আসসালামু আলাইকুম। আসুন আজ আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই পৃথিবীর পাঁচ বিষধর সাপের সাথে যারা তাদের বিষাক্ততা, ক্ষিপ্রতা এবখ তাদের রঙের কারণে জায়গা করে নিয়েছে পৃথিবীর বিষধর সাপের তালিকায়।
১- ‘ওয়েস্টার্ন ব্রাউন স্নেক’ বা ‘গোয়ার্দার’ নামেও পরিচিত। এই সাপ খুবই দ্রুত গতির। সাধারণত এই সাপটি পাওয়া যায় অস্ট্রেলিয়ায়। এরা এতটাই বিষাক্ত যে এদের কামড়ে মৃত্যু নিশ্চিত। এই সাপ দেখতে ব্রাউন কালারের হওয়াতে মাঠির সাথে মিলে যায়। ভালোভাবে খেয়াল না করলে, বোঝা যায় না সাপটির অবস্থান। হঠাৎই আক্রমণ করে বসতে পারে৷ তাই এর অবস্থান, দ্রুত গতি, রং এবং বিষাক্ত হওয়ার কারণে সাপ টিকে প্রথম স্থানে রাখা হলো৷
২- ‘ইনল্যান্ড তাইপান’ এই সাপটি অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা। এরা মূলত তাইপান সর্প পরিবারের পাঁচটি উপজাতির মধ্যে একটি ৷ তাইপান সর্প পরিবারের অন্য উপজাতির মধ্যে বেশি বিষাক্ত। এরা এতোটাই বিষাক্ত যে এদের কামড় খাওয়ার পর কেউ এক ঘন্টার বেশি বাঁচতে পারেনি৷ এক ছোবলে বেশি বিষ ছুঁড়ার রেকর্ডটাও ইনল্যান্ড তাইপানের৷ এরা এক ছোবলে প্রায়ই ১১০ মিলিগ্রাম বিষ ছুঁড়তে পারে৷ অথচ এর কয়েকগ্রাম বিষই ১০০ জন মানুষ মারার জন্য অথবা ২৫০ হাজার ইঁদুর মারার জন্য যথেষ্ট৷
এরা খুব সহজে বস মানে, কিন্তু কোনো কারণে রেগে গেলে শিকার জায়গা থেকে সরে পড়ার আগেই দ্রুত বেগে কয়েকটা ছোবল দিয়ে বসবে ৷
৩- ‘হাইড্রোফিলিস বেলচেরি’ এই সাপটি সাধারণত সমুদ্রে বাস করে৷ এই সাপটা এতটাই বিষাক্ত যে এরা কাউকে কামড়ালে তারা মিনিট ১৫ এর ভেতরেই মারা যায়৷ এদের বিষের পরিমাণ ‘ইনল্যান্ড তাইপান’ [ আমাদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ] সাপের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি৷ এদের কয়েক মিলিগ্রাম বিষ দিয়ে ১০০০ লোক এবং পঁচিশ লক্ষ ইঁদুর মারা যাবে৷ তবে এদের নিয়ে খুব একটা মাথাব্যাথা না করলেও চলবে, কারণ এরা খুব একটা বেশি কাউকে কামড়ায় না। তবে কামড়ালেও তেমন একটা বিষ ঢুকিয়ে দেয়না৷ যদি কারো কপাল খারাপ হয় তাহলে তাকে ছোবলের সাথে বিষ ঢুকিয়ে দিতে পারে৷ এই সাপগুলো একবার শ্বাস নিয়ে সাত থেকে আট ঘন্টা অনায়াসে পানির নিচে কাটাতে পারে, ঘুরে বেড়াতে পারে এমনকি ঘুমাতেও পারে। এরা বিষাক্ত হওয়া স্বত্বেও খুব একটা কামড়ায় না এবং ভদ্র স্বভাবের হওয়াতে এদের তালিকায় তৃতীয়তে রাখা হলো৷
৪- ‘ব্লাক মাম্বা’ বা ‘কালো মাম্বা’ পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগামী সাপ বলা হয় এটিকে৷ এরা ঘন্টায় ১৯.৫ থেকে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলাচল করতে পারে। একটি পূর্ণ বয়স্ক কালো মাম্বার দূরত্ব দৈর্ঘ্য গড়ে প্রায় ২.৫ মিটার৷ এদের বিষাক্ততার কারণে এরা বিষাক্ত সাপের তালিকায় নিজেদের অবস্থান করে নিয়েছে৷ এদের এক সিরিঞ্জ বিষ ২৫ জন মানুষকে মারতে পারে৷ এরা একবারে ২৩ জন মানুষ এবং একটি হাতি মারতে পারে৷ প্রজাতিগত কারণে সুন্দরবনে এদের বাসস্থান আছে৷ এরা খুবই আক্রমণাত্নক বেশিরভাগ সময়ই এরা খুব সতর্কতার সাথে চলাচল করে৷
৫- ‘রাসেল ভাইপার’ এই সাপটি তালিকায় পঞ্চম স্থান দখল করেছে৷ এই প্রজাতির সাপগুলোর বিষ মাংসকে গলিয়ে দিতে পারে৷ এরা বাড়ির অপরিচ্ছন্ন স্থানে, নারিকেল গাছের পাতার ভাঁজে এরা চুপচাপ বসে থাকতে ভালোবাসে৷ পৃথিবীতে বছরে যত মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায় তার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ মারা যায় এই ভাইপার জাতের সাপের কামড়ে৷ এরা শান্ত প্রকৃতির হলেও বেশিরভাগ মানুষ এই সাপের ছোবলেই মারা যায়৷
লেখাই – আবিদ শাহরিয়ার