স্বাস্থ্য রক্ষায় শরীরচর্চা ও বিশ্রাম

আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা।
সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের পোস্ট শুরু করছি।
আমার আজকের টপিক হচ্ছে স্বাস্থ্য রক্ষায় শরীরচর্চা এবং বিশ্রাম।

আমরা সবাই সুস্থ থাকতে চাই।

কিন্তু সুস্থ থাকা এতটা সহজ বিষয় না।

সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই সবাইকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়।

তেমনি শরীরচর্চা এবং বিশ্রাম স্বাস্থ্যরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

শরীরগ মানুষের প্রথম পরিচয়।

তাই শরীরকে মানুষের জীবন সংগ্রামের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার বলা যেতে পারে।

 

এই হাতিয়ারকে ঠিক রাখার দায়িত্ব আমাদেরই। শরীর ঠিক রাখার জন্য চাই সুষম খাদ্যের পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা ও ব্যায়াম।
এর মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে মানুষের শারীরিক দৃঢ়তা।

একটা গাছের সব কিছু নির্ভর করে তার শিকড়ের উপর, ঠিক তেমনি মানুষের চলাফেরা চিন্তা ভাবনা ইত্যাদি সবকিছু নির্ভর করে তার স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্ষমতার ওপর ।

সুস্থ স্নায়ুতন্ত্র গড়তে হলে নিয়মিত অঙ্গচালনার সাহায্যে উপযুক্ত এবং পরিমিত শরীরচর্চার প্রয়োজন আছে।

আমরা সকলেই জানি ,স্নায়ুতন্ত্র শরীরের মাংসপেশি নিয়ন্ত্রণ করে।
তাই যদি নিয়মিত মাংসপেশির ব্যায়াম করি তাহলে সহজেই স্নায়ুতন্ত্রকে সতেজ এবং সক্রিয় করে তোলা যাবে।

এর ফলে স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ঘটবে।শুধু তাই নয় ,নিয়মিত শরীরচর্চার মধ্য দিয়ে যদি শরীরের বিভিন্ন দেহতন্ত্র বা জৈব তন্ত্রগুলোকে সক্রিয় করে তোলা যায়,তাহলে সেগুলোরও পর্যাপ্ত বিকাশ ঘটবে এবং যার ফলে আমাদের দৈনিক কাজ কর্ম সম্পাদন করার ক্ষমতা অনেকাংশে বেড়ে যাবে।

দৈনিক নিয়মিত কয়েক মিনিট শরীর চর্চার মধ্য দিয়েই শরীরের পরিপাক করার ক্ষমতা বাড়াতে পারব, রক্ত চলাচলের ক্ষমতা ভালো করতে পারব, পাচন ক্ষমতা ভালো হবে, শ্বাস-প্রশ্বাস ভালো হবে ,শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণও আরো সুষ্ঠু হবে।

এক কথায় বলা যায় ,এটা সুস্থ শরীরের অধিকারী হওয়া যাবে।
বয়স , দৈহিক গঠন, সাধারণ স্বাস্থ্য প্রভৃতি দিক বিবেচনা করে ব্যায়ামের অভ্যাস করা উচিত। ব্যায়াম যে শুধু নিরানন্দ পরিশ্রমের একটি বিষয় তা কিন্তু নয়।সব রকম খেলাধুলা একদিকে আনন্দের ব্যাপার, অন্যদিকে এগুলো শারীরিক ব্যায়াম ও বটে।

একজন মানুষ প্রতিদিন যদি ৮ থেকে ১০ হাজার পদক্ষেপ নেয়, তাহলে সে সুস্থ ও নীরোগ একটি দীর্ঘ জীবন আশা করতে পারে।

অত্যধিক পরিশ্রমের ফলে মানুষ যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং শরীরের পেশী গুলো অবশ হয়ে আসে, তখন সারা শরীরে কিছুক্ষণ নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রেখে আরাম করাকে আমরা বিশ্রাম বলি।

ঘুমই শ্রেষ্ঠ বিশ্রাম।দেহ ও মনকে সুস্থ ও সতেজ করার জন্য প্রত্যেক মানুষের কমপক্ষে দৈনিক ৬ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। বালক- বালিকাদের ৮/৯ ও শিশুদের ১০/১২ ঘন্টা করে ঘুমের প্রয়োজন। যারা রাতে কাজ করে, তাদের অবশ্যই দিনের বেলায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া উচিত।

মনের বিশ্রাম:
কেবল শরীরেরই নয় ,মনেরও বিশ্রাম নেয়া প্রয়োজন। মন থেকে সমস্ত রকম উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, অশান্তি একেবারে দূর করে দিয়ে দেহ-মনকে একান্তভাবে নিদ্রার কোলে সঁপে দিতে পারলে তবেই দেহ-মনের পক্ষে প্রকৃত বিশ্রাম হয়।

অনেক সময় দেখা যায় এক কাছ থেকে অন্য কাজে মনোনিবেশ করেও শরীর ও মনকে বিশ্রাম দেওয়া যায় । একে কর্মান্তরের মাধ্যমে বিশ্রাম বলা হয়।
বিখ্যাত লেখকদের মধ্যে অনেককে দেখা যায়, যারা ঘন্টার পর ঘন্টা ফাউনটেন পেন পরিষ্কার করে যাচ্ছেন। এতে তিনি কিন্তু আসলে তার কাজের মাধ্যমে বিশ্রাম গ্রহণ করেন।
অনেকে ছবি আঁকেন ,অনেকে বাগান পরিচর্যা, পশু-পাখি পালন কিংবা শৌখিন সবজি বাগান তৈরি করে বিশ্রাম গ্রহণ করেন। এ সমস্ত কাজকেই বলে কর্মান্তরের মাধ্যমে বিশ্রাম গ্রহণ।

বিশ্রাম গ্রহণ এবং শরীরচর্চা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তাই সকলের উচিত নিয়মিত শরীরচর্চা করা এবং পরিমিত পরিমাণে বিশ্রাম গ্রহণ করা।

শরীরচর্চা করলে অনেক দিক দিয়ে উপকার পাওয়া যায়।

আমি নিজের একটি অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলছি।

আমার ছোটবেলা থেকেই শারীরিক উচ্চতা কম। এজন্য আমি নিয়মিত শরীরচর্চা করাতে আমার উচ্চতা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা আমার জন্য খুবই উপকারী হয়েছে।
তাই সকলকে আমার ছোট্ট একটি পরামর্শ, সবাই নিজের সুস্থতার জন্য নিয়মিত শরীর চর্চা করবেন।
আর বর্তমানে করোনা মহামারীর কারণে সবাই ঘরেই আছেন। আশাকরি ঘরে থাকার সময় গুলো শরীর চর্চার মাধ্যমে আপনারা ভালোভাবে কাটাবেন।
সবাই ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন।
পরবর্তী পোস্টে দেখা হবে ইনশাল্লাহ।

আল্লাহ হাফেজ।।

 

Related Posts