শৈশব কৈশোরের আমাদের অবসরের বেশ সুন্দর একটা সংগী ছিলো গল্পের বই!এমন অনেকেই আছেন পাঠ্য বই দশ মিনিট পড়ার ধৈর্য্য নাই কিন্তু যেকোনো গল্পের বই বা উপন্যাস পড়ে কাটিয়ে দিতে পারেন ঘন্টার পর ঘন্টা! আর টিনএজ সময় টার বেশিরভাগ ছেলে মেয়েই যে জনরার বই বেশি পছন্দ করতো তা হলো গোয়েন্দা বা ডিটেকটিভ গল্পের উপন্যাস! আজ আমি আলোচনা করবো আমার প্রিয় পাচটি গোয়েন্দা সিরিজ নিয়ে যেগুলো আমি এখনো সময় পেলেই পড়তে বসে যায়।
তিন গোয়েন্দাঃ আমার এই সিরিজ টা ব্যক্তিগত ভাবে কতটা প্রিয় বলে বোঝানো সম্ভব না। ছোট বেলায় এই সিরিজের বই কেনার জন্য চুরি পর্যন্ত করেছি।এখনো কোনো কারণে মন খারাপ থাকলে আমি তিন গোয়েন্দা নিয়ে বসে পড়ি এবং অদ্ভুত এক শান্তি পাই। প্রথম দিকে এই সিরিজের বই গুলো লিখেতেন রকিব হাসান এরপরে তিন গোয়েন্দার হাল ধরেন শামসুদ্দিন নওয়াব।এর মূল চরিত্র গুলো হচ্ছে কিশোর পাশা,রবিন মিল ফোর্ড, মুসা আমান।এছাড়া আরও উল্লেখযোগ্য চরিত্র হলো রাশেদ পাশা,জিনা,ওমর শরীফ।
মাসুদ রানাঃ নিঃসন্দেহে আমাদের দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র! সেবা প্রকাশনির স্বত্তাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেন এর মাধ্যমে সৃষ্টি এই তুমুল জনপ্রিয় চরিত্রটির। ১৯৬৬ সালে প্রথম গল্প “ধ্বংস পাহাড়” প্রকাশিত হওয়ার পরে থেকে এই সিরিজ টি প্রায় পাচ প্রজন্ম ধরে একচেটিয়া রাজত্ব করে চলেছে বলা যায়। ইতিমধ্যে প্রায় চার শতাধিক গল্প বের হয়েছে এই সিরিজের উপর। এই সিরিজের মূল চরিত্র মাসুদ রানার পাশাপাশি আরো কিছু উল্লেখযোগ্য চরিত্র হলো রাহাত খান,কবির চৌধুরী, সুলতা,সোহেল।
মিসির আলি : এই চরিত্র টা ঠিক তথাকথিত গোয়েন্দা চরিত্র না হলেও এই সিরিজের গল্প গুলোও বেশ প্রিয়!বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ এর অনবদ্য সৃষ্টি এই মিসির আলি চরিত্র টি।মানব মনের নানান মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা, রহস্য তিনি বেধ করেন যুক্তি দিয়ে! তিনি অত্যন্ত বাস্তববাদী মানুষ। তার মতে পৃথীবীর কোনো ঘটনায় যুক্তির বাইরে নই।
ফেলুদা : গোয়েন্দা গল্প পড়ে অথচ ফেলুদার নাম শুনেন নাই এমন মানুষ পাওয়া নিঃসন্দেহে অসম্ভব একটা ব্যাপার! দুই বাংলা তে সমান ভাবেই জনপ্রিয় একটি গোয়েন্দা চরিত্র এবং প্রথম বাংগালী জনপ্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র হিসেবেও ফেলুদা চলে আসবেন!এই চরিত্র এর স্রস্টা কিংবদন্তী সাহিত্যিক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়!ফেলুদা কে তিনি মোট ৩৫ টি উপন্যাস লিখেছেন এবং আরো কিছু অমিমাংসিত উপন্যাস লিখেছেন যেগুলো তিনি শেষ করে যেতে পারেন নি।
বোমক্যাশ বক্সী: আমার আরও একটি প্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র এবং উপন্যাস।শরদিন্দু বন্ধোপাধ্যায় এর সৃষ্ট এই চরিত্র টি ডিটেকটিভ বা গোয়েন্দার থেকে নিজেকে স্বত্যান্বেষী হিসেবে পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন।অন্য সব সিরিজের গোয়েন্দাদের আমরা অবিবাহিত দেখতে অভ্যস্ত হলেও বোমক্যাশ বক্সী কিন্তু বিবাহিত।এই দিক টা তাকে অন্য গোয়েন্দাদের থেকে কিছুটা আলাদা করেছে বলাই যায়।
আশা করি উপরোক্ত আমার প্রিয় পাচ গোয়েন্দাদের সংগে সবাই কম বেশি পরিচিত। এরপরেও কেউ যদি না চিনেন খুব দ্রুতই পরিচিত হয়ে যান তাদের রোমহষর্ক সব উপন্যাসগুলো পড়ার মাধ্যমে। আশা করছি আপনারা হতাশ হবেন না।