আসসালামু আলাইকুম, সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ৬ সপ্তাহের পরিকল্পিত এ্যাসাইনমেন্ট প্রোগ্রামে আজকে নিয়ে এলাম এই সপ্তাহে চলমান সপ্তম শ্রেণির “বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়” ( পার্ট-২, ৪র্থ সপ্তাহ) এ্যাসাইনমেন্টের সমাধান। তাহলে শুরু করা যাক।
(১)একজন সুনাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তোমার যা করণীয় আছে তার একটি কর্ম পরিকল্পনা তৈরি কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর:-
একজন সুনাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমার যা করণীয় আছে তার একটি কর্ম-পরিকল্পনা নিচে তুলে ধরা হলো:
একটি দেশের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন সুনাগরিক। কেউ সুনাগরিক হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। সুনাগরিকতা অর্জন করতে হয়। সুনাগরিকের কতগুলো গুণ বা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এগুলো অর্জনের মাধ্যমে নাগরিক সুনাগরিকে পরিণত হতে পারে। বিজ্ঞানীদের মতে, সুনাগরিক হতে হলে একজন নাগরিককে তিনটি মৌলিক গুণের অধিকারী হতে হবে। নিচে তা উল্লেখ করা হলো:
(১) বুদ্ধি
(২) আত্মসংযম
(৩) বিবেক বিচার
বুদ্ধি : বুদ্ধিমান নাগরিক যে কোন রাষ্ট্রের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। বুদ্ধিমত্তা অর্জনের সবচেয়ে বড় উপায় হলো শিক্ষা লাভ করে জ্ঞান অর্জন করা। অতএব নাগরিকদের যথার্থ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। কারণ বুদ্ধিমান নাগরিক উপযুক্ত প্রতিনিধি নির্বাচন, দক্ষতার সাথে দেশ পরিচালনা, রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও সফলতা সহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্য বাবা-মায়ের উচিত সন্তানদের যথাযথ শিক্ষা দেওয়া।
আত্মসংযম : সুনাগরিকের আত্মসংযমী হতে হবে। আত্মসংযম নাগরিককে অসৎ কাজ যেমন দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বার্থপরতা, পক্ষপাতিত্ব ইত্যাদি থেকে বিরত রাখে। দেশ ও সমাজের স্বার্থে কাজ করতে ও নিয়ম মেনে চলতে অনুপ্রাণিত করে। তাই আত্মসংযম ছাড়া সুনাগরিক হওয়া সম্ভব নয়।
বিবেক-বিচার : বিবেক-বিচার বলতে বোঝায় ভালো-মন্দের জ্ঞান, দায়িত্ব-কর্তব্যের জ্ঞান। একজন নাগরিককে শুধু বুদ্ধিমান ও আত্মসংযম হলেই চলবে না, যে কোন কাজ সম্পন্ন করতে তাকে ভাবতে হবে যে কাজটি ভালো না মন্দ। মন্দ কাজ পরিহার করে ভালো কাজটি করতে হবে।এছাড়া সমাজ বা রাষ্ট্রের কোন সমস্যার সমাধান করতে নাগরিককে তার বিবেক দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিবেক হলো নাগরিকের জাগ্রত শক্তি। অতএব নাগরিক নিজে বিবেকবান হবে। অন্যদেরও বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন হতে উৎসাহিত করবে। উল্লেখিত গুন ছাড়াও সুনাগরিকের আরো কতগুলো গুণ থাকা প্রয়োজন।যেমন সুনাগরিককে এ দেশের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে হবে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার মতো মনোভাব থাকতে হবে, আইন মানতে হবে, আত্মবিশ্বাসে ও দৃঢ় মনোভাবের অধিকারী হতে হবে এবং দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে।
এতক্ষণ আমরা সুনাগরিকের গুণাবলী জানলাম। সুনাগরিক দেশের মূল্যবান সম্পদ। উপযুক্ত সার-মাটি এবং পরিচর্যা ছাড়া যেমন একটি গাছ ভালোভাবে বাড়তে পারে না, তেমনি নাগরিকের মধ্যে এসব গুণের অভাব হলে দেশ ভালোভাবে চলতে পারে না। অতএব আমাদের ভবিষ্যৎ নাগরিকদের অবশ্যই গুন গুলো অর্জন করতে হবে।
(২)তোমার এলাকায় নির্বাচনের সময় যে নির্বাচনী আরচণবিধি পালন করা হয় তা বর্ণনা কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর:
নির্বাচন কমিশনের একটি অন্যতম কাজ নির্বাচনী আচরণবিধি তৈরি করা। সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন পরিচালনার স্বার্থে এটি করা হয়। কারণ স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্ব শর্ত। আমার এলাকায় নির্বাচনের সময় যেসব নির্বাচনী আচরণবিধি পালন করা হয় তা বর্ণনা করা হলো:
১. মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সমাবেশ-মিছিল করা যাবে না।
২. দেয়ালে বা অন্য কোথাও কোন কিছু লেখা বা পোস্টার লাগানো যাবেনা।
৩. কোন রাস্তায় বা সড়কে জনসভা করা যাবে না।
৪. রশিতে পোস্টার বা প্লাকার্ড ঝোলানো যাবে না।
৫. প্রচারের জন্য কোন গেট তৈরি বা আলোকসজ্জা করা যাবে না।
৬. মোটরসাইকেলের বা কোন যানবাহনে মিছিল করা যাবে না।
৭. নির্বাচনী ক্যাম্পে ভোটারদের কোন উপহার খাদ্য বা পানীয় পরিবেশন করা যাবে না।
সুতরাং উক্ত নির্বাচনী আচরণবিধিগুলো আমার এলাকায় নির্বাচনের সময় পালন করা হয়।
.
কোন সমস্যা হলে কমেন্ট করুন এবং পরবর্তী এ্যাসাইনমেন্টগুলো পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।