আসসালামু আলাইকুম ,কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করি ভালো আছেন।
আজ আপনাদেরকে পাহাড়পুর নামক গ্রামে অবস্থিত সোমপুর বিহারের কিছু তথ্য ও নিদর্শন সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি।
আশা করি পুরোটা পড়বেন।
বাংলাদেশের উত্তরে নওগাঁ জেলার ‘পাহাড়পুর’নামক গ্রামে অবস্থিত পাহাড়পুর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। নওগাঁ প্রধানত সমতল ভূমি যার মাঝখানে জঙ্গলে ঘেরা একটা পাহাড় রয়েছে।যখন জঙ্গলটি পরিষ্কার এবং পাহাড়টি খনন করা হয় সেখানে একটা প্রাচীন মন্দিরের বিশাল ধ্বংসাবশেষ প্রকাশ পায়।
মন্দিরটি সমতল অবস্থান থেকে 24 মিটার উঁচু।
ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপকারী স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে এই জায়গায় ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি একটা বিশাল খনন কাজ চালিয়ে যেতে ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন কিন্তু তা ভূমি মালিক প্রতিরোধ করেছিলেন। তার সত্বেও তাকে যে খনন কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছিল তা নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন। প্রাচীন পুরাকীর্তি রক্ষা আইন ১৯০৪ এর অধীনে ১৯১৯ সালে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর স্থানটির রক্ষা করা হবে বলে ঘোষণা করেছিল।
ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বরেন্দ্র রিসার্চ সোসাইটি এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২৩ সালে পদ্ধতিগত ও নিয়মিতভাবে খননকাজ শুরু করেছিল।
তারপর ১৯২৫-২৬ সালে আর ডি ব্যানার্জি খনন করেছিলেন মুল টিলাটির উত্তর অংশ।
স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই নিদর্শন টিঁকে আরো খননের অধীনে নিয়ে এসেছিল। এই কাজ দু ধাপে সংগঠিত হয়েছিল।
প্রথম ধাপ শুরু হয়েছিল ১৯৮১-৮২ সালে এবং তা ১৯৮৪-৮৫ সাল পর্যন্ত চলেছিল। দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়েছিল ১৯৮৮-৮৯ সালে এবং চলেছিল ১৯৯০-৯১ পর্যন্ত।
সোমপুর বিহারের কেন্দ্রীয় সমাধি-সৌধ যার বিশাল উচ্চতা ও অসাধারণ স্থাপত্য নকশা তাৎক্ষণিক দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
পাহাড়পুরের খননকৃত স্থাপত্যগুলোর দ্বিতীয় পাল রাজা ধর্মপাল (৭৮১-৮২১ খ্রিস্টপূর্ব) দ্বারা নির্মিত সোমপুর মহাবিহার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রাপ্ত কাদামাটির সিলমোহর নির্দেশনা বহন করে, শ্রী সোমপুর, শ্রী ধর্মপাল দেব, মহা বিহারী , ভিক্ষু সংঘ।
পাল শাসকগণ বুদ্ধধর্মের আন্তরিক ছিলেন এবং তাদের গড়ে ওঠা রাজ্যজুড়ে অনেকগুলো বিহার স্থাপন করেছিলেন।
এগুলোর মধ্যে কিছু জ্ঞান চর্চার বিশাল কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল এবং এগুলোর সুনাম খুব দ্রুত এশিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছিল।
শাসকগোষ্ঠীর সাথে সোমপুর মহাবিহার এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রমাণ করে যে এটি এর পৃষ্ঠপোষকদের রাজনৈতিক উত্থান পতনের অংশ ছিল।
আজ এ পর্যন্তই। আশা করি সকলের ভাল লেগেছে।
ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে মতামত জানাবেন।
ধন্যবাদ।
আল্লাহ হাফেজ।।