একাধিক কম্পিউটারকে পরপর সংযুক্ত করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম তৈরি করা হয় । কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে নেটওয়ার্কভুক্ত সকলে কম্পিউটারের সাহায্যে বিভিন্ন কিছু শেয়ার করবে ও একসাথে কাজ করতে পারবে । এক মূল উদ্দেশ্য কম্পিউটারের মাধ্যমে পারস্পারিক যোগাযোগ । প্রযুক্তির উতকর্ষতার সাথে সাথে যোগাযোগের মাত্তা ও ধরনের পরিবর্তন আসে । বর্তমান সময়ে ফেসবুকের সাহায্যে সামাজিক যোগাযোগ স্কাইপির মাধ্যমে সরাসরি ভিডিও যোগাযোগ উল্লেখ্যযোগ্য । আবার রিসোর্স শেয়ারিং এর জন্য ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন । এক্ষেত্তে হার্ডওয়্যার রিসোর্স শেয়ার , সফটওয়্যার রিসোর্স শেয়ার ও ইনফরমেশন রিসোর্স শেয়ার কাজের সূক্ষতা ও গতি অনেক বাড়িয়ে দেয়।
নেটওয়ার্কের উদ্দেশ্য ঃ
দুই বা ততোধিক কম্পিউটারের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় । এ নেটওয়ার্কের প্রধান উদ্দেশ্য কম্পিউটারসমূহের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার রিসোর্স শেয়ার করা । নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত কোন কম্পিউটারের জন্য রিসোর্স হচ্ছে অন্য কম্পিউটারের এমন কোন উপাদান বা সুবিধা বা তার মধ্যে নেই। যে কোন কম্পিউটারের উপাদানগত সীমাবদ্ধ থাকতে পারে । তবে নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যদি রিসোর্স শেয়ার করা যায় তবে কম্পিউটারে সাহায্যে কাজ করার ক্ষেত্ত অনেক বড় হয়ে যাবে । উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকটি রিসোর্স সম্পর্কে আলোচনা করা হলো ঃ
-
হার্ডওয়্যার রিসোর্স শেয়ার ঃ
নেটওয়ার্কভুক্ত কোন কম্পিউটারের জন্য অন্য কম্পিউটারের কোন হার্ডওয়্যার উপাদান হচ্ছে হার্ডওয়্যার রিসোর্স । কম্পিউটার নেটওয়ার্কে এটি ব্যপকভাবে ব্যবহারিত হয় । আমরা বিভিন্ন অফিস , ব্যাংক , কম্পিউটার ল্যাব , সাইবার ক্যাফেতে দেখি যে একাধিক কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক কিন্তু সেখানে একটি মাএ প্রিন্টার সবাই ব্যবহার করে । এখানে মূলত প্রিন্টারটি সংযুক্ত থাকে সার্ভার কম্পিউটারে । অন্য কম্পিউটারগুলো নেটওয়ার্কভুক্ত থাকার কারনে সার্ভারের পিন্টারটি শেয়ার করতে পারে ।
-
সফটওয়্যার রিসোর্স শেয়ার ঃ
নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সফটওয়্যার রিসোর্স শেয়ার করা যায় । এক্ষেত্তে একটি সফটওয়্যাকেই যদি নেটওয়ার্কের সকল কম্পিউটারকে ব্যবহার করতে হয় তবে একধিক সফটওয়্যার ক্রয় না ক্করে একটি সফটওয়্যার ক্রয় করলেই সবাই তা ব্যবহার করতে পারে ।বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা লেনদেনের জন্য যে ভিন্ন ভিন্ন কউন্টার ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটার ব্যবহার করতে দেখা যায় । তা মূলত একটি সফটওয়্যারকেই সকলেই শেয়ার করে থাকে ।
-
ফাইল বা ইনফরমেশন অথবা ডেটা রিসোর্স শেয়ার ঃ
নেটওয়ার্কের ফলে একটি কম্পিউটারে বসে অন্য কম্পিউটারের ফাইল বা ডেটা অথবা ইনফরমেশন অ্যাকসেস করা যায় । ফলে সকল ফাইল বা ইনফরমেশন একটি কম্পিউটারে না রেখে ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটারে রাখা হয় । ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটার মূল সার্ভারে রক্ষিত ডেটাবেজ থেকে ফাইল বা ডেটা শেয়ার করতে পারে।
কম্পিউটার নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ –
ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের বিভিন্ন ভাবে শ্রেনীবিভাগ করা হয় । যথা ঃ
মালিকানা অনুসারে নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ –
- প্রাভবেট নেটওয়ার্ক
- পাবলিক নেটওয়ার্ক
সার্ভিস প্রদান ও নিয়ন্তণ কাঠামো নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ –
- পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক
- ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক বা সার্ভার বেসভ নেটওয়ার্ক
- হাইব্রিড নেটওয়ার্ক
ভৌগলিক বিস্তৃতি অনুসারে নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ –
- পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক
- লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক
- মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্ক
- ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক
মালিকানা অনুসারে নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ –
-
প্রাইভেট নেটওয়ার্ক ঃ
প্রাইভে্ট নেটওয়ার্ক সাধারনত কোন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থায় মালিকানাধীন থাকে । এটিতে কেউ ইচ্ছে করলেই এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবে না । এই নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা অত্যন্ত মজবুত এবং ট্রাফিক নেই বললেই চলে । উদাহরনস্বরুপ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড , ঢাকা এর নিজস্ব নেটওয়ার্ক ।
-
পাবলিক নেটওয়ার্ক ঃ
পাবলিক নেটওয়ার্ক সাধারনত কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন থাকে না । এটি কোন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হয় । যে কেউ চাইলেই এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবে ।তবে এর বিনিময়ে মূল্য পরিশোধ করতে হবে । উদাহরনস্বরুপ বিভিন্ন মোবাইল ফোন কিংবা টেলিফোন নেটওয়ার্ক সিস্টেম ।