৭ম শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর (৭ম সপ্তাহ-২০২১)

আসসালামু আলাইকুম,, সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভাল আছেন, সুস্থ আছেন। সেই কামনাই করি। বরাবরের মত আজকে আমি এই পোস্টে সপ্তম শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন আপনাদের সুবিধার্থে একটি নমুনা উত্তর লিখে দিব।
আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে। আর পোস্টটি ভাল লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। নমুনা উত্তরটি হুবুহু না লিখে ধারণা নিয়ে নিজ মেধা এবং সৃজনশীলতা দিয়ে লেখার অনুরোধ রইল। কারণ এই নমুনা উত্তরটি লিখে দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো যারা এ্যাসাইনমেন্ট ভালো করে লিখতে পারে না তারা যেনো এখান থেকে ধারণা নিয়ে নিজেরদের মতো লিখতে পারে।

অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ-

মনে করো তুমি সপ্তম শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থী নিয়মিত মসজিদে জামাতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করো। নিচে বর্ণিত অবস্থাগুলোতে কিভাবে সালাত আদায় করবে বর্ণনা দাও।

( যে কোন তিনটি বিষয়ের বর্ণনা লেখ)

১. কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে (স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে)

২. সালাতে এক বা দুই রাকাত মাসবুক হলে।

৩. মুসাফির অবস্থায় মাগরিব এশা ও ফজরের সালাত।

৪.অসুস্থ অবস্থায় সালাত (যখন তুমি দাড়াতে বা বসতে পারো না)

উত্তর-

১/কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সালাত আদায়-

বাংলাদেশের করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এ সারাদেশে করোনা আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় মসজিদে জামায়াতে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এর জরুরী বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে শর্তসাপেক্ষে মসজিদগুলোতে জামায়াতে নামাজের জন্য আবশ্যিকভাবে নিম্নে বর্ণিত শর্তসমূহ পালনের জন্য অনুরোধ করা হলো-

১.মাস্ক পরিধান করে সালাত আদায় করতে হবে।

২. প্রত্যেকে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে, সুন্নত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে হবে এবং মসজিদে প্রবেশের পূর্বমুহূর্তে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

৩.মসজিদে কমপক্ষে তিন ফিট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রয়োজনে এক কাতার ফাকা রেখে সালাত আদায় করতে হবে।

৪.ঘর থেকে জায়নামাজ নিয়ে সালাত আদায় করতে যেতে হবে।

৫.মসজিদের সংরক্ষিত টুপি ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না।
জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করব না

৬. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কারি বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করব

৭.মসজিদের গণজমায়েত থেকে বিরত থাকব।

৮. করোনাভাইরাস মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান আল্লাহতালার দরবারে দোয়া করবো।

উত্তর নং-২

সালাতে এক বা দু’রাকাত মাসবুক হলে-

জামাতে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি বা তার অধিক রাকাত ছুটে যায় তাকে মাসবুক বলা হয়। যদি আমি প্রথম রাকাতে রুকু তে শরিক হতে না পারি তবে ইমামের সঙ্গে বাকি নামায আদায় করে শেষ বৈঠকে শুধু তাশাহুদ পড়ে চুপ করে বসে থাকবো। এরপর ইমাম ডান দিকে সালাম ফিরানোর পর আমি ছুটে যাওয়া ডাকাত গুলো আদায় করে নিব।

উত্তর নং-৩

মুসাফির অবস্থায় মাগরিবের সালাত আদায় করব যেভাবে-

মুসাফির আরবি শব্দ।এর অর্থ হলো কমা,কমানো। ইসলামী শরীয়তে কোনো ব্যক্তি যদি ৪৮ মাইল বা (৭৮কিলোমিটার) বা তারও বেশি দূরত্বে ভ্রমণের বাড়ি থেকে বের হয় তাহলে তিনি মুসাফির। আর তিনি যদি সেখানে ৯৫ দিনের কম সময় থাকার নিয়ত করেন তবে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত আদায় করবেন।আল্লাহ তাআলা সংক্ষেপ করার মধ্যে বরকত রেখেছেন।

এ সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে-
‘তোমরা যখন জমিনে
সফর করবে, তখন তােমাদের জন্য নামাজের কসর করায়
কোনাে আপত্তি ৷(‘ -সূরা আন নিসা: ৯৩)

বাসস্থান থেকে ৭৮ কিলােমিটার দুরে অবস্থান কিংবা এরও
বেশি দুরত্নে যাওয়ার নিয়তে রওয়ানা হয়ে নিজ এলাকা, গ্রাম
বা শহর অতিক্রম করার পর থেকেই সফরের বিধান
আরােপিত হবে। এ সময় সফরকারীকে মুসাফির বলে গণ্য
করা হবে।
মুসাফিরের জন্য সফর অবস্থায় কোনাে মুকিম (স্থানীয়)
ইমামের পেছনে নামাজের নিয়ত না করলে তার জন্য চার
রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত পড়া জরুরি। এটাকে
কসরের নামাজ বলে। এটা ইসলামের নির্দেশ।
কিন্তু মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাজ পূর্ণ আদায় করতে
হবে। এগুলাের কসর নেই। তেমনিভাবে সুন্নত নামাজেরও
কসর হয় না। তাই আমি কখনো মুসাফির হলে সুন্নত পড়লে
পুরােই পড়ব। কারুণ বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী সফর অবস্থায়
মুন্নতে মােয়াক্কাদা নামাজগুলাে মুকিম অবস্থার ন্যায় আবশ্যক
থাকে না; বরং সাধারণ সুন্নতের হুকুমে হয়ে যায়।
পূর্ণ নামাজের স্থলে অর্ধেক পড়ার মধ্যে কারও কারও মনে
এরূপ ধারণা হতে পারে যে, নামাজ বােধয় পূর্ণ হলাে না এটা
ঠিক নয়। কারণ নির্দেশ। এ নির্দেশ পালনে
গােনাহ হয় না; বরং সওয়াব হয়। সুতরাং আমি মুসাফির হলে
চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত পড়ব৷

অসুস্থ হলে নামাজ পড়ব যেভাবে
নামাজ আল্লাহর ফরজ বিধান। প্রতিটি মুমিনের ওপর সর্বাবস্থায়
নামাজ আদায় আবশ্যক। কেউ
যদি অসুস্থ হয়, তাহলেও তাকে
নামাজ আদায় করতে হবে৷ তরে তখন নামাজ আদায়ের
ধরনের ভিন্নতা আমবে। কিন্তু তার উপর নামাজ রহিত হবে না।
শুধু তিন ব্যক্তির ওপর নামাজ সাময়িক বছিত হয়।

অপ্রাপ্তবয়স্ক, মানসিক ভারসাম্যহীন ও ঘুমন্ত ব্যক্তি।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদদ করেন, “দাড়িয়ে নামাজ পড়াে, যদি না
পারাে তবে বসে নামাজ পড়াে, যদি তা-ও না পারাে তবে
ইশারা করে নামাজ আদায় করাে। (বুখারি, হাদিস নং:১০৫০)

এ হাদিস থেকে সহজেই বুঝ আসে যে, অসুস্থ অবস্থায়ও নামাজ
ছেড়ে দেওয়া জায়েজ নেই। বরং নির্দিষ্ট নিয়মে বসে কিংবা
ইশারা ভঙ্গিতে নামাজ আদায় করতে হয়।
আমার ক্ষেত্রে এরূপল অবশই ঈশারায় নামাজ আদায়
করব। কিন্তু অন্য একুটি হাদীসে আমি পেয়েছি যে-

শুধুমাত্র মাথা দিয়ে ইশারা করলেও তা রুকু-সিজদার
স্থলভিষিক্ত বলে বিবেচিত হবে৷ ইশারা কেবল চোখ বা অন্তরে
করলে নামাজ শুদ্ধ হবে না।” (সুনানে কুবরা, হাদিস নং: ৭৯৯)
এ ক্ষেত্রে আমার শরীরের উপর নির্ভর করবো। উদ্দীপকের
আলােকে আমার যেহেতু আমি দাড়াতে ও বসতে পারিনা সেহুতু
আমি অবশ্যই ঈশারায় নামাজ আদায় করব।

ধন্যবাদ।

ভুল-ত্রুটি থাকলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

আর সকল শ্রেণির এ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন পেতে grathor.com সাইটি সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন।

Related Posts

2 Comments

মন্তব্য করুন