উপস্থিত বুদ্ধি ও তার সফল প্রয়োগ – দ্বিতীয় পর্ব।

প্রথম পর্বের পর … 

কি হলো? কি হলো? সবাই চিৎকার চেচামাচি শুরু করে যে যেদিকে পারলো ছুটে পালাতে থাকলো। শুধু ইন্সট্রাকটর স্যার এসে আমাকে পরীক্ষা করতে লাগলেন আমি ঠিক আছি কিনা। আমি কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে পরে থাকলাম। তারপর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ মনে করতে পারছিলাম না কি ঘটেছে আমার সাথে। আমি কেন মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছি? আস্তে আস্তে সব মনে পড়তে লাগলো।

জোবায়দা গুলশান আরা ম্যাডাম আমাদের বাংলা বিভাগের প্রধান ছিলেন। আমি বিজ্ঞান গ্রুপের ছাত্র হওয়া সত্বেও বাংলায় আমার ভাল দক্ষতা ছিল। আর তাই উনি পারসোনালি আমাকে খুব ভালবাসতেন। উনি আরোও কয়েকজন স্যার ম্যাডামকে নিয়ে মাঠে এসে হাজির। কিছুক্ষণের মধ্যে প্রিন্সিপ্যাল স্যারও এলেন। ততক্ষণে আমি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছি। এবং নিজ প্রচেষ্টায় উঠে বসেছি। এরপর ম্যাডাম আমাকে কিছু না বলে আমার সহপাঠীদের বললেন আমাকে উনার রুমে নিয়ে যেতে। আমি নিজেই উঠে পড়লাম এবং ম্যাডামকে বললাম –

ঃ ম্যাডাম আই এম ফাইন, নো টেনশান। এভরিথিং ইজ ওকে নাউ।

ঃ একচুয়ালি হোয়াট হেপেন্ড উইদ ইউ মাই চাইল্ড?

ঃ নাথিং হ্যাপ্পেন্ড উইদ মি ম্যাম। বাট সামথিং সিরিয়াস ইউল বি হ্যাপেন্ড ইফ আই উন্ড লে ডাউন ইন দ্যা গ্রাউন্ড ইন প্রপার টাইম!

ঃ মাই গড! প্লীজ লেট মি নো দ্যা ফ্যাক্ট!!

আসলে ঘটনাটি ছিল এরকমঃ

আমরা সবাই যখন প্যারেডে মগ্ন, তখন হঠাৎ মাঠের বাইরে একটি আওয়াজ হলো। আমি বাতাসে শিষ কেটে খুব দ্রুত কিছু একটা এগিয়ে আসার শব্দ পেলাম। আমার সিক্সথ সেন্স বলছিল, “এটা একটা গুলি, যেটা আগামী ২/১ সেকেন্ডের মধ্যে ঠিক আমার কপাল বরাবর আঘাত করে মাথায় ঢুকতে যাচ্ছে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলাম শুয়ে পরতে হবে এবং মাটিতে শুয়ে পরলাম। ঘটনাটা এবং আমার প্রতিক্রিয়াটা এতই দ্রুত ঘটে যে, আমার সঙ্গীরা তো পরের কথা আমি নিজেই হতভম্ব হয়ে যাই। পরে চেক করে দেখা গেছে গুলিটা ঠিক আমার পিছনের ভবনের দেয়ালে মাটি থেকে ৫ ফিট ১০ ইঞ্চি উপরে লেগেছিল। উল্লেখ্য আমার উচ্চতা ৬ ফিট। অর্থাৎ আমি শুয়ে না পড়লে ঠিক আমার কপালে বা নাকের উপরিভাগে লাগতো। যোবায়দা ম্যাডাম আমাকে এত ভালবাসতো তা আমি আগে জানতাম না। সেদিন উনি আমাকে সুস্থ অবথায় ফিরে পেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেছিলেন। সব স্যার-ম্যাডামগন আল্লাহ্‌ তায়ালায় কাছে শুকরিয়া আদায় করেন। আর আমাকে সবাই বাহবা দিলেন আমার তাৎক্ষনিক বুদ্ধির প্রয়োগের জন্য।

পরবর্তিতে আমরা যাখন বি, এন, সি, সি-র ক্যাম্পিংযে সফিপুর আনসার একাডেমীতে গিয়েছিলাম, তখন আমাকে আমাদের টিম লিডার নির্বাচন করা হয়েছিল।

সকলের সু – স্বাস্থ ও সার্বিক উন্নতি কামনায়, আল্লাহ্‌ হাফিজ।

Related Posts

9 Comments

মন্তব্য করুন