শোকজের জবাব লেখার নমুনা ও নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আনেক ভালো আছি। আজকের পোস্টে শোকজের জবাব লেখার নমুনা ও নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বলতে যাচ্ছি। তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।

শোকাজ কি?

শোকাজ (Show Cause) এর বাংলা অর্থ হলো কারণ দর্শানো। বিভিন্ন কারণেই শোকাজ করা হয়। যেমনঃ কোনো অপরাধ করলে, কাজে না গেলে, কাজে ফাঁকি দিলে, অর্থ আত্মসাৎ করলে, দুর্নীতি করলে ইত্যাদি। শোকাজ বা কারণ দর্শানোতে লেখা থাকে আপনার অপরাধ কি বা কেন কোনো কাজ করেননি। প্রশাসনিক কাজ ও অফিস-আদালতে শোকাজের গুরুত্ব রয়েছে।
একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনাকে ওই শোকাজ বা কারণ দর্শানোর জবাব বা উত্তর দিতে হবে তা না করলে আপনার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিম্নে আমি কারণ দর্শানো বা শোকাজের একটি নমুনা ও তার জবাব বা রিপ্লাইয়ের একটি নমুনা দিচ্ছি।

শোকজের জবাব লেখার নমুনা ও নিয়ম

ধরুন আপনার নাম রহিম ও আপনি ” ক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি” তে একজন সহকারী ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করেন। আপনি কোনো কারণ দেখিয়েই বা অনুমতি না নিয়েই একটানা তিন দিন অফিসে যাননি। এমতাবস্থায় “ক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি” এর পরিচালক জনাব খাইরুল আপনাকে শোকাজ করল।

প্রেরকঃ খাইরুল, পরিচালক, ক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি

প্রাপকঃ রহিম, সহকারী ম্যানেজার, ক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি

বিষয়ঃ বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে না আসার কারণ দর্শানো প্রসঙ্গে।

এতদ্বারা আপনার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছ যে, আপনি বিগত ১০/০৭/২০২২ থেকে ১৫/০৭/২০২২ ইং তারিখের মধ্যে ৩ দিন অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। এক্ষেত্রে আপনি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতিও নেননি যা চাকরি বিধির পরিপন্থী। এমতাবস্থায় আপনার বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে না। উক্ত নোটিশ পাওয়ার ৫ কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পরিচালক (খাইরুল)

এখন শোকাজ বা কারণ দর্শানোর নোটশের উত্তরে বা জবাবে কি বলবেন তার একটি নমুমা দেওয়া হলো।

জবাব লেখার ক্ষেত্রে আপনার কারণ স্পষ্টভাবে দেখাবেন। কি চান বা কি সমস্যা তা সরাসরি বলবেন।

শোকাজ বা কারণ দর্শানোর জবাবের নমুনাঃ

১৭/০৭/২০২২

মাননীয় পরিচালক

ক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি

জনাব,

যথা বিহীত সম্মানপূর্বক কর্তৃপক্ষের অবগতির জন্য আমি এই মর্মে প্রত্যয়ন করছি যে গত গত ১০/০৭/২০২২ থেকে ১৩/০৭/২০২২ ইং তারিখ পর্যন্ত আমি অনুপস্থিত ছিলাম। অফিসে রওয়ানা হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই গ্রামের বাড়ি থেকে খবর আসে যে আম্মা খুবই অসুস্থ। সেসময় তাড়াতাড়ি বাড়ি যাই। বাড়ি যাওয়ার পর ১১/০৭/২০২২ ইং তারিখে আম্মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এবং ১২/০৭/২০২২ ইং তারিখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় এবং সেদিন রাত্রে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী দিন শুক্রবার ছিল তার জানাযার ব্যবস্থা করা হয়। তারপরের কার্যদিবস অর্থাৎ রবিবার আমি অফিসে যাওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। আর উক্ত সময়ের মধ্যে আমি এতোটাই ব্যস্থ ছিলাম যে কাউকে জানাতে পারিনি। পরিশেষে আমার উক্ত সময়ের খারাপ অবস্থা ও মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে আমাকে ক্ষমা করবেন ও আগামী কার্যদিবস থেকে অফিসে যোগদান করার অনুমতে দিয়ে বাধিত থাকিবেন।

নিবেদক

রহিম
সহকারী ম্যানেজার

তো আজকের জন্য এতটুকুই। পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts