দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত,দৈনন্দিন জীবনে বর্তমান সময়ে আমরা সবাই প্রযুক্তির সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। একটা সময় ছিল যখন দিনের শুরুতে প্রতিটি ঘরে ধর্মীয় পাঠ কিংবা খবরের কাগজ পড়ে শুরু হতো। আর এখন ঘুম ভাঙে সকালবেলা মোরগের ডাকে নয় আইফোনের এলার্মের শব্দে।সবই প্রযুক্তির অবদান,হালের কম্পিউটার ,ল্যাপটপ, মোবাইল , আইপ্যাড সবকিছুই প্রযুক্তির বদৌলত। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইমেইল ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও এর বাইরে নয়। কিন্তু সব বিষয় এরই কিছু ভালো এবং খারাপ উভয় দিক থাকে। বর্তমান যুগে প্রযুক্তির অপব্যবহার যেন সমাজের জন্য এক কালো থাবা।
আমরা প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ,মেসেঞ্জার , টুইটার ইত্যাদি ব্যবহার করি।সেই সূত্র ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপরাধ জগত সাইবার বুলিং এর সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত।সাইবার বুলিং মানে হচ্ছে ,মোবাইল বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ,অনলাইনে কাউকে উত্যক্ত করা ,কারো নিজস্ব ব্যক্তিগত অনুমতি ছাড়া তাঁর ছবি পোস্ট করা এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করা।অনলাইনে কেউ যদি খারাপ কথা বলে অপমান করে অশ্লীল ছবি বা ভিডিও শেয়ার করে বা এমন কিছু করে যে ব্যক্তিকে মানসিকভাবে আঘাত করে তাহলে বুঝতে হবে এটা সাইবার বুলিং। এই সাইবার বুলিং এর শিকার হন সবচেয়ে বেশি অল্প বয়সী ,শিশু কিশোর এবং নারীরা। একটি জরিপে দেখা যায় বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীর মধ্যে প্রায় ৪৯% সাইবার বুলিং এর শিকার এবং আরো অবাক করা বিষয় হচ্ছে এর তিন-চতুর্থাংশ হলো নারী।এর মধ্যে দেখা যায়, ২৬ শতাংশ মানুষ সাইবার বুলিং এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন আর বাকি সব নিশ্চুপ থাকেন।
প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে অপরাধীরা শিশু-কিশোর এবং নারীদের প্রতি নানা ধরনের বুলিং করে থাকে।যেমন:
১. কারণ অনুমতি ব্যতিত তার ব্যক্তিগত এবং আপত্তিকর ছবি পোস্ট করা।
২. ফেসবুকে কারো পোস্টে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা।
৩. মেসেঞ্জারে অশ্লীল কথাবার্তা বলা এবং মেসেজ প্রদান।
৪. কোন ব্যক্তির একাউন্ট হ্যাক করা
৫. বাজে অথবা অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা।
অপরাধীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাইবার বুলিং করে খুব সহজেই পার পেয়ে যায় কিন্তু এর শিকার হওয়া নিরীহ শিশু কিশোর কিংবা নারী শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে পুরোপুরি।
সাধারণত শিশু-কিশোররা বুলিং এর শিকার হওয়ার পর কারো সাথে তার মনের কথা খুলে বলেনা। বুলিং এর শিকার হওয়া শিশু বা নারী পুরুষ দুশ্চিন্তায় পড়ে অনিদ্রা এবং নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হন, সবসময় রাগান্বিত মনোভাব ,বিশেষ করে শিশুদের পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যেতে দেখা যায়।
তাই সাইবার বুলিং নামক অপরাধের কালো থাবা থেকে মুক্তি পেতে সচেতন হতে হবে । সাইবার বুলিং এর ক্ষেত্রে কিভাবে অনলাইনে যেকোনো ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিরাপদ থাকা যায়, বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের এ বিষয়ে সব সময় লক্ষ্য রাখতে হবে। ব্যক্তিগত বিভিন্ন ধরনের ছবি ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহারের পূর্বে অ্যাকাউন্ট প্রাইভেসি ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হবে। অপরিচিত মানুষের সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব করা থেকে দূরে থাকতে হবে। এছাড়া সাইবার বুলিং এর শিকার হলে ভয় না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরী(জিডি)করতে হবে কিংবা জরুরী ভিত্তিতে ৯৯৯ এ যোগাযোগ করতে হবে অথবা মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় এর হট লাইন নাম্বার ১০৯২১ এ যোগাযোগ করে সাইবার বুলিং এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
আমাদের চাই , প্রতিটি শিশু কিশোর এবং নারী পুরুষ প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার করুক এবং সাইবার বুলিং এর কালো থাবা থেকে দূরে থাকুক সবসময়।
সাইবার বুলিং: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরাধের এক কালো থাবা
📢 Promoted post: বাংলায় আর্টিকেল লেখালেখি করে ইনকাম করতে চান?
ওকে
Thik bolechen
খুবই খারাপ কথা।
Oh
Very nice.
Okay
Well Bro
Ok
good
Thanks