হাঁচি কিংবা শ্বাসকষ্ট হলেই তা করোনা হয়

এখন জ্বর, হাঁচি, কাশি শ্বাসকষ্ট ও গলায় ব্যথা হলেই অনেকে মনে করছেন, এই বুঝি করোনা ভাইরাস আক্রান্ত করলো। এ কারণে একশ্রেণীর চিকিৎসক হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও গলায় ব্যথার রোগীদের সেবা প্রদান থেকে বিরত থাকছেন। অথচ আমরা অনেকেই জানি বর্তমান মৌসুমে ঘরে ঘরেই এ লক্ষণ দেখা যায়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন জ্বর, হাঁচি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হলেই তা করোনা নয়। তাই এসব রোগীদের সেবা না দেওয়া অমানবিক কাজ। সারা বিশ্বের প্রায় ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ হাঁপানিতে আক্রান্ত হন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৫০ হাজার লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়। তাই কেন তাদের সেবা দেওয়া হবে না?

আর এমন শ্বাসকষ্টজনিত অনেক রোগীকে সেবা না দিয়ে ফেরত দিয়েছেন একশ্রেণীর চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞরা বলেন করোনাভাইরাস মূলত ফুসফুসে আক্রমণ করে। সাধারণত জ্বরের সাথে শুকনো কাশি দিয়ে শুরু হয়। জ্বর ও কাশির এক সপ্তাহের মাথায় শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয়। এসব লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। জ্বরের চিকিৎসা না পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

বাবলু চৌধুরী নামে মৃত ওই ব্যক্তির বাড়ি বাগেরহাট মংলা উপজেলায়। বাবলু চৌধুরীর বড় বোন জাহানারা বেগম বলেন পাঁচ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল বাবলু। দুপুর একটার দিকে তাকে হাসপাতলের জরুরি বিভাগে আনা হয়। এসময় করোনা আক্রান্ত বলে তাকে বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসতে বলা হয়। বহির্বিভাগে গেলে করোনা বলে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।

সম্প্রতি সারা কাজমি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আমার অত্যন্ত কাছের বান্ধবী নুরুন নাহার নওশীনের বাবা (মঙ্গলবার) আজ সকালে ইন্তেকাল করেন। আঙ্কেলের নিউমোনিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে সব বেসরকারি হাসপাতাল তাকে ফিরিয়ে দেয়। কারণ তারা ধারণা করেছিল আঙ্কেল করোনা ইনফেক্টেড এবং তা পরীক্ষা করার মতো টেস্ট কিট কোন হাসপাতালে নেই। এ ধরনের রোগীর কাছে যাবার মতো যথেষ্ট প্রটেকশনও সরকারের কাছ থেকে তারা পায়নি এবং সরকার অনুমোদিত রোগীদের জন্য হাসপাতাল গুলো আইইডিসিআর এর টেস্ট রিপোর্ট ছাড়া ভর্তি করবে না বলে জানায়। অসহায়ের মত অ্যাম্বুলেন্সে করে রাস্তায় বসে থেকে বাসায় নিয়ে গেলে এর মধ্যে আঙ্কেলের শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়। আঙ্কেলের তখন আইসিইউ সাপোর্টের ইমিডিয়েট দরকার ছিল। নওশীনের বড় বোন ও দুলাভাই নিজেরা ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও কোন প্রকার সাহায্য পাননি। এর মাঝে আইইডিসিআর এর সাথে অসংখ্যবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। কারণ প্রবাসী বাংলাদেশীদের সংস্পর্শে আসেনি এমন কারো সেম্পল তারা টেস্ট করছিলো না। দেশের বাইরে থেকে যারা এসেছে তাদের টেস্ট করতেই তারা হিমশিম খাচ্ছে।

Related Posts

16 Comments

মন্তব্য করুন