না জেনে আমরা প্রতিনিয়ত প্লাস্টিক খাচ্ছি

আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা।

কেমন আছেন আপনারা সবাই?

আশা করি সবাই ভাল আছেন।

আমার আজকের পোস্টটি হল একটি সতর্কতামুলক পোস্ট ।

আচ্ছা আমরা তো অনেকেই চা খেতে ভালোবাসি তাই না?

বেশিরভাগ মানুষই চা রান্না করে খায়। আর যারা আর যারা  আলসে প্রকৃতির বা চা বানাতে পারে না তারা কি ব্যাগের চা খেয়ে থাকেন ।টি ব্যাগের চা বানাতে খুবই সোজা ,শুধু গরম পানি নিবেন আর একটি বটি ব্যাগ  সেখানে দিয়ে দেবেন। এই টি ব্যাগ আমাদের কষ্টটা যদিও কমিয়ে দিচ্ছে , কিন্তু আমাদেরকে অনেক বড়  ক্ষতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

আপনারা হয়তো ভাবছেন
এই টি ব্যাগ আবার কি ক্ষতি করবে আমাদের ??

এটি কি ব্যাগের কারণেই হয়তো অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করছে । অথচ আমরা তা জানিও না।

টি ব্যাগের কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমে আমাদেরকে টি ব্যাগের  প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে।

তালাক কাস্টমারদের বুঝিয়েছে যে সামান্য গরম পানিতে টি ব্যাগ দিয়ে দিলেই হয়ে যাচ্ছে চা। এমন সহজ রেসিপি পেয়ে কেইবা না চাইবে এটি ব্যবহার করতে  ??

যারা ব্যস্ত থাকেন সবসময় তারাই বেশিরভাগ সময় এই টি ব্যাগ ব্যবহার করে চা পান করে থাকেন।

কিন্তু টি ব্যাগের আসল রহস্যটা জানতে পারলে আপনি কখনোই টি ব্যাগ দিয়ে চা পান করতে চাইবেন না।

টি ব্যাগের আসল সমস্যাটা হচ্ছে সেই ব্যাগটা।

যা আপাতদৃষ্টিতে কাগজের মনে হলেও সেটি আসলে কাগজের নয়। বেশিরভাগ কোম্পানি টি ব্যাগের সেই ব্যাগটাতে কাগজ ব্যবহার করে না বরং ব্যবহার করে পলিপ্রোফিলিন নামক একটি পদার্থ ।
এটি এক ধরনের প্লাস্টিক যা কিনা গঠনগতভাবে অনেক দুর্বল হয়ে থাকে।

টি ব্যাগের পদার্থটি গরম পানির সংস্পর্শে এলে বিলিয়ন বিলিয়ন ছোট ছোট প্লাস্টিক কনায় রূপান্তরিত হয়। যাকে বিজ্ঞানীরা  মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে থাকেন । এই মাইক্রো প্লাস্টিক চায়ের সাথে মিশে আমাদের শরীরের ভেতর প্রবেশ করে।

আমরা যখন টি ব্যাগ গরম পানিতে ডুবাই তখন আমরা দেখতে পাই ,কি সুন্দর করে চায়ের পাতা থেকে চায়ের নির্যাস  পানিতে মিশে চা তৈরি করছে।

কিন্তু আমরা যা দেখতে পাইনা তা হল , সেই বিলিয়ন বিলিয়ন মাইক্রো প্লাস্টিক । যা চায়ের সাথে মিশে আমাদের দেহে প্রবেশ করছে।

এই মাইক্রো প্লাস্টিক গলে যাবার মাধ্যমেই কিন্তু চা পাতা থেকে চায়ের লিকার বের হয়ে যাওয়ার রাস্তা উন্মুক্ত হয়ে যায়।

কানাডার মেকলিন ইউনিভার্সিটির এক সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে, একটি টি ব্যাগ থেকে গড়ে ১১১৬০ কোটি মাইক্রোপ্লাস্টিক নির্গত হয় ।

যারা জানেন না মাইক্রোপ্লাস্টিক কি , তাদের জ্ঞাতার্থে বলছি , মাইক্রোপ্লাস্টিক হলো সেই ধরনের প্লাস্টিক কনা যার আয়তন ৫ মিলিমিটার এর থেকে কম হয় ।
এগুলোকে দেখার জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন হয় ।

আমরা খালি চোখে দেখতে পাইনা বলে চা প্রস্তুতকারক  কোম্পানিগুলো এই সুযোগটা নিয়ে নিচ্ছে ।

এভাবেই আমরা প্রতিনিয়ত চায়ের সাথে নিজের অজান্তেই মাইক্রোপ্লাস্টিক খেয়ে নিচ্ছি ।

আপনারা হয়তো ভাবছেন , তাহলে এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী ?

উপায় হল টি-ব্যাগের চা খাওয়া বাদ দিন ।

যদি একান্তই খাওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে, আপনার টি ব্যাগে মাইক্রোপ্লাস্টিক আছে কি নেই সেটি পরীক্ষা করতে পারেন।

সেজন্য আপনার টি ব্যাগটি নিয়ে ছিঁড়ে ফেলুন।

যদি ছেড়ার সময় খুব সহজেই ছিড়ে যায়, তবে বুঝবেন সেটি কাগজের তৈরি, অর্থাৎ নিরাপদ।

আর যদি সহজে না ছিড়ে তাহলে বুঝবেন সেটিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক রয়েছে ।

কিন্তু আমার ব্যক্তিগতভাবে পরামর্শ হলো-আপনারা এসব জটিল বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে  টি ব্যাগ একেবারে বর্জন করে ফেলুন । দরকার হলে গরম পানিতে চা পাতা দিয়ে চা বানিয়ে ফেলুন এবং চা পাতা সহ চা খেয়ে ফেলুন তাহলে ও কোন সমস্যা নেই।

আজ এ পর্যন্তই। আশা করি আমার পোস্টটি পড়ে আপনারা একটু  হলেও উপকৃত হয়েছেন।

পরবর্তী পোস্টে নতুন কোন টপিক নিয়ে হাজির হবো ইনশাল্লাহ।

সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন।

আল্লাহ হাফেজ।।

Related Posts

11 Comments

মন্তব্য করুন