বাবা – মা ভুল করলে সন্তানের যা করণীয়।

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন –

‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে (আল্লাহ) ছাড়া অন্য কারও ইবাদাত কর না এবং পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কোনো একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদের প্রতি ‘উহ’ শব্দটিও বল না এবং ধমক দিও না এবং তাদের সঙ্গে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা বল।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৩)

কোন মানুষই ভুলের উর্ধ্বে নয়। তাই মানুষ হিসাবে আমাদের বাবা মা – ও ভুলের উর্ধ্বে নয়। তাই তারা ভুল করতেই পারেন এবং এটাই স্বাভাবিক। তারা যদি কোনও রকম ভুল করেন, তবে অবশ্যই তাদের ভুল ধরিয়ে দিবো। তবে খেয়াল রাখতে হবে সেটা যেন প্রতিবাদের ভাষায় না হয়। বাবা মা তাদের সন্তানকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেন। তারা তাদের সন্তানকে দিয়ে সেই সকল স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে যেয়ে ভুল করতেই পারেন। একজন আদর্শ সন্তান হিসাবে আমাদের কখনই এমন ব্যবহার তাদের সাথে করা উচিত নয় যাতে তারা মনে কষ্ট পান।

আমরা তাদের ভুল গুলো এমন ভাবে ধরিয়ে দিব যাতে করে আমার ব্যবহার দেখে আমার জন্য তারা দোয়া করেন। একটি কথা মনে রাখতে হবে, আমি নিজেও এক সময় মা/ বাবা হবো। আমি কখনো সখনো কোন না কোন ভুল আমার সন্তানদের সাথে করে ফেলতেই পারি। সুতরাং নিজের কথা চিন্তা করে হলেও, পিতা – মাতার ভুলগুলোকে শুধরানোর জন্য প্রতিবাদী ভাষা ত্যাগ করে, বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে তাদের বোঝাতে হবে। অফিসের বস কোন বড় ধরনের ভুল করলেও যেমন তার সামনে যেয়ে নরম গলায় তাকে বোঝান, তার চেয়েও নরম গলায় আপনার মা – বাবাকে বোঝাতে হবে। এবং এভাবে তারা বুঝবেন ইন – শা – আল্লাহ। কারণ, অতীতে তারা আপনার আমার অনেক ভুলকে ভালবাসা হিসেবে গ্রহণ করে শুধরে দিয়েছেন। মানুষের মত মানুষ করে জ্ঞান অর্জনের সুযোগ করে দিয়েছেন, যার জন্য আমরা তাদের ভুলগুলো ধরতে পারছি।

প্রতিবাদের প্রশ্ন তো তখন আসে, যখন মানুষ অন্যায় ভাবে জোর করে কিছু করতে চায়। ভুলের ক্ষেত্রে প্রতিবাদ শব্দটি বোধ করি সঠিকভাবে যায় না। আর মা – বাবার ভুলের প্রতিবাদ, একদমই মানায় না। যে কেউ ভুল করতে পারে। এটা অন্যায় নয়।

তাই বলছি শুধু মা – বাবা নয়, যে কেউ ভুল করলে প্রাথমিকভাবে তাকে শুধরে দেওয়াই শ্রেয়। ভুল অন্যায়ে রুপান্তরিত হওয়ার আগেই আশা করি তারা সেই ভুল থেকে ফিরে আসবেন। কারণ তারা মা – বাবা। আর সন্তানের মঙ্গল চিন্তায় মা – বাবা পারেন না এমন কোন কাজ দুনিয়ায় নাই।

মা – বাবা, ভাই – বোন, পরিবার পরিজন নিয়ে সবাই ভাল থাকবেন, আল্লাহ্‌ হাফিজ।

Related Posts