ZTE Axon 30 Ultra Aerospace Edition বিশ্বের প্রথম ১ টেরাবাইট রম বিশিষ্ট স্মার্টফোন!

সম্প্রতি চীনে লঞ্চ হয়েছে ১৮ জিবি র্যাম ও ১ টেরাবাইট রম বিশিষ্ট একটি স্মার্টফোন যার নাম, ZTE Axon 30 Ultra Aerospace Edition. বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন হিসেবে ১ টেরাবাইট (1 tb) ইন্টারনাল স্টোরেজ ও ১৮ জিবি (18 gb) Ram নিয়ে ফোনটি লঞ্চ করেছে বিখ্যাত চীনা কম্পানি ZTE. এর পূর্বে কোনো ফোনে এত বিশাল স্টোরেজ ও ১৮ জিবি র্যামের কম্বিনেশন পাওয়া যায় নি। তাই ZTE Axon 30 Ultra 5G Aerospace Edition নিয়ে একপ্রকার হইচই পড়ে যায় টেক পাড়ায়!

ZTE কে?

ফোনের পরিচয় পর্বে যাওয়ার পূর্বে কোম্পানির পরিচয় নিয়ে কিছু কথা না বললে অন্যায় হয়ে যায় বোধয়! কেননা যে কম্পানি চীনের অন্যতম একটি বড় ব্র্যান্ড সেই ZTE কে আমরা অনেকেই চিনি না!
অবশ্য যাদের টেকনোলজি নিয়ে টুকটাক জানাশোনা আছে তাদের কথা ভিন্ন। তারা ZTE কে ভালো করেই চিনে।
ZTE চীনের অন্যতম একটি বড় ব্র্যান্ড। আমাদের পরিচিত Xiaomi, Huawei, Redmi এসব প্রতিষ্টানের একটা বড় প্রতিদ্বন্দী। কোম্পানিটি মূলতঃ টেলিকমিউনিকেশন ও নেটওয়ার্ক সেক্টর নিয়ে কাজ করে। তবে এটি স্মার্টফোন ও তৈরি করে। চীনের জনপ্রিয় পাঁচটি মোবাইল ব্র্যান্ডের একটি হলো ZTE. এটির হেডকোয়ার্টার চীনের Shenzhen, Guangdong তে।

আপনি কি কখনো কোনো স্মার্টফোনে১৮ জিবি র্যামের কথা চিন্তা করেছেন! সাথে ১ টেরাবাইট ইন্টারনাল স্টোরেজ! একটা সময় অকল্পনীয় এই চিন্তা বর্তমান প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের সামনে হাজির!
ZTE Axon 30 Ultra 5G মডেলের একটি স্পেশাল এডিশন হলো ZTE Axon 30 Ultra Aerospace Edition. এই ফোনের বেস নেম ZTE Axon 30 Ultra হলে ও এর কয়েকটি ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে। Aerospace Edition টি এজন্যই স্পেশাল যে, শুধুমাত্র এতেই 18 GB Ram ও 1TB Rom রয়েছে। সেই সাথে ফোনটির সব ভেরিয়েন্ট ৫জি প্রযুক্তি সমর্থন করে। অর্থাৎ এটি একটি ৫জি ফোন।
তো এবার বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক ফোনের অন্যান্য ফিচার গুলো।

ডিজাইন এন্ড লুকস

স্মার্টফোনের প্রথম যে জিনিস টি আমাদের নজর কাড়ে তা হলো ফোনের ডিজাইন। ZTE Axon 30 Ultra এই ফোনের ডিজাইন বেশ নজরকাড়া ছিলো। সামনে বড় ডিসপ্লের মাঝামাঝি একটি ছোট্ট ইন ডিসপ্লে ক্যামেরা। পেছনে ম্যাট ফিনিশ দেয়া হয়েছে, ম্যাট ফিনিশের কারণে হাতে ফিঙ্গারের দাগ এতে পড়ে না। ম্যাট ফিনিশের মধ্যে একটা হালকা গ্র্যাডিয়েন্ট ফোনটিকে অালাদা করে তুলেছে।
ফোনের ব্যাক প্যানেলে উপরের কোনোয় তিনটি বড় বড় ক্যামেরা সেন্সর দেয়া রয়েছে যা অনেকটা Samsung এর Galaxy Note20 Ultra এর মত দেখায়।

ফোনটি পাওয়া যাবে Black, White, Blue, Light Brown, Aerospace Edition এসব কালারে।

সবমিলিয়ে ফ্ল্যাগশিপ ফোন হিসেবে ডিজাইন আশানুরূপ ছিলো।

ক্যামেরা এন্ড ডিসপ্লে

ফোনের মোস্ট ইম্পরট্যান্ট পার্ট গুলোর মধ্যে ক্যামেরা একটি। ZTE Axon 30 Ultra 5G এই ফোনের ব্যাকে দেয়া হয়েছে তিন তিনটি ৬৪ এমপি (মেগাপিক্সেল) ক্যামেরা সেন্সর। সাধারণত ফোন গুলোতে আমরা দেখতে পায় একটি বা বড় জোড় দুটি ৬৪ এমপি বা একি রকম সেন্সর দেয়া হয়। বাকি সেন্সর গুলো হয় আরো কম এমপির। কিন্তু Axon 30 Ultra ফোনে তিনটা সেন্সরের প্রতিটিই ৬৪ এমপির। এই তিনটি সেন্সর ছাড়াও ফোনটিতে আরেকটি ৮ মেগাপিক্সেলের টেলিফটো সেন্সর রয়েছে। যেটি দিয়ে রাতের আকাশে স্পেস ফটোগ্রাফিতে আরেকটু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে।
Axon 30 Ultra 5G এর ক্যামেরা কে তুলনা করা হচ্ছে iphone 12 pro এর ক্যামেরার সাথে। Axon 30 Ultra 5G এর ক্যামেরায় HDR, 5x অপটিক্যাল জুম,আল্ট্রওয়াইড ভিউ এর পাশাপাশি রয়েছে আরো নানা ফিচার।

Axon 30 Ultra 5G  এর ক্যামেরা ডিটেইলস নিম্নরুপঃ

☞ 64 MP, f/1.6, 26mm (wide), 1/1.72″, 0.8µm, PDAF, Laser AF, OIS
☞ 64 MP, f/1.9, 35mm (standard), 1/1.97″, 0.7µm, PDAF
☞ 8 MP, f/3.4, 123mm (periscope telephoto), 1/4.0″, PDAF, OIS, 5x optical zoom
☞ 64 MP, f/2.2, 13mm, 120˚ (ultrawide), 1/1.97″, 0.7µm

এছাড়াও ফোনটিতে 8K ভিডিও রেকর্ড করা যাবে 30fps এ। 4K ভিডিও রেকর্ড করা যাবে 30/60 fps এ। এছাড়াও Axon 30 Ultra 5G ফোনটি তে 10 বিটের ভিডিও ভিডিও রেকর্ড করা যাবে এবং আরো রয়েছে gyro-EIS ও HDR10 এর মত দুর্দান্ত ফিচার।
ZTE Axon 30 Ultra 5G ফোনে সেলফি ক্যামেরা হিসেবে দেয়া হয়েছে ১৬ এমপির একটি ক্যামেরা। সামনের এই ক্যামেরা দিয়ে 4K ভিডিও রেকর্ড করা যাবে 30 fps রেটে এবং 1080p ভিডিও রেকর্ড করা যাবে 30 fps এ।

ZTE Axon 30 Ultra 5G ফোনে দেয়া হয়েছে AMOLED কার্ভড ডিসপ্লে। 144Hz রিফ্রেশ রেট 🤨
কালার রয়েছে 1bilion! ডিসপ্লে সাইজ ৬.৬৭ ইঞ্চি (1080 x 2400 pixels) ডিসপ্লে ডেনসিটি 395 ppi.
প্রটেকশন হিসেবে আছে গরিলা গ্লাস ৫। Axon 30  Ultra 5G ফোনের স্ক্রিন টু বডি রেশিও ~91.1%.

ওভারঅল ইটস অ্যা জোশ ডিসপ্লে!

ব্যাটারি এন্ড স্টোরেজ

Axon 30 Ultra 5G ফোনের ব্যাটারি নন রিমুভেবল 4600 mAh, লিথিয়াম পলিমার। সেই সাথে আছে 65W ফাস্ট চার্জিং এন্ড কুয়িক চার্জ 4+.
ফোনটির ব্যটারি একটি কম হলেও স্টোরেজ সেই ঘাটতি পুষিয়ে দেবে।
Axon 30 Ultra ফোনটিতে র্যাম রমের কয়েকটি ভেরিয়েন্ট রয়েছে। ইন্টারনাল স্টোরেজ 128/256/1TB এর সাথে 8/12/18 জিবি র্যামের কম্বিনেশন।
সর্বোচ্চ ১৮ জিবি র্যাম ও ১ টিবি রম পাওয়া যাবে Axon 30 Ultra 5G Aerospace Edition এ।

অন্যান্যঃ

ফোনটির আরেকটি নজরে আনার মতো ফিচার হলো ফোনটির চিপসেট স্ন্যাপড্রাগনের লেটেস্ট Qualcomm Snapdragon 888 5G(5nm). ফোনটি রান করবে অ্যানড্রয়েড ১১ এ।
ZTE Axon 30 Ultra 5G এ জিপিও হিসেবে দেয়া হয়েছে Adreno 660. CPU অক্টাকোর ১×২.৮৪ গিগাহার্টজ।

আরেকবার দেখে নেয়া যাক সেগুলো,যেসব ফিচার একটু বেশি চোখে পড়ার মতো অর্থাৎ স্পেশালঃ

✪ ফোনটির Aerospace Special Edition এ ১ টেরাবাইট স্টোরেজ নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে। সেই সাথে ১৮ জিবি রম!

✪ অসাধারণ ক্যামেরা। ফোনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার হলো তিনটি ৬৪ এমপির বড় ক্যামেরা সেন্সর।

✪ ৮ মেগাপিক্সেলের টেলিফটো সেন্সর।

✪ লেটেস্ট স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮ চিপসেট।

✪ কুয়িক চার্জিং 4+ এর সাথে 65 ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট।

ZTE axon 30 Ultra Aerospace Edition এর দাম শুরু হয়েছে ৯৫০$ থেকে ১১৫০$ পর্যন্ত।
এর বিভিন্ন ভেরিয়েন্টের কারণে দামের এ তারতম্য।

সবার শেষে ✋
অনেক দিন পর ফিরে এলাম গ্রাথোরে। আর্টিকেল লিখতে ভালো লাগলে ও ব্যস্ততার কারণে লিখা হয়ে উঠে না। দেখি কারো আমায় মনে আছে কি না! ঝটপট কমেন্টে বলে ফেলুন। ☺️

বিঃদ্রঃ ফোনের রিভিউর জন্য বিভিন্ন তথ্য ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত হয়েছে, সুতরাং শতভাগ নির্ভূলতা আশা করা যায় না। ভূলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

Related Posts

13 Comments

মন্তব্য করুন