মাথাপিছু মোট জাতীয় আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যবিত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থাগুলি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা ঊর্ধ্বগতির হারে দেশের বার্ষিক রাজস্ব বৃদ্ধি করছে। বেসরকারী সংস্থাগুলি তাদের বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে দুর্দান্ত অবদান রাখছে।
১। বেক্সিমকো গ্রুপ
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান । এটি ১৯৭২ সালে সালমান এফ রহমান এবং তার ভাই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সংস্থায় বর্তমানে প্রায় ৫০,০০০ কর্মচারী রয়েছে।
এই গ্রুপ অফ কোম্পানির প্রধান ব্যবসা হ’ল সিরামিক, ফার্মাসিউটিক্যালস, টেক্সটাইল, পাট, ইনফরমেশন টেকনোলজি, এভিয়েশন, মিডিয়া, ফাইন্যান্স, রিয়েল এস্টেট, নির্মাণ ও জ্বালানি।
বেক্সিমকো গ্রুপ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের একটি অংশ, যার বাজার মূলধন প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সংস্থার ফার্মাসিউটিক্যাল বিভাগকে বেক্সিমকো ফার্মা বলা হয়, এটি লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত। এই গ্রুপের মালিক সালমান এফ রহমান এবং তার ভাইয়ের এবং কোম্পানির মিলিত অর্থ ও সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
২। এসিআই গ্রুপ
এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম কোম্পানিগুলির একটি। সংস্থাটি তিনটি বিভাগের মাধ্যমে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে। তিনটি বিভাগ হ’ল ফার্মাসিউটিক্যালস, কনসিউমার ব্র্যান্ডস এবং কৃষিশিল্প সংক্রান্ত ব্যবসা। পূর্ব পাকিস্তানের ইম্পেরিয়াল কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের (আইসিআই) অংশ হিসাবে ১৯৬৮ সালে এসিআই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। জনাব এম আনিস উদ দোউলা এসিআই এর প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমানে এই কোম্পানির প্রায় ৫,০০০ কর্মচারী রয়েছে।
৩. বসুন্ধরা গ্রুপ
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ আরেকটি গ্রুপ অফ কোম্পানিস হল বসুন্ধরা গ্রুপ। জনাব আহমেদ আকবর সোবাহান দ্বারা এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৭ সালে এটি একটি রিয়েল স্টেট কোম্পানি হিসেবে তাদের কার্যক্রম শুরু করে, যার নাম ছিল ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (ইডব্লিউপিডি)। ১৯৯০ দশকের দিকে তারা নতুন কিছু উদ্যোগ নেয়, যার মধ্যে রয়েছে সিমেন্ট, কাগজ, সজ্জা, টিস্যু পেপার এবং ইস্পাত উত্পাদন। বর্তমানে এর অধীনে প্রায় ১৫,০০০ কর্মচারী রয়েছে।
৪. স্কয়ার গ্রুপ
১৯৫৮ সালে, স্যামসন এইচ চৌধুরী এবং তার তিন বন্ধু স্কয়ার গ্রুপ একটি বেসরকারী সংস্থা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এটি ১৯৯১ সালে জনসাধারণের কাছে উন্মোচন করা হয়েছিল এবং বর্তমানে এটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত রয়েছে। ১৯৮৫ সাল থেকে এটি বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পে একটি শক্ত নেতৃত্বের অবস্থান বজায় রেখেছে। বর্তমানে এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স গ্রুপে রূপান্তরিত হচ্ছে।
৫. আবুল খায়ের গ্রুপ
আবুল খায়ের গ্রুপ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ কোম্পানি। এটি ১৯৫৩ সালে একটি তামাক বিপণন সংস্থা হিসাবে শুরু হয়েছিল। এই গ্রুপটির সদর দফতর বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে অবস্থিত হওয়ায় এর কার্যক্রমটি এখন বহু-ব্যবসায়ে রূপান্তরিত হয়েছে। ভোগ্যপণ্য, ইস্পাত, সিমেন্ট, সিরামিক, মার্বেল, শিপিং ও ট্রেডিং ব্যবসা বর্তমানে এই সংস্থার কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে।