২০ টাকার সবুজ জাম্বোপ্লেন টেনিস বল এবং ১২ টাকার ওসাকা টেপ এই একটা কম্বিনেশনই ডিফাইন করে দিত পারে আমাদের পুরো কৈশোরটা। কখনো গাছের ডাল ভেঙে বানানো স্ট্যাম্প, আবার কখনো দুইটা স্যান্ডেল বসিয়ে হয়ে যেত স্টাম্প।
বলে কারিকুরি করে টেপ প্যাঁচিয়ে বিট দেয়ার সময় নিজেকে মনে হতো সুইং জিনিয়াস ওয়াসিম আকরাম কিংবা গ্লেন ম্যাকগ্রা। এই বিটের কাজ কতদূর কি ছিলো আমরা কেউই জানতাম না, তবুও বল ঘুরলে বা বোল্ড করে যে টেপ প্যাঁচিয়েছি তার ভাবের অন্ত থাকতো না, সবাই এসে বাহবা দিতো!বাড়ির উঠান ক্রিকেট ছিল লাইফের অন্যতম সেরা সময়। তিনবার বল বডি টাচ হলে আউট,জিতলে আগে ব্যাট এইগুলো ছিলো কমন। লাস্ট বলে সিঙ্গেল নেয়ার কারণে কতো কতো ঝগড়া- হাতাহাতি হয়ে গেছে জীবন। বোল্ড হয়ে গেলে বল জোরে হয়েছে বলে জোর করে নো বল কল দেয়া, ব্যাটিং দলের আম্পায়ারের রান চুরি এসব ছিলো আমাদের ক্রিকেটের বাঁ-হাতের খেল।কতো বল গিয়ে মামুন চৌকিদারের মরিচ-টমেটো ক্ষেতের গাছ ভেঙেছে,ধানবীজ ক্ষেতের চারা নষ্ট করে সবাই পালিয়ে যেত তার কোন ইয়ত্তা নেই। কয়েক দিন পর সবাই সব ভুলে যেতো ঠিকই, আবার শুরু হতো আমাদের ক্রিকেট। আবার সবাই হাজির ঠিক বিকেল চারটায়, শুক্রবার সকাল আটটায়।উঠান-মাঠ সব ঠিক আগের মতোই আছে। আজকাল মাঠ গুলো কেমন যেন ছোট মনে হয়৷ আমি বড় হতে হতে উঠান-মাঠ এসব কেমন যেন ছোট হয়ে গেছে। যেমনটা ছোট হয়ে গেছে জীবনের সুখ-আনন্দ গুলোও।বিকেল চারটার মাঠ এখন শুনশান নীরব। মাঝে মাঝে একা হেঁটে যাবার সময় ছোট্ট নিজেকে বল হাতে ছুটে যেতে দেখি, হঠাৎ সেই চিৎকার, উল্লাস ভেসে আসে। চোখ ঘুরিয়ে দেখি কোথাও কেউ নেই…! 😕
হারিয়ে গেছে সব, আমার ছেলেবেলা,আমার ক্রিকেট😑