অ্যাপেলের যে ল্যাপটপ সিরিজটি শুরু থেকেই ল্যাপটপ বাজারের প্রথম অবস্থান দখল করে আছে

ম্যাকবুক এয়ারের স্লোগান হল “Power is in the Air”। এটিকে পাওয়ার হাউজ বললে অত্যুক্তি হবে না। জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী অন্যান্য ডিভাইস থেকে আলাদা হবার কারণ এর দূর্দান্ত স্পেসেফিকেশন্স, যেমন প্রসেসর আর অপারেটিং সিস্টেম।

অন্যদিকে ম্যাকবুক প্রো মডেলের ল্যাপটপ গুলো ইউজারের সুবিধার কথা মাথায় রেখে আধুনিক ফিচারসহ বাজারে এনেছেন ভিন্ন ভিন্ন স্ক্রিন সাইজে। প্রসেসর, র‍্যামের খেত্রেও আছে কিছুটা ভিন্নতা। ১৬ জিবি র‍্যাম সব ডিস্প্লে এর ক্ষেত্রে থাকলেও রমের স্টোরেজে আছে কিছুটা বৈচিত্র।

Macbook Pro মডেলটির সবগুলি ভেরিয়েন্টের বর্তমান বাজার মূল্য সম্পর্কে জানতে এখানে ভিজিট করুন https://mcsolution.com.bd/laptop/apple/macbook-pro/

অ্যাপেলের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম এবং চমৎকার কিছু ফিচার থাকার পরেও অনেকে এই টেক জায়ান্ট কোম্পানির ল্যাপটপ কিনতে কিংবা ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করেন না। এর মূল কারণ হল উচ্চমূল্য। প্রচলিত ধারনা মতে, এই ডিভাইস শুধু মাত্র লোক দেখানো কিংবা লাক্সারি জীবন বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।

কিন্তু, যারা সত্যিকার অর্থে এর মূল্য বোঝেন, তারা জানেন, এর গ্রাফিক্স কার্ড, র‍্যাম এবং রমের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি কিংবা রিফ্রেশ রেট অন্য ডিভাইস থেকে কতটা আলাদা। আবার অন্যদিকে এর নিজস্ব ম্যাক ও এস এর জন্য সব ধরনের কাজ স্মুথলি হয় বলে, অনেকে প্রথম পছন্দ হিসেবে ম্যাকবুক এয়ার কিংবা প্রো মডেলের ল্যাপটপগুলো এগিয়ে রাখেন।

বড় বড় ফিচার ছাড়াও ছোটখাটো বহু কারণ আছে, যেটার জন্য ম্যাকবুক সিরিজের প্রতিটি ল্যাপটপ প্রথম থেকেই বাজারে প্রথম অবস্থানে রয়েছে।

প্রসেসর

২০২২ এ প্রকাশিত ম্যাকবুক সিরিজের macbook pro & macbook air মডেলগুলিতে প্রসেসর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে শক্তিশালি M1 chip। ম্যাকবুক প্রো এবং ম্যাকবুক অ্যায়ার দুইটি মডেলই ব্যবহার করা হয়েছে অ্যাপেলের লেটেস্ট M1 chip তবে প্রাইস এর ভিত্তি করে পরিবর্তন করা হয়েছে প্রসেসরও।

ভেরিয়েন্ট বা প্রাইস ভেদে পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করা হয়েছে M1,M1 Pro, M1 Max, M1 Ultra প্রসেসর ভেরিয়েন্টগুলো চলুন সংক্ষেপে জেনে নেওয়া কি কি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে ভেরিয়েন্টগুলোর মধ্যে। প্রথমে কথা বলা যাক কোর সংখ্যা নিয়ে, অ্যাপেলের M1 চিপটিতে দেওয়া ৮টি কোর যার চারটি performance এবং অপর চারটি effciency cores।

ঠিক একইভাবে M1 Pro ভেরিয়েন্টটিতে দেওয়া হয়েছে ৮ থেকে ১০টি ডিপেন্ড করে ডিভাইস এর উপর। যেটির performance কোর ৬টি অথবা ৮টি এবং effciency cores ২টি। অপরদিকে এদেরকে ছাড়িয়ে M1 Max এ দেওয়া হয়েছে সর্বমোট ১০টি কোর যার পারর্ফমেন্স কোর ৮টি এবং ইফিসিয়েন্সি কোর ২টি।

Cpu তে তেমন তফাৎ না দেখা গেলেও অনেকটা তফাৎ দেখা যায় জিপিউতে। অ্যাপেলের M1 চিপটি সর্বমোট জিপিউ কোর দেওয়া হয়েছে ৭-৮টি। অপরদিকে M1 Pro ভেরিয়েন্টটিতে দেওয়া হয়েছে ১৪ – ১৬ কোর। এদের থেকে অনেকটা এগিয়ে থাকা M1 Max এ প্রদান করা হয়েছে ২৪ -৩২ কোর যেটি এদের মধ্যে অনেকটা তফাৎ সৃষ্টি করে দেয়।

এছাড়াও এর ট্রান্সিসটর সেকশনটি একটু দেখা যাক। M1 এ ট্রান্সিটর এর পরিমান রয়েছে ১৬ বিলিয়ন যেটি M1 Pro তে ৩৩.৭ বিলিয়ন এবং এদের সবসময় এগিয়ে থাকা M1 Max রয়েছে ৫৭ বিলিয়ন। প্রসেসরটির সব দিক বিবেচনার পর বলা চলে এর পাওয়া খুব কঠিন। এবং আপনার যদি প্রসেসর প্রধান পছন্দ হয়ে থাকে এর থাকে ভালো পছন্দ আর কোনোটি হবে না বলে আমি মনে করি

ডিসপ্লে

অ্যাপেলের নতুন macbook pro & macbook air সিরিজগুলোতে ডিসপ্লে হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে diagonal এবং XDR ডিসপ্লে এবং ভেরিয়েন্ট এবং মডেল ভেদে অ্যাপেল প্রদান করেছে ভিন্ন ভিন্ন স্ক্রিন সাইজ। অ্যাপেলের প্রসেসর এর পর তাদের এই সেকশনটা শক্তিশালি বলে গন্য করা হয়।

কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক তাদের প্রদানকৃত ডিসপ্লে সম্পর্কে। অ্যাপেল তাদের ম্যাকবুক সিরিজটি দুইটি ভাগে বিভক্ত বা প্রকাশিত করেছে একটি air অপরটি pro। অ্যাপেলের ম্যকবুক air এ ডিসপ্লে হিসেবে তারা ব্যবহার করেছে diagonal ডিসপ্লে যেটি Ips এর আগ্রেড ভার্সন বলা যায়। এবং এই সিরিজের সবগুলো ভেরিয়েন্টই দেওয়া ১৩.৩ ইঞ্চির একটি ডিসপ্লে।

তবে অপরদিকে ম্যকবুক pro এর ডিসপ্লে সেকশন এ diagonal সাথে আরো যুক্ত করা হয়েছে XDR ডিসপ্লে, ভেরিয়েন্ট এবং প্রাইস ভেদে এই ডিসপ্লেটিও দেওয়া হয়েছে সিরিজটিতে। এই ডিসপ্লেটি OLED থেকেই উন্নতমানের বা আপগ্রেডেড ডিসপ্লে। ম্যাকবুক প্রো সিরিজটিতে ভেরিয়েন্ট ভেদে প্রদান করা হয়েছে ১৩,১৪ এবং ১৬ ইঞ্চির ডিসপ্লে।

অ্যাপেলের ডিসপ্লে সেকশনটি নিয়ে তেমন অভিযোগ না থাকলেও অবশ্যই ক্রয়ের পূর্বে অন্যান্য মডেলের সাথে বিবেচনা করে নেওয়া পরামর্শ দিতে আমি পছন্দ করবো।

ব্যাটারি

অ্যাপেলের আরেকটি গুরত্বপূর্ণ সেকশন হচ্ছে ব্যাটারি যেটির কথা না বলেই নয়। এটিকে গুরপূর্ণ বলার কারন হলো অ্যাপেল সব দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও এবং ভালো পারর্ফম করা সত্ত্বে তারা ব্যাটারি সেকশনে কিছুটা পিছিয়ে অন্যান্য ব্রান্ড থেকে। অনেক সময় ধরে অ্যাপেল এর ডিভাইসগুলোতে এই সমস্যাটি বিস্তার করছে ।

যার কারনে কোনো ইউজার অ্যাপেলে স্থান্তর করার পূর্বে চিন্তা করতে হয় এই সেকশনটা নিয়ে। তবে অ্যাপেলের প্রকাশিত নতুন macbook pro & macbook air সিরিজগুলো এই সমস্যাটি তেমন লক্ষ করা যায়।

এই দুইটি সিরিজ এর মধ্যে সর্বনিম্ন ব্যাটারি (wh অর্থাৎ watt hour) দেওয়া হয়েছে 49.9 wh যেটি ম্যাকবুক air ব্যবহার করা হয়েছে অন্যদিকে সর্বচ্চো ব্যাটারি সার্পোট দেওয়া হয়েছে 100 wh যেটি Macbook Pro M1 Max 16 Inch এ। অ্যাপেলের 49.9 wh ব্যাটারিটি আপনাকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত সার্পোট দিতে পারবে এবং অপরদিক 100 wh ব্যাটারিটি আপনাকে ২১ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে সক্ষম।

ভেরিয়েন্ট এবং প্রাইস ভেদে অনেক কিছুই পরিবর্তন করা হয়েছে সিরিজ দুইটিতে। আপনার বাজেট অনুসারে আপনি ঠিক করে নিতে পারেন সেরা ভেরিয়েন্টটি।

আমার মতামত

আজকের আলোচিত macbook pro & macbook air সিরিজ দুইটির সব দিক বিবেচনা করলে আমরা দেখতে পাবো যে এই প্রাইস রেঞ্জে থাকায় অন্যান্য মডেল থেকে পিছিয়ে নয় বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে। আর সবচেয়ে বেশি আলোচিত এবং ক্রেতাদের মূল আকর্ষন এর প্রসেসর সেকশনে যেখানে দেওয়া অত্যান্ত শক্তিশালি M1 chip।

আমার পরামর্শ থাকবে এইটাই থাকবে যে যদি আপনি ওফিসিয়াল কাজের জন্য ভালো একটা খুজে থাকেন এবং ব্যাটারির তুলনায় পারর্ফমেন্সটাই প্রধান বিষয় হয় তবে এর বিকল্প আর কোনোটি হবে আপনার জন্য। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের মতামত আমাকে জানাবেন।

Related Posts