প্যারাসাইট -২০১৯ মুভি রিভিউ (অস্কার সিরিজ পর্ব -০২)

আসসালামুয়ালাইকুম আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজ কে অস্কার বিজয়ী সিনেমা সিরিজ রিভিউ এর দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হলাম। আজকে রিভিউ করবো অস্কার এর ইতিহাসে ঘটে যাওয়া বিরল একটি ঘটনা যেটা কাঁপিয়ে দিয়েছে পুরো বিশ্ব। কথা বলছি অস্কারে প্রথম নন ইংলিশ মুভি হিসাবে বেস্ট পিকচার বিজয়ী মুভি প্যারাসাইট নিয়ে। প্রথমে একটি কথা বলবো হলিউড আসলেই ট্যালেন্টের কদর করতে জানে। নাহলে প্যারাসাইট যেটি কিনা কোরিয়ান মুভি আর যেই কোরিয়ার সাথে আমেরিকার সাপে বেজিতে যুদ্ধ তারা অস্কার নিয়ে আসসে। তো চলুন শুরু করা যাক।

Name- Parasite (2019)
Gene- Black Comedy Thriller.
Directed by -Bong Joon Ho.
Country- South Korea.
Budget- 13.5 Billion (Korean Currency).
Box Office- 235.45 Million (USD).
Ratings- IMDb- 8.6/10
Rotten Tomatoes- 99% (Fresh).
Metacritic- 96%.

মুভি প্লট-
দক্ষিণ কোরিয়ার দরিদ্র কিম পরিবার, একটি সেমিবেসমেন্ট এপার্টমেন্টে বসবাস করে। সদস্য চার জন পরিবারের কর্তা কি-টাক তার স্ত্রী চুন-সুক এবং দুই সন্তান মেয়ে কি-জুন ও ছেলে কি-উ। তাদের পারিবারিক পেশা হলো পিজার প্যাকেট তৈরি করা। তাই দিয়ে তাদের সংসার চলে। একদিন কিম পরিবারের ছেলে কি-উ এর ধনী বন্ধু মিন-হিউক তাদের বাড়িতে একটি উপহার নিয়ে আসে। উপহারটি ছিল একটি স্কলার রক(পাথড়) ।

উপহারটি দেখে কিম পরিবার খুব খুশি হয়। কারণ এটি কোন সাধারণ পাথড় নয়। কোনিয়ানদের বিশ্বাস এ পাথড় পরিবারে সচ্ছলতা নিয়ে আসে। এক সময় কি-উ ও মিন-হিউক নিজেদের ভিতর গল্প করতে থাকে এবং মিন-হিউক জানায় যে সে বিদেশ চলে যাচ্ছে উচ্চ শিক্ষার জন্য। সে ধনী পার্ক পরিবারের একমাত্র মেয়ে ডে-হায় কে ইংলিশ।পড়াতো। এখন ডে-হায় এর একটি ইংলিশ টিউটর দরকার তার অবর্তমানে কি-উ যেন তার কাজটা করে।

কি-উ রাজি হয় এবং ডে-হায় এর বাড়িতে হাজির হয় ইন্টারভিউ দিতে। পার্ক পরিবার অনেক ধনী ও রুচি শী। তাদের বাড়ির সদস্য চার জন পার্ক দম্পতি মেয়ে ও ছেলে। এছাড়াও বাড়িতে একজন গর্ভানেস ও একজন ড্রায়ভার থাকে।

পার্ক দম্পতি মিথ্যেবাদী ও অসৎ লোক একটুও পছন্দ করেন না। বিশেষ করে মিসেস পার্ক। তিনি মনে করেন তার সন্তানদের আশে পাশে যদি ভালো মানুষ না থাকে তাহলে তার সন্তানের উপর খুব খারাপ প্রভাব পড়বে। এ বিষয়ে তারা খুব সচেতন। মিসেস পার্কের কি-উ কে তার প্রথম দেখায় খুব পছন্দ হয় এবং তাকে তার মেয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেন। কি-উ সারা বাড়ি ঘুরে দেখে।

হঠাৎ সে দেয়ালে কিছু হাতে আকা অদ্ভুত ছবি দেখতে পায়। কি-উ এর মাথায় একটি বুদ্ধি আসে সে বলে যে ছবি গুলো কে একেছে? মিসেস পার্ক উত্তরে বলেন তার ছেলে ডে-সং। কি-উ বলে যে ডে-সং এর ছবি দেখলে বোঝা যায় সে টুবেকিউছিস নামের একটি বিশেষ রোগে আক্রান্ত। যা একজন আর্ট থেরাপিস্ট ঠিক করতে পারেন। এ কথা শুনে মিসেস পার্ক ভয়ে পেয়ে জান এবং বলেন যে এর সমাধান কি?

কি-উ জানায় তার কাজিন জেসিকা ইউএসএ থেকে আর্ট নিয়ে পড়েছে। সে যদি চায় সে ডে-সং এর সমস্যা দূরকরতে পারবে। মিসেস কোন কথা না ভেবে জেসিকাকে নিয়ে আসতে বলেন। পরের দিন কি-উ তার বোন কি-জুং কে জেসিকা নাম বলে পার্ক বাড়িতে নিয়ে আসে। কি-জুং অরফে জেসিকা মিসেস পার্ক কে নিজের কথার জালে ফাসিয়ে তার ছেলে ডে-সং এর আর্ট হিসেবে কাজ শুরু করে। এরপর শুরু হয় দুইভাই বোনের খেল।

প্রথমে বাড়ির ড্রায়ভারের বদলে নিজের বাবাকে ও পড়ে গর্ভানেসের বদলে নিজের মাকে বাড়িতে ঢোকায়। তাহলে শেষে কি হবে কিম পরিবারের পরিণাম? পার্ক পরিবার কি জানতে পারবে তাদের সত্যটা? জানতে হলে দেখুন এই রেকর্ড ব্রেকিং মুভি প্যারসাইট। শেষে একটা কথা বলতেই হয় এই মুভিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ দিয়ে যে বেকারত্ব থাকলে মানুষ কি করতে পারে? আর মানুষকে অন্ধবিশ্বাসে শেষ পরিণতি কি। সমাজে ধনী গরিব এর অবস্থান সম্পূর্ণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। স্যালুট বং-জুন-হো।

আমি বলব ইতিহাস ভাঙা মুভি ও ইতিহাস গড়া মুভি। কান ফিল্ম ফেসিটিভ্যালে প্রথম কোনো কোরিয়ান মুভির পামদর জয়। প্রথম গোল্ডেন গ্লোব ও ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম হিসেবে অস্কার। এমন কি অস্কারের ৯২ বছরের ইতিহাস এই প্রথম কোন নন ইংলিশ মুভি হিসেবে বেস্ট পিকচার জয়। এই মুভি যে আরও কত কি করেছে সেটা সারা বিশ্ব অবাক চোখে দেখেছে। পরিশেষে সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য।

Related Posts

16 Comments

মন্তব্য করুন