চুরুলী(Churuli) মালায়ালাম মুভি রিভিউ

চুরুলী (চুরুলী) মালায়ালাম মুভি রিভিউ
হাইস্পয়লার সতর্কতা
চুরুলী (2021)
ধরণ: রহস্য/Sci-fi
পরিচালক: লিজো জোসে পেলিসারি
অভিনয়ে: বিনয় ফোর্ট; চেম্বান বিনোদ জোস; জোজু জর্জ; সৌবিন শাহির; জাফর ইদুক্কি
ভাষা: মালায়লাম
চিত্রনাট্য লিখেছেন: এস. হরিশ
মিউজিকঃ শ্রীরাগ সাজি

Churuli – বাংলায় এই শব্দটির অর্থ চক্র। পরিচালক লিজো জোশ পেলিসেরি‘র সাথে প্রথম পরিচয় ফিল্ম “জাল্লিকাট্টু” দিয়ে। ৯৩ তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস এর জন্য ভারতীয় এন্ট্রি হিসাবে মনোনীত হয়েছিল “জাল্লিকাট্টু”। স্বাভাবিক ভাবেই “চুরুলি” নিয়ে প্রত্যাশা আকাশছোঁয়া যে থাকবেই তা অনস্বীকার্য! তবে যারা নাকি বানিজ্যিক ধারার ফিল্ম পছন্দ করেন তারা হয়তো এই ফিল্মটা একেবারে ম্যাড়ম্যাড়ে লাগবে! তাছাড়া এই ফিল্ম এর কাহিনী নামের মত প্যাচানো। তাই হয়তো এই ফিল্ম এর কাহিনী কারও কারও মাথার উপরদিয়ে যেতে পারে। তাই বলা যায় এই ছবি সবার জন্য নয় কারণ সবার এই ছবি ভাল লাগতে নাও পারে,,,কিন্তু একবার যে অন্তত সবার দেখা উচিত সেকথা মুক্তকন্ঠে স্বীকার করতেই হবে!

ফিল্ম  এর কাহিনী সংক্ষেপ

ভারত এর কেরালার শহর থেকে বেশ দূরে বিছিন্ন একটি গ্রাম, কুয়াশাচ্ছন্ন পাহাড়ের মাঝে সল্প জনবসতিপূর্ণ এ রহস্যময় গ্রামের নাম ” চুরুলি “। এ গ্রামে লুকিয়ে আছে একজন দুর্ধর্ষ চোরাকারবারি, তাকে ধরতে রাবার বাগানের শ্রমিক হিসেবে সেখানে আগমন করেন দুজন আন্ডারকভার পুলিশ। তবে কাজটা তারা যতটা সহজ ভেবেছিলেন ততটা সহজ নয়। গ্রামের সবকিছুই কেমন যেন রহস্যজনক- মানুষের চলাফেরা আর আচরণে সবকিছুতে কেমন যেন একটা অদ্ভুতুড়ে রহস্য লেগে আছে। বাসিন্দাদের সবাইকে বেশ সহজসরল মনে হলেও তারা কেমন যেন অদ্ভুত ধরণের!। মাঝেমাঝে মনেহয় এ যেন অরণ্য দেবতাদের আশ্রম!। জিলিপি বা মর্টিন ধুপ কয়েলের মত জঙ্গলের রাস্তা , যেনো এক শেষ না হওয়া রাস্তা , একবার চুরুলি গেলে মনে হয় কতবছর ধরেই না সেখানে তারা আছে , কিন্তু শুধু মনে হওয়া টাই , এর কোনো প্রমাণ নেই ।

চুরুলী প্রকৃতপক্ষে একটি অন্তহীন অনুসন্ধান। একটি বৃত্তে সময়ের গতিবিধিতে আটকে থাকা গোলকধাঁধা। এর গল্প আপনাকে একটি Loop এ আটকে রাখবে যার উত্তর হয়তো আছে, হয়তো নেই।

ড্রোন শটে ক্যামেরাবন্দী সবুজাভ জঙ্গলের বুক চিরে আঁকাবাঁকা রাস্তা বেয়ে যানবাহনের চলাচল,,মেঘ-কুয়াশার নিরন্তর আলিঙ্গণ,,,দেখতে দেখতে যেন নেশাতুর হয়ে পড়ে দর্শক আঁখি।এ যেন এক স্বপ্নময় কাব্য!তার সাথে যোগ্য সঙ্গত করে ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক।উফফফ!কখনো সুমধুর তো পরক্ষণেই ভয় জাগানিয়া!আর সেই অদ্ভুত আধিভৌতিক অপ্রাকৃত শব্দটা!!

আর সবার অভিনয় ছিল একদম ন্যাচারাল। জঙ্গলের প্রতিটি চরিত্র ছিল একদম নিঁখুত। এন্টোনি এবং শাজিভান চরিত্রে চেম্বান বিনোদ জোস এবং বিনয় ফোর্ট ছিল সেরার সেরা। তাদের এক্সপ্রেশন ছিল ন্যাচারাল। তারা যে মুভির অভিনয় করেছে তা বুঝার উপায় নাই। চরিত্রের সাথে একদম মিশে গিয়েছিল। পরিচালক সবার থেকে সের অভিনয় টা বের করে নিয়ে এসেছে। সবশেষে বলি এই ছবির জঁর কি হতে পারে বা কি হওয়া উচিত?যেহেতু ছবির শেষটা বিচারের ভার দর্শকমনের উপর ছেড়ে দিয়েছেন পরিচালক তাই নানা মুনির নানা মত অনুযায়ী সাই-ফাই,হরর,মিস্ট্রি থ্রিলার নানান জঁরের উল্লেখ উঠে আসছে।

এই ছবির মূল Highlight point এর অসাধারণ মেকিং আর সিনেমাটোগ্রাফি। সাথে লোকেশনগুলো মন জুড়িয়ে দিয়েছে। পরিচালক জঙ্গল কে খুব সুন্দর ভাবে রিপ্রেজেন্ট করেছে। গ্রামের রহস্যে ভালোই আটকে ফেলতে পেরেছে। আর বিজিএম ছিল এককথায় আগুন ।অনেক জায়গায় ভয় পেয়ে দিয়েছে। যারা মালায়ালাম ইন্ড্রাস্টির কাজ পছন্দ করেন । তাদের জন্য এই সিনেমাটি মাস্ট ওয়াচ।

শেষকথাঃ এই মুভিটি শুধু মাত্র মালয়ালাম ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে অন্য কোন ভাষায় Available না। তাই বাংলা সাব বা ইংরেজী সাব দিয়ে দেখবেন। আর আপনি যদি মালয়ালাম ভাষায় পারদশী হন তবেতো কোন কথাই নাই। আর মুভিটি বিভিন্ন সাইটে Available আছে। So ডাউনলোড করুন আর….

হ্যাপি ওয়াচিং 

Related Posts

13 Comments

মন্তব্য করুন