং দাড়ি গোফের কাটে পরিবর্তন আনুন মাঝে মাঝেই। এতে করে আপনাকে অনেকটাই ফ্যাশনেবল লাগবে এবং আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন আপনাকে কোন পোশাকে, কোন ছাঁটের চুলে ভালো লাগবে।
৮। ফ্যাশনেবল হতে অবশ্যই ঋতুভেদে পোশাক নির্বাচন করবেন। গ্রীষ্মকালে ব্লেজার আর শীতকালে ম্যাগি হাতার টিশার্ট নিশ্চয়ই আপনার কাম্য হবেনা।
৯। সময়ের বিবেচনায় এই মুহুর্তে মাস্ক ছাড়া চলাচল খুবই বিপদজনক ও সেই সাথে আপনাকে মানহানিকর পরিস্থিতিতেও পরতে হতে পারে। বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরে বের হবেন।
ক্যাজুয়াল লুকে অনেকে রংচঙা মাস্ক ব্যবহার করেন। একেকজনের পছন্দ একেক রকম। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহারেই আপনার প্রকৃত স্মার্টনেসটা ফুটে ওঠে।
সর্বোপরি ফ্যাশনের পাশাপাশি নিজের কম্ফোর্টনেসের ব্যাপারটাও মাথায় রাখবেন। খুব আঁটসাঁট পোশাক পরবেন না যাতে আপনার দম বন্ধ হয়ে আসে অথবা অনিয়ন্ত্রিত চর্বিগুলো উঁকি দিয়ে নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে চায়।
অপরদিকে খুব ঢিলেঢালা পোশাকেও নিজেকে আবৃত করবেন না। “আপনি আপনার দাদার জামাটি গায়ে দিয়েছেন” এমনটা নিশ্চয়ই বন্ধুমহলে শুনতে চাইবেন না আশা করি।
নিজের দৈর্ঘ্য প্রস্থ বুঝে খানিকটা বাড়তি রেখে পোশাকের মাপ নির্বাচন করবেন।
RashRumi
Apparel & Fashion Technologist.