সাম্প্রতিক জীবনে স্মার্টফোন ছাড়া আমরা দু’মিনিটও থাকতে পারি না। স্মার্টফোন আমাদের প্রাণবন্তের সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িত। সোশাল মিডিয়া যেমন- ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটা, লিংকেডিন এ সব স্থানে এখন স্মার্টফোনের বিচরণ। প্রতিদিন ইমেইল চেকিং, মেসেঞ্জারে টুং টাং শব্দ করে মেসেজিং, ইন্টারনেটে বসে বসে তথ্য আহরণ এসকল পরিস্থিতিতে স্মার্টফোন আমাদের সঙ্গ দিয়ে চলেছে। অফলাইনের কথা যদি বলা হয় তবে ক্যালেন্ডার ম্যানেজ করা, গান শোনা, ভিডিও-মুভি দেখা, ছবি তোলা, ফোনে কথা বলা, বিভিন্ন অফলাইন গেমস খেলা এসব যেন এখনকার নিত্যদিনের পেশা। তবে বর্তমানে যে বিষয়টি নিয়ে মানুষ মেতে আছে সেটি হলো পাবজি। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত কেটে যাচ্ছে কিন্তু পাবজি খেলার আর অন্ত নেই।
ধারণা করা হচ্ছে এমনও এক সময় আসবে যখন সবার হাতে হাতে একটা পার্সোনাল কম্পিউটার থাকবে। অর্থাৎ একটা স্মার্টফোন থাকবে। কারণ কী বোর্ড সহ স্মার্টফোনে এমন কিছু ফাংশন আছে যা একটি পার্সোনাল কম্পিউটারে রয়েছে। তাই এটা সত্যি যে কিছু সাল পর স্মার্টফোন আমাদের অন্তরতম চাহিদাসম্পন্ন ডিজিটাল ডিভাইস হতে চলেছে।
তাহলে এসকল কারণে স্মার্টফোনের দুর্দমনীয় রূপে কাজ করাটা জরুরি নয় কি?
অবশ্যই জরুরি।
স্মার্টফোনের গুরুত্বপূর্ণ ফিচারঃ
- ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি সিস্টেম
- মোবাইল ব্রাউজার
- একের অধিক ইমেইল sync করার সিস্টেম
- এমবেডেড মেমোরি
- ব্লুটুথ সিস্টেম
- অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড দেওয়ার সক্ষমতা
- থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশন সাপোর্ট করা
- একের অধিক অ্যাপ্লিকেশন একই সময়ে চলতে পারা
- ওয়াইফাই
- ডিজিটাল ক্যামেরা এবং সাথে ভিডিও করতে পারা
- গেমিং
- মেসেজিং
- জিপিএস
উপরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচার রয়েছে যেগুলো আপনার এন্ড্রয়েড ফোনে থাকা অত্যাবশ্যক। তবে বর্তমানে প্রায় সবধরনের এন্ড্রয়েড ফোনেই এই ফিচারগুলো রয়েছে। এগুলো আমাদের প্রতিদিনের সবথেকে বেশি ব্যবহার করা ফিচার সমূহ। তাই এগুলোর কর্মদক্ষতা হওয়া চাই অপ্রতিরোধ্য। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই স্মার্টফোন ১ বছর পেরোনোর পূর্বেই মন্দগতিতে কাজ করা শুরু করে। এক্ষেত্রে নিজেদের অযত্নের দোষ তো আছেই সাথে রয়েছে স্মার্টফোনের জারজ সেবা। তাই স্মার্টফোন শুরুতেই যদি দেখেশুনে কেনা যায় তবে পরে পস্তাতে হয় না।
তাহলে স্মার্টফোন কেনার পূর্বে কি কি বিষয়ে মনোনিবেশ করবো?
স্মার্টফোন কেনা আর তরকারি কেনার মাঝে পার্থক্য বিদ্যমান। বাজারে গিয়ে তরকারি কেনার রীতিতে স্মার্টফোন কিনতে গেলে আপনি প্রতারণার শিকারই হবেন। তাই স্মার্টফোন কেনার পূর্বে কিছু ব্যাপার মনে রাখা উচিত।
১। প্রসেসরঃ স্মার্টফোন কেনার পূর্বে যে বিষয়টি অতিব জরুরি তা হলো প্রসেসর চেক করা। এমন অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা ফোনে ৪০ এমপি ক্যামেরা, ১৬ জিবি র্যাম দিয়ে দেয়। কিন্তু তাদের প্রসেসর চেক করলেই বোঝা যায় তারা কতটা চিপ। হয়ত তারা ৫ বছর আগের প্রসেসর অথবা সস্তা মিডিয়াটেক প্রসেসর দিয়ে ফোন বানিয়ে ফেলেছে। এসব ফোন কিছুদিন ব্যবহার করার পর মন্থর হয়ে যায়। কারন প্রসেসর কোনো স্মার্টফোনের সকল ধরনের ফিচার নিয়ন্ত্রণ করে। তাই ফোন কেনার পূর্বে বর্তমানে চলছে এবং হাই কোয়ালিটি সমন্বিত প্রসেসর দেখে ফোন কেনার চেষ্টা করবেন।
২। ব্যাটারিঃ বাজেট অনুযায়ী ব্যাটারির কর্মদক্ষতা নির্ভর করবে। তবে ব্যাটারির উপযোগিতা এন্ড্রয়েড সর্বনিম্ন ২৫০০ mAh এবং আইফোন ২৬০০ mAh হওয়া ভালো।
৩। ডিসপ্লেঃ যদি সিনেমা কিংবা গেমস খেলার জন্যে ফোন কেনা হয় তবে ৬ কিংবা ৭ ইঞ্চি যথাযথ। তবে সাধারণ কাজকর্ম করার জন্য ৫.৫ ইঞ্চি যথেষ্ট। বেশি বড় স্ক্রিন হলে সামলানো কিছুটা জটিল হতে পারে।
৪। র্যামঃ গেমস খেলার জন্যে ফোন কেনা হলে নূন্যকল্পে ৩জিবি র্যাম আবশ্যক। তবে সাধারণ ক্ষেত্রে ২ জিবি র্যামের ফোন ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫। ওজনঃ ১৫০ গ্রামের বেশি ওজন হওয়া উচিত নয়।
৬। মেমোরিঃ নূন্যতম ৮ জিবি মেমোরি হওয়া শ্রেয়। তবে ছবি, ভিডিও, সিনেমা এসবের ক্ষেত্রে ৩২ জিবি মেমোরির স্মার্টফোন অধিক প্রেয়।
৭। ক্যামেরাঃ যদি ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন তবে ১৮ এমপি এর ওপর হওয়া উচিত। আর ফটোগ্রাফার না হলে ৫ এমপি পর্যাপ্ত।
৮। ডুয়াল সিমঃ স্মার্টফোন অবশ্যই ডুয়াল সিম হওয়া আবশ্যক। একটি নষ্ট হলে অন্যটি ব্যবহার করা যায়।
৯। অতিরিক্ত মেমোরি স্লট থাকলে ভালো।
১০। দ্রুত চার্জিং সক্ষমতা থাকা উচিত।