উচ্চ রক্তচাপ ঔষুধ ছাড়া নিয়ন্ত্রনে রাখুন মাত্র ১০টি উপায়ে

বাংলাদেশের অধিকাংশ রোগীরাই উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগে ভুগছে। এখন রোগটি খুবই পরিচিত রোগে পরিণত হয়েছে। তবে বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে উচ্চরক্তচাপ খুব সহজেই নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব। চিকিৎসকের মতে, উচ্চরক্তচাপ একটি ক্রোনিক রোগ যা নিয়ন্ত্রনে রাখা না গেলে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। উচ্চরক্তচাপ থেকে হার্টের রোগ ও স্ট্রকসহ অন্যান্য রোগের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এজন্য যাদের উচ্চরক্তচাপ আছে তাদের অবশ্যই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে ১০টি উপায় সম্পর্কে জেনে নিন:

শরীরের ওজন কমানো: উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের হাঁটা-হাঁটি ও ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের ওজন কমিয়ে রাখতে হবে।

শারীরিক চর্চা: এই ধরণের রোগীদের অবশ্যই নিয়মিত শারীরিক চর্চা করার অভ্যাস করতে হবে এবং শরীরের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

ভালো খাবার: উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের ভিটামিনযুক্ত ফলমূল খেতে হবে এবং তৈলাক্ত খাবার পুরোপুরি বর্জন করতে হবে। এই রোগীদের অতিরিক্ত তেল, ঝাল ও মসলা থেকে সম্পূর্ণ বিরত রাখতে হবে।

খাবারে লবন খুবই কম: উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের খাবারে লবন খুব কম দিয়ে খেতে হবে। এছাড়াও কাঁচা লবণ একেবারেই বর্জন করতে হবে। এতে উচ্চ রক্তচাপের ঝুকি অনেক কমে আসে।

মদ্যপান পরিহার করুন: উচ্চ রক্তচাপে মদ্যপান একেবারেই পরিহার করে চলতে হবে। মদ্যপান রক্তচাপ বৃদ্ধি করে।

সিগারেট ও ধুমপান পরিহার করুন: এই সকল রোগীদের সিগারেট ও ধুমপান থেকে রক্তচাপ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এইজন্য উচ্চ রক্তচাপ থাকলে সিগারেট ও ধুমপান পরিহার করে চলুন।

কফি খাওয়ার অভ্যাস পরিহার করুন: কফিতে প্রচুর পরিমানে ক্যাফেইন থাকে যার কারণে কফি খেলে উচ্চ রক্তচাপ বাড়ার আশংকা থাকে। এইজন্য উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগীদের কফি সম্পূর্ণ পরিহার করে চলতে হবে।

মতিস্কের ভেতর দুশ্চিন্তা দূর করুন: অনেক সময় মতিষ্কে দুশ্চিন্তার কারণে রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে এবং এর ভেতর উচ্চ রক্তচাপ অন্যতম। এজন্য দুশ্চিন্তা একেবারেই পরিহার করে চলুন।

ঘরে বসেই উচ্চ রক্তচাপ পরিমাপ করুন: ঘরে উচ্চ রক্তচাপ পরিমাপ করার যন্ত্র থাকলে মাঝে মাঝে রক্তচাপ পরিমাপ করে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। এছাড়াও আপনার নিকটস্থ চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়েও উচ্চ রক্তচাপ পরিমাপ করতে পারবেন।

চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য নিজের কাছে সংগ্রহ করে সতর্কতার সাথে চিকিৎসা গ্রহন করতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপ একটি রোগ এবং এই রোগকে কোন ভাবেই অবহেলা করা যাবে না। এই রোগ থাকলে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করে নিজের সুরক্ষারর্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। এছাড়াও দুশ্চিন্তা সর্বদা এড়িয়ে চলতে হবে এবং নিয়মিত শরীরচর্চার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসকল সাধারণ বিষয় ঠিক রাখলে আপনি উচ্চ রক্তচাপ খুব সহজেই নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন।

সূত্র: এইসময়.কম

Related Posts

15 Comments

  1. ভাই Md. Arifur Rahman, পোস্টটি সুন্দর হয়েছে। তবে আমি কিছু ইনফমেশন যুক্ত করতে চাই। আমি নিজেও একজন বায়োলজির ছাত্র ছিলাম। একদম মাস্টার্স পর্যন্ত। এসব ব্যাপার গুলো কেউ কিছু বললে আমি অনেক কিছুই বুঝি। আর তাছাড়া স্বাস্থ্য বিষয়ক সকল কিছুতে আমি আপ-ডেট থাকার চেষ্টা করি প্রতিনিয়ত। তো যাই হোক, আমি কিছু ইনফোরমেশন যুক্ত করতে চাই বিশেষ করে বিশেষ করে লবণের ব্যাপারে। এতে পাঠকরাও উপকৃত হবে বরে আমার বিশ্বাস।
    প্রথম কথা হচ্ছে কাঁচা লবণ বলে কিছু নেই। লবণ একটি অজৈব যৌগ। যার রাসায়নিক সংকেত হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড(NaCl)। তো চলুন জানা যাক পরিমিত লবণের কত উপকার।

    লবণ না খেলে কি হয়?

    অধিকাংশ হেলথ প্রফেশনালরা লবণকে ভিলেন বানিয়ে ফেলেছে। মানুষের মধ্যে ধারণা তৈরি করে ফেলেছে যে, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট এটাক, স্ট্রোক, কিডনি স্টোন, কিডনি বিকল ইত্যাদি রোগের প্রধান কারণ লবণ। তাই লবণ খাওয়া কমাতে এমনকি পরিহার করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
    বস্তুতঃ যে সমস্যাগুলো অন্য কারণে সৃষ্ট, তার মিথ্যা দায় লবণের উপর চাপানো হচ্ছে।
    লবণ মানবদেহের অত্যাবশকীয় উপাদান, যার অভাবে বিবিধ জটিল সমস্যা এমনকি মৃত্যু অনিবার্য।
    মানবদেহে লবণের প্রয়োজনীয়তা জানার আগে ইলেক্ট্রোলাইট (electrolytes) সম্পর্কে জানতে হবে।
    ইলেক্ট্রোলাইট হচ্ছে দেহে চার্জিত বা আয়োনিত মিনারেলস। রক্তরস (plasma) ও টিস্যুতে ইলেক্ট্রোলাইট নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ ফাংশনে লিপ্ত। সোডিয়াম, ক্লোরাইড, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, বাই-কার্বোনেট ও ফসফেট মানবদেহের ইলেক্ট্রোলাইট। ইলেক্ট্রোলাইট এর প্রধান কাজ হচ্ছে :
    – দেহে পানির ভারসাম্য ঠিক রাখা
    – রক্তচাপ ও হার্ট বিট নিয়ন্ত্রণ
    – দেহের এসিড-বেস ( pH) ব্যালেন্স ঠিক রাখা
    – কোষে অক্সিজেন ও পুষ্টি প্রবেশ করানো
    – কোষের অভ্যন্তরের বর্জ্য অপসারণ
    – ব্রেইন ও নার্ভাস সিস্টেম একটিভ রাখা
    – মাসল সংকোচন-প্রসারন নিয়ন্ত্রণ
    এক কথায়, আমাদের বেঁচে থাকার জন্য ইলেক্ট্রোলাইট অপরিহার্য। আর মোট ইলেক্ট্রোলাইট এর প্রায় ৮৮% দখল করেছে লবণ বা সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl)। তাহলে লবণ পরিহার করলে বা না খেলে আপনি বাঁচবেন?

    এক্সারসাইজ কালে ঘামের সাথে প্রতি ঘন্টায় প্রায় পৌনে এক চা-চামচ লবণ বের হয়ে যায়, যা খাদ্যের মাধ্যমে রিপ্লেস করতে হয়। অপর্যাপ্ত লবণ খেলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বিল্ড-আপ করে, ফলে স্থুলতা, ডায়াবেটিস দেখা দেয়। অপর্যাপ্ত লবণ খেলে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম ডেফিসিয়েন্সি দেখা দিতে পারে। রক্তে সোডিয়াম এর ঘাটতি হলে হাড় থেকে সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম বের হয়ে ঘাটতি পূরণ করে। লবণের ক্লোরাইড পাকস্থলীর অত্যাবশকীয় পাচক এসিডের প্রধান কাঁচামাল। লবণ লালা ও বিভিন্ন এনজাইম নিঃসৃত করে খাদ্য হজমে সহায়তা করে।
    আমাদের বেঁচে থাকার জন্য লবণ অপরিহার্য। তবে অতিরিক্ত সবকিছুই খারাপ। তাই পরিমিত লবণ খেতে হবে – প্রতিদিন অন্তত ১ থেকে ২ চা-চামচ।
    ধন্যবাদ।

মন্তব্য করুন