জীবন একটাই, তাই জীবনকে জীবিত রাখুন ( মোটিভেশনাল )

এই বিশাল সৌরজগতের লক্ষ লক্ষ গ্রহ- উপগ্রহের মধ্যে একটিমাত্র উপগ্রহ আছে যেখানে সকল প্রকার জীবের জীবন ধারনের সকল উপকরণ বিদ‍্যমান। আর তার নাম হলো আমাদের এই প্রিয় পৃথিবী। পৃথিবী আমাদের আবাস স্থল। শুধু আমাদের নয় বরং সমগ্র  জীবকুলেরও আবাস স্থল। পৃথিবী সৃষ্টির শুরুতে এত সুন্দর গোছালো, পরিপাটি বা শতভাগ বসবাস যোগ‍্য স্থান ছিলো না। এই পৃথিবীকে মানুষ নিজস্ব বুদ্ধি ও বিচক্ষনতা দিয়ে শতভাগ  বসবাস যোগ‍্য স্থান  হিসেবে গড়ে নিয়েছে।

তাই এখন জীবন ধারনের সকল উপকরণই পৃথিবীতে বিদ‍্যমান রয়েছে। আমরা জীব তাই মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে পৃথিবী নামক এই উপযুক্ত স্থানেই পাঠিয়েছে। যৌক্তিকভাবে  সকল সৃষ্টির পেছনে একটি উদ্দেশ্য বা কর্মপরিকল্পনা  থাকে। যেমন মানুষ বিমান সৃষ্টি করেছে, কেন করেছে? দুরদূরান্তের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মূহুর্ত্তের মধ্যে যাতায়াত করার জন‍্য।

মানুষ কম্পিউটার, ট‍্যাব, মোবাইল ফোন, ক‍্যালকুলেটর সহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সৃষ্টি করেছে, কেন করেছে? তার দৈনন্দিন জীবনের কারিগরি কাজকে সহজ করার জন‍্য। মানুষ ঘরবাড়ি, দালান কোঠা বা অট্টালিকার মতো বড় বড় প্রাসাদ তৈরি করেছে নিরাপদে বসবাস করার জন‍্য। এমনিভাবে এই পৃথিবীতে সবকিছুই  মানুষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে সৃষ্টি করেছে। উদ্দেশ্য বিহীন কোন কিছুই তৈরি হয় নি। এমনকি আমরাও না, আমাদের সৃষ্টির পেছনেও মহান আল্লাহর একটি উদ্দেশ্য আছে। তাহলো মহান আল্লাহর নির্ধারিত বিধানের উপর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে নিজের ও সমগ্র জীবকূলের কল‍্যাণ সাধন করা।

“ভোগে নয়, ত‍্যাগেই প্রকৃত সুখ” অনুধাবনীয় এই প্রবাদ বাক্যেটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু ভোগ বিলাসী মানুষ যেন “ত‍্যাগ” শব্দটি কোনভাবেই জীবনে মেনে নিতে চাই না। কারণ মানুষ অনুধাবনীয় এই বাক‍্যটি কেবলমাত্র বই বা প্রবন্ধের পাতায় মধ্যে সীমাবদ্ধ  রেখেছে, বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে চাই না। অধিকিন্তু, মানুষ তার বাস্তব জীবনে উক্ত প্রবাদ বাক্যটি পরিবর্তন করে মেনে নিয়েছে “ত্যাগে নয় ভোগেই প্রকৃত সুখ”। তবে যেসব মনীষীরা তাদের জীবনে উক্ত প্রবাদ বাক‍্যটির  বাস্তবিক প্রয়োগ ঘটিয়েছে তারা তাদের জীবনের প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন করেছে। তারা পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেও পৃথিবী নামক এই রঙমঞ্চেও তাদের জীবন পরিক্রমা ঠিকই মানুষের অন্তরে “জীবিত” রয়েছে। মানুষ চলে যায় কিন্তু তার কাজ ঠিকই থেকে যায়। জীবনের প্রকৃত অর্থ ” জীবিত” শব্দের মধ্যেই লুকায়িত রয়েছে। আমারা কী কখনো ভেবে দেখেছি?? “জী” তে জানা, “বি” তে বিশ্বাস, আর “ত” তে ত‍্যাগ। অর্থাৎ জীবন সম্পর্ক আগে জানতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে যে এই পৃথিবী তোমাকে ত‍্যাগ না করলেও তুমি এই পৃথিবীর মায়া ত‍্যাগ করে চলে যাবে।

তোমার আশেপাশে কত মানুষ দেখো অনাহারে, অর্ধহারে দিন কাটাচ্ছে, অর্থাভাবে রোগে -শোকে ধুক ধুকে মরছে, রাস্তার পাশে দেখ কত অসহায় মানুষ বাসস্থানের অভাবে কুকুরের সাথে ঘুমাচ্ছে। চোখে সবই দেখি কিন্তু আমলে নিই না,সবই বুঝি কিন্তু তাদেরকে নিয়ে চিন্তা করিনা। আমি সুন্দরী স্ত্রী, সুন্দর গাড়ি, দামী বাড়ি, অর্থ- ঐশ্বর্যের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রেখে মানুষের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হয় না।

মানুষ এখন নিজের আত্তার পুজারী হয়ে গেছে, নিজের স্বার্থ উদ্ধার তো দুনিয়া উদ্ধার এই নীতিতে মানুষ এখন তার জীবনকে অতিবাহিত করে। অপর একজন অসহায় মানুষ কিভাবে জীবন যাপন করে, কিভাবে তার মানবিক অধিকার লঙ্গিত হচ্ছে এ নিয়ে ভাবে না।

কিন্তু আমি তো এই পৃথিবীতে শুধু আত্নতৃপ্ত বা ভোগ বিলাস করতে আসে নি,আমি তো মানব কল‍্যাণে প্রেরিত হয়েছি। আসল কথা মানুষ তার স্বীয় পরিচয় ভুলে গেছে। মানুষ ভাবে না আমি কোথায় ছিলাম, কোথায় এলাম, যেখানে এলাম সেখানে আমার কাজ কী, আবার কোথায় আমাকে যেতে হবে। এই অনুভূতি বোধ যদি আমাদের কাজ করতো তাহলে আমার উল্লেখিত প্রবাদ বাক্যেই জীবনকে পরিচালনা করতাম” ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ”।

পৃথিবীর সকল মানুষের শুভ বুদ্ধি ও স্বহৃদয় জাগ্রত হোক এই প্রত‍্যাশা করি। মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে নৈতিক অবক্ষয় থেকে মুক্তি দিয়ে  মানুষের কল‍্যাণ বাস্তবায়নের ব‍্যবস্থা করে দিন, গরীব দুঃখী, অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর সুযোগ করে দিন এই কামনা করে শেষ করছি।

( ইদ্রিস আলী )

Related Posts

24 Comments

  1. We all believe that we are son of God.So we pray to Him for our success.He always suggests us to work hard and honestly.If one does accordingly he is sure to be successful.But it is a matter of sorrow that all does not get it.Some get hopeless and try to kill oneself.It is not the solution.Good fate is not only in the world he might be the ancestor in the afterworld life.so who is suffering here( world) he might be successful there(heaven).

মন্তব্য করুন