যমজ সন্তান গর্ভে থাকলে কি সমস্যা হতে পারে এবং করণীয় কি কি

আসসালামুয়ালাইকুম, যমজ সন্তানের মাকে প্রথমেই অভিনন্দন। দুটো সন্তান গর্ভে ধারণ করা তুলনামূলক কষ্টদায়ক হলেও একই সাথে এটি উত্তেজনাকর ব্যাপারও বটে। হালকা কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সাধারণ গর্ভবতীর মতাে আপনি জীবন-যাপন করতে পারেন।

💚যমজ সন্তান হওয়ার লক্ষণ💚
সাধারণ গর্ভবতীর থেকে আপনার বমিভাব বেশি হতে পারে। কারণ হরমােনের উৎপাদন এসময় প্রায়
দ্বিগুণ হয়। প্রথম ত্রৈমাসিকেই আপনার ওজন দ্রুত বেড়ে যাবে। দুটো সন্তানের কারনে পেটের সাইজও তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে। আপনার স্তনের স্পর্শকাতরতা তুলনামূলক বেশি হবে।

😳যমজ গর্ভধারণের ঝুঁকিসমূহ😳
সময়ের আগেই সন্তান প্রসব হওয়া যমজ গর্ভধারণের সবচেয়ে কমন ঝুঁকি। সাধারণত গর্ভকাল ৪০ সপ্তাহের ধরা হয়ে থাকে। যমজ সন্তান থাকলে, ৩৬ সপ্তাহ বা এর আগেই সন্তান প্রসব হয়ে যেতে পারে। তাই আগে প্রস্তুত থাকুন। কম ওজনের সন্তান জন্ম। একটি বাচ্চা গর্ভে
পরিপূর্ণ পুষ্টি পেয়ে থাকে। এক্ষেত্রে দুটো বাচ্চার পুষ্টির কিছু না কিছু ঘাটতি দেখা দেওয়াই স্বাভাবিক।

💪যমজ বাচ্চার গর্ভবতীর ওজন বৃদ্ধি💪
যমজ বাচ্চার গর্ভবতীর ওজনও যে বেশি বাড়তে হবে এটা স্বাভাবিকভাবেই আন্দাজ করতে পারা যায়। তবে ওজন কতটা বৃদ্ধি। পাওয়া উচিত, সেটা নির্ভর করছে আপনার উচ্চতা ও আগের ওজন কত ছিলাে তার উপর। যদি আপনি স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের হয়ে থাকেন,
তাহলে কমপক্ষে ১৬ কেজি বা তার বেশি ওজন বাড়া উচিত। মােটা স্বাস্থ্য হলে ১৪ কেজির বেশি।

👬যমজ সন্তান থাকলে মায়ের করণীয়👬
যমজ গর্ভবতী নারীদের যেহেতু ওজন বেশি বাড়ানাে দরকার, সেহেতু শরীর এসময়ে ক্যালরির চাহিদাও দ্বিগুণ হয়ে থাকে। সাধারণ গর্ভবতীর দৈনিক অতিরিক্ত ৩০০ ক্যালরি দরকার। যমজের ক্ষেত্রে এর পরিমান ৬০০ হয়ে যায়। আপনার নিজের শরীরে জন্য ১৪০০ ক্যালরি ও বাচ্চাদের জন্য ৬০০ ক্যলারি মােট ২০০০ ক্যালরি
দৈনিক প্রয়ােজন।প্রচুর পরিমানে শাকসবজি ফলমূল খেতে হবে। আপনার প্রতিদিনের খাবারে, যেকোনাে ধরনের শাক-সবজি রাখুন। ২-৩ ধরনের ফল দৈনিক খেতে হবে। প্রােটিন এসময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিন ২ টা সিদ্ধ ডিম, দৈনিক ২৫০-৫০০গ্রাম দুধ।পান করুন। সপ্তাহে ৩-৪ দিন মাংস, বাকীদিন-
গুলােতে মাছ রাখতে হবে। দুধের পাশাপাশি দুই
খেলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর হবে।দৈনিক ৩ বার প্রধান খাবার সময়মতাে খেতে হবে। মূল খাবারের মধ্যবর্তী সময়ে আপনার ক্ষুধা লাগতে পারে। তাই এসময়ে হাতের কাছে শুকনাে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখুন। দৈনিক একমুঠো পরিমান যেকোনাে বাদাম খেতে পারেন, এতে বাচ্চাদের ওজন বাড়বে। সাথে সিদ্ধ মিষ্টি আলুও খেতে পারেন। বাইরের ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, চিপস, জুস, নানা শুকনাে খাবার খেতে সুস্বাদু৷ তবে এগুলাে আপনাকে স্বাস্থ্যকর ঘরােয়া খাবারের প্রতি অনিহা তৈরী করবে। তাই ঐ খাবারগুলাে থেকে বিরত থাকুন।আপনার শরীর, সাথে বাচ্চাদের জন্য প্রচুর পরিমানে পানিরদরকার। আপনি যেন কখনাে তৃষার্ত না হােন, খেয়াল করুন। দৈনিক ৩ লিটার পরিমান পানি পান করতেই হবে। কোনােকাজে বাইরে গেলে সাথে পানিভর্তি বােতলনিয়ে যেতে ভুলবেন না। আর ফুটানাে পানিই সবচেয়ে নিরাপদ হিসেবে গণ্য করা হয়।পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে ভুলবেন না। রাতে ৮ ঘন্টা, দিনে ২ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। বাকী সময়ে হালকা ঘরের কাজ করুন। হাটাহাটি করুন। নিয়মিত হাটলে গর্ভের। বাচ্চার পজিশন ঠিক থাকে। এমন কোনাে কাজ করবেন না যাতে আপনি ক্লান্তবােধ করেন। এসময়ে। আপনি সহবাস করতে পারবেন কিনা ডাক্তারকে
জিজ্ঞেস করুন, তিনি আপনাকে চেকাপ করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
আমাদের থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ.

Related Posts