মোবাইল ফোন /সেলুলার ফোনের নেওয়ার্কের ধারনা সেল সিগলাল এনকোডিং প্রকারভেদ এবং মোবাইল ফোনের অন্যন্যা সম্পর্কে জেনে নিন

মোবাইল যোগাযোগ

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের উতকর্ষের ফসল হচ্ছে মোবাইল যোগাযোগ বা মোবাইল কমিউকেশন ।

মোবাইল ফোন ঃ

মোবাইল শব্দটি উৎপত্তি মোভ থেকে । তাই মুভিং বা ভ্রমন অবস্থায় তারবিহীনভাবে যে ফোন ব্যবহার করা হয় তাকে মোবাইল ফোন বলা হয় । মোবাইল টেলিফোন হচ্ছে এক ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস যার সাহায্যে সেলুলার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ফুল ডপ্লেক্স বা দ্বি মুখী রেডিও টেলিযোগাযোগ করা হয় । মোবাইল টেলিফোঙ্কে অনেক সময় সেলুলার ফোন , সেলফোন , হ্যান্ডফোন, বা শুধুমাএ ফোন বলা হয় ।

মোবাইল ফোনের সুবিধা ঃ

  • পোর্টেবিলিটি বা মোবিলিটির সুবিধা মানে সহজে বহন করা সম্ভব ।
  • স্থান পরিবর্তন অবস্থায় নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ স্থাপন।
  • কল ডাইভার্ট , হোন্ড রাখা কিংবা বাতিল করা
  • একই সেটে একাধিক সিম ব্যবহার করা
  • ডেটা সংরক্ষন বা স্থানান্তর করা ।
  • স্টিল বা ভিডিও চিএ ধারন করা ।
  • ই-মেইল , ইন্টারনেট , ওয়েব ব্রাউজিং ব্যবহার ।
  • এসএমএস বা এমএমএস সার্ভিস আদান -প্রদান ।
  • অডিও ভিডিও কিংবা রেডিও টিভির ব্যবহার ।
  • টাচ স্কিন ও হাতে লেখা শনাক্ত করা ।
  • কল ট্র্যাকিং মানে ব্যবহারকারী বা ব্যবহারকারীর অবস্থান সনাক্ত করা ।
  • ব্ল-টুথ , ইনফ্রারেড , প্রকৃতি ওয়্যালেস সিস্টেমের ব্যবহার ।

সেলুলার ফোন /সেল ফোন ঃ

মোবাইল ফোন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বা সার্ভিস প্রোভাইডার যেমন বাংলাদেশের টেলিটক , গ্রামীণফোন , বাংলালিংক , রবি, এয়ারটেল , সিটিসেল ইত্যাদি । তার নেটওয়ার্কের আওতাধিক এলাকাকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নেয় । ছোট ছোট প্রতিটি ভাগকে এক একটি সেল বলা হয় । এই সেল থেকে সেলুলার ফোন নামকরন করা হয়েছে । একটি এন্টেনা এবং একটি ছোট অফিস নিয়ে একটি সেল গঠিত হয় । এন্টেনাসহ ছোট অফিসকে বলা হয় বেস স্টেশন । একটি বেস স্টেশন দ্বারা একটি ছোট এরিয়ার বা সেল নেটওয়ার্ক কাভারেজ দেওয়া হয় ।

সেলুলার নেটওয়ার্কের ধারনা

মোবাইল সেবা প্রদানকারী তার অওতাধীন এলাকাকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে । প্রতিটি ভাগ কে একটি সেল বলে । এতে একটি এন্টেনা ও ছোট নিয়ন্তণ কেন্দ্র থাকে , যাকে বেস স্টেশন বলে । প্রতিটি বেস স্টেশনকে নিয়ন্তন করা হয় মোবাইল সুইচিং সেন্টার দ্বারা , যেখানে কল সংযোগ , কল ইনফরমেশন রেকডিং , বিলিং সিস্টেম ইত্যাদি কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে নিয়ন্তিত হয় ।

সেলের আকার সাধারনত ১ মাইল হতে ১২ মাইল পর্যন্ত , যা নির্ভর করে জনসংখ্যার ঘনত্বের উপর ।সেল দেখতে সাধারনত ষড়ভূজাকার হয় । তবে বর্গাকার , বত্তাকার বা অনিয়মিত আকারে ও হতে পারে । সেলুলার নেটওয়ার্কে রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি ব্যবহার করা হয় । প্রত্যেক সেলের জন্য বিভিন্ন ফ্রিকুয়েন্সি বরাদ্দ থাকে ।যার সমতুল্য রেডিও বেস স্টেশন থাকে । একটি ফ্রিকুয়েন্সি শ্রেনী একটি সেল এমন ভাবে ব্যবহারিত হয় । যেন পাশাপাশি সেল কখনো একই ফ্রিকুয়েন্সি না থাকে । মোবাইল ফোন এর মধ্যমে একাধিক বেস স্টেশন সংযুক্ত থেকে যে কোন স্থানে যে কোন দুরত্বে ব্যবহার করা হয় । যোগাযোগকালীন অবস্থায় গ্রাহক বা প্রাপক যে কোন ব্যবহারকারী অহথা উভয়ই কল মানে কল অবিচ্ছিন্ন রেখে এক বা একাধিক বেস স্টেশন পরিবর্তন করতে পারে । মোবাইল ফোন হতে পাবলিক টেলিফোণ নেটওয়ার্কে অথবা মোবাইল ফোনে কল গ্রহন বা প্রেরণ করা যায় ।

সেল সিগনাল এনকোডিং ঃ

এনকোডিং  পদ্ধতিতে বিভিন্ন ট্রান্সমিটার থেকে প্রেরিত সিগনালসমূহ পৃথক করার প্রক্রিয়াকে সেল সিগনাল এনকোডিং বলে । মোবাইল টেলিফোনের মূলত ৩ ধরনের সেল সিগনাল এনকোডিং করা হয়  , যথা ঃ

  • এফডিএমএ  ঃ এর প্রতি সেলে ব্যবহারিত ট্রান্সমিটিং এবং রিসিবিং ফ্রিকুয়েন্সি প্রতিবেশি প্রত্যেক সেলে ব্যবহারিত ফ্রিক্কুয়েন্সি থেকে আলাদা ।
  • টিডিএমএঃ এতে প্রতি সেলে ফ্রিকুয়েন্সি সমূহকে কয়েকটি টাইম স্নটে ভাগ করা হয় ।
  • সিডিএমএঃ এতে প্রতি সেলে ফ্রিকুয়েন্সি সমূহকে ব্যবহারকারীর মধ্যে কতগুলো একক কোডে ভাগ করা হয় ।

 

মোবাইল ফোনের জনক ঃ

যুক্তরাষ্টের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মটোরোলা কোম্পানীর সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন কুপার ১৯৭৩ সালে আধুনিক মোবাইল ফোন আবিস্কার করেন  । এজন্য তাকে মোবাইল ফোনের জনক বলা হয় । তার উদ্ভাবিত প্রথম মোবাইল ফোনটি ছিল প্রায় ২ কেজি ওজনের ।

মোবাইল বা সেলুলার ফোন সেটের প্রকারভেদ

মোবাইল ফোনের গঠনগত দিক , বহুমুখী ব্যবহার ও দামের ওপর ভিত্তি করে মোবাইল /সেলুলার ফোন সেটকে কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছে ।যথা –

  • বেসিক ফোন
  • ক্যামরা ফোন
  • মিউজিক ফোন
  • ভিডিও ফোন
  • স্মার্ট ফোন
  • পিডিএ ফোন  ইত্যাদি

মোবাইল ইউনিট বা মোবাইল/সেলুলার সেট ঃ মোবাইল /সেলুলার টেলিফোন ইউনিটে মূল তিনটি অংশ থাকে ।

  • একটি কন্ট্রোল ইউনিট
  • একটি ইনপুট ট্রান্সিভার
  • একটি এন্টেনা সিস্টেম

এই তিনটি মূল অংশ ছাড়া ও মোবাইল ফোনের আরো ও উপাদানগুলো হলো – একটি ব্যাটারি যা ফোনের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা  করতে প্রয়োজনীতা শক্তি প্রদান করে । একটি এনপুট মেকানিজম অথবা টাচ স্ক্রিন । জিএসএম মোবাইল ফোনের জন্য একটি সিম কার্ড এবং সিডিএমএ মোবাইল ফোনের জন্য আর ইউআইএ কার্ড থাকে ।

 

Related Posts