৮ম শ্রেণি সাধারণ বিজ্ঞান এসাইনমেন্ট ৫ম সপ্তাহ ২০২২

আসসালামু আলাইকুম সুপ্রিয় পাঠক এবং পাঠিকাগণ।কেমন আছেন আপনারা সবাই?আশা করি আপনারা সকলে যে যার অবস্থানে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।আপনারা নিজ নিজ অবস্থানে ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন সেই কামনাই ব্যক্ত করছি সব সময়।

এসাইনমেন্ট সিরিজ চলছেই। অনেক দিন পোস্ট করা হয় না বিধায় আজ আবার হাজির হলাম অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান এসাইনমেন্ট নিয়ে। তাই চলুন দেরি না করে শুরু করা যায় অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান এসাইনমেন্ট (৫ম সপ্তাহ)

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ আমার বেড়ে ঊঠা আচরণিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণ অনুসন্ধান।

ক.নিম্নে জীবদেহে বৃদ্ধির কারণ 

ক.জীবদেহ বৃদ্ধির কারণ নির্ধারণ কর। 

উত্তর; জীবদেহ বৃদ্ধির কারণ হল কোষ বিভাজন। জীবদেহে তিন ধরণের কোষ বিভাজন দেখা যায়। যথা-

  1. এমাইটোসিস। 
  2. মাইটোসিস। 
  3. মিয়োসিস 

জীবদেহ বৃদ্ধির জন্য মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজন হয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমে মাতৃকোষ বিভাজিত হয়ে সময়াকৃতির, সমগুণসম্পন্ন , সমসংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে। কারণ  অপত্য কোষ হুবুহু মাতৃকোষের মতো হয়ে থাকে। প্রাণীর দেহকোষে মাইটোসিস কোষ বিভাজন দেখা যায়। এছাড়াও উদ্ভিদের বধিষ্ণু অঞ্চলে ও পুষ্পমুকুলে এ বিভাজন দেখা যায়। এভাবে জীবদেহের বৃদ্ধিতে মাইটোসিস কোষ বিভাজন একটি কোষ থেকে দুটি ,দুটি থেকে চারটি এবং চারটি থেকে আটটি আকারে কোষ বৃদ্ধি পায়।

খ.জীবের বৃদ্ধির জন্য সংগঠিত ধাপগুলো ধারাবাহিকভাবে অঙ্কন এবং বর্ণনা উপস্থাপন।

 উত্তর :জীব বৃদ্ধির জন্য সংগঠিত ধাপগুলো নিচে বর্ণনা করা হল জীবের বৃদ্ধিতে সংগঠিত কোষ বিভাজন হল মাইটোসিস। মাইটোসি কোষ বিভাজনের ৫টি ধাপ নিচে বর্ণনা করা হল

  1. প্রোফেজ। 
  2. প্রো মেটাফেজ 
  3. ম্যাটাফেজ
  4. এনাফেজ
  5. টেলাফেজ

১. প্রোফেজ ধাপ –

 অবশ্যই বইয়ে উল্লেখিত চিত্রটি একে নিবে। বইয়ে দেওয়া চিত্রটি আকার পর বিবরণ লেখা শুরু করবে। 

  • i) এ ধাপে কোষের নিউক্লিয়াস আকারে বড় হয়।
  • ii) পানি বিভাজনের পর নিউক্লিয়াস জালিকা ভেঙে গিয়ে কতগুলো নির্দিষ্ট সংখ্যক আঁকাবাঁকা সুতার মতো সৃষ্টি হয়। এগুলোকে ক্রোমোজোম বলে। ৩.ক্রোমোজোমগুলো সেন্ট্রোমিয়ার ব্যতীত লম্বালম্বিভাবে বড় হয় বিভক্ত হয়ে দুটি ক্রোমোটিড সৃষ্টি করে। এগুলোকে সেন্ট্রোমিয়ার নামক একটি বিন্দুতে যুক্ত করে। 

২.প্রো মেটাফেজ ধাপ 

এ ধাপে নিউক্লিয়াস পর্দা এবং নিউক্লিওলাস বিলুপ্ত হয়ে যায়। ২.কোষের উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত কতগুলো তন্তুর আবির্ভাব ঘটে। এগুলো মাকুর আকৃতি ধারণ করে তাই এগুলোকে স্পিন্ডল বলে। স্পিন্ডল যন্ত্রের মধ্যভাগের অংশকে বিষুবীয় অঞ্চল বলে।

৩.মেটাফেজ ধাপ ;

  • এ ধাপে ক্রমোজোমগুলো বিষুবীয় অঞ্চলে এসে সেন্ট্রোমিয়ার সাথে তন্তু দিয়ে আটকে যায়। 
  • এ এ ধাপে ক্রোমোটিডগুলো খাটো ও মোটা দেখা যায়।

৪.এনাফেজ ধাপ

  •  এ ধাপে প্রতিটি ক্রোমোসোমের সেন্ট্রোমিয়ার দুভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ফলে প্রতীক ক্রোমোটিড একটি করে সেন্ট্রোমিয়ার থাকে। 
  • ক্রোমোটিডগুলো পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ অবস্থায় ক্রোমোটিডকে অপত্য ক্রোমোজোম বলে। 
  • এরপর ক্রোমোজোমের সাথে তন্তুগুলো সংকোচনের ফলে অপত্য ক্রোমোসোমের অর্ধেক উত্তর মেরুর দিকে এবং অর্ধেক দক্ষিণ মেরুর দিকে অগ্রসর হয়। এ অবস্থায় ক্রোমোসোমগুলো ইংরেজি বর্ণমানলা v ,l ,l ,z আকৃতির হয়ে থাকে।

 ৫.টেলোফেজ ধাপ

  •  এ ধাপে অপত্য ক্রোমোজোমগুলো বিপরীত মেরুতে এসে পৌঁছায়।
  • এরপর উভয় মেরুর ক্রোমোজোমগুলোকে ঘিরে নিউক্রিয়াস পর্দা এবং নিউক্লিওলাসের পুন আবির্ভাব ঘটে। প্রাণিকোষের উভয় মেরুতে একটি করে সেন্ট্রিয়াল গঠিত হয়। 
  • এ অবস্থায় ক্রোমোজোমগুলো সরু এবং লম্বা আকৃতির ধারণ করে পরস্পরের সাথে জোট পাকিয়ে নিউক্লিযার রেটিকুলাম গঠন করে। 

এভাবে কোষের দুই মেরুতে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস গঠিত হয় এবং ক্যারিওকাইনিসের সমাপ্তি ঘটে। এভাবে মূলত মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ৫ টি ধাপ সম্পন্ন করে। 

 গ.সমগুন সম্পন্ন দুটি অপত্য কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক থাকার কারণ বিশ্লেষণ কর।

উত্তর: মাইটোসিস কোষ বিভাজনের অপত্য কোষগুলোর ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের সমান হয়ে থাকে। বৃদ্ধি ও অযৌন জননের জন্য মাইটোসিস কোষ বিভাজন  অপরিহার্য। যৌন জননে পুং এবং স্ত্রী জনন কোষের মিলনের প্রয়োজন পরে। যদি জননকোষগুলোর ক্রোমোজোম সংখ্যা দেহকোষের সমান হয়ে থাকে তাহলে জাইগোট কোষে জীবটির ক্রোমোজোম দেহকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যাই দ্বিগুন হয়ে থাকে। মিয়োসিস কোষ বিভাজনে জনন কোষের সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়ে থাকে। ফলে ফুটি জননকোষ একত্রিত হয়ে যে জাইগোট গঠন করে তার ক্রোমোজোম সংখ্যা প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যার অনুরূপ থাকে। এতে নির্দিষ্ট প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যার দ্রুবতা বজায় থাকে। 

 ঘ.ক্রোমোজোমকে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলার কারণ উল্লেখ কর।

উত্তর; জীবের এক একটি বৈশিষ্টের জন্য একাধিক জীন কাজ করে,আবার কোন কোন ক্ষেত্রে একটিমাত্র জীন বেশ কয়েকটি বৈশিষ্টকে নিয়ন্ত্রণ করে। মানুষের চুলের রং,চোখের প্রকৃতি ,চামড়ার রং ইত্যাদি সবই জীন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। মানুষের মতো   অন্যান্য  প্রাণী ও উদ্ভিদের বৈশিষ্টগুলো তাদের ক্রোমোজোম অবস্থিত জীন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ক্রোমোজোম জিনকে এক বংশ থেকে পরবর্তী বংশে বহন করার জন্য বাহক হিসাবে কাজ করে বংশগতির ধারা অক্ষুন্ন রাখে। মিয়োসিস কোষ বিভাজন দ্বারা বংশগতির এ দ্বারা অক্ষুন্ন থাকে। মিয়োসিস কোষ বিভাজন দ্বারা বংশগতির এ দ্বারা অব্যাহত থাকে। ক্রোমোজোম বংশগতির ধারা অক্ষুন্ন রাখার জন্য কোষ বিভাজন সময় জিনকে সরাসরি মাতা পিতা থেকে বহন করে পরবর্তী বংশধরে নিয়ে যায়। এ কারণে ক্রোমোজোমকে বংশগতির ভিত্তি বলা হয়। 

ধন্যবাদ সবাইকে।সামনে নতুন কোন টপিক নিয়ে হাজির হব আপনাদের সামনে। মাস্ক পড়ুন, সুস্থ থাকুন।

Related Posts

10 Comments

মন্তব্য করুন