করোনাভাইরাসের এই সংকট মুহূর্তে মানসিক ভাবে সুস্থ থাকার উপায়

পুরো বিশ্বে মারাত্মক ভয়ংকর রূপ ধারণ করা করোনাভাইরাস প্রতিনিয়ত তার প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে কোয়ারেন্টাইন অর্থাৎ মানুষের সঙ্গ যতটা সম্ভব দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তাদের কাছ থেকে এ ভাইরাস ছড়াতে পারবে না ও যারা সুস্থ আছেন তারা এই করোনা দ্বারা আক্রান্ত হবে না।

বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে মনের উপর চাপ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক একটি বিষয়। এছাড়া যাদের সঙ্গ ত্যাগ করে থাকতে হচ্ছে, একাকীত্বজনিত কারণে তাদের মনের উপর নেতিবাচক প্রভাবও তৈরি হচ্ছে। যেহেতু আমাদের শরীর ও মন উভয়ই পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত, এজন্য এই সংকটপূর্ণ সময়ে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়।

সর্বত্রই এখন করোনাভাইরাস সম্পর্কিত নানাবিধ খবর। দেশ ও দেশের বাইরের যেকোন বড় ধরনের খবরের শীর্ষেই থাকছে করোনাভাইরাসের আপডেট। অনবরত এমন খবরগুলো চোখের সামনে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়, আতঙ্ক ঘিরে ধরে চারপাশ থেকে।

এই মানসিক সমস্যা থেকে রেহাই পেতে হলে খবর পড়া ও দেখাকে সীমিত করে ফেলুন। যে সকল জিনিস নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই সেগুলো আমাদের মানসিক অস্থিরতা বাড়িয়ে দেয়। এজন্য দিনের নির্দিষ্ট একটি সময়েই শুধুমাত্র সার্বিক পরিস্থিতি জানার জন্য খবর দেখুন। একই সাথে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কোন উৎস থেকে খবর জানছেন সেটা। নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া খবরকেই গুরুত্ব দিন।

এখন সকল খবর বা তথ্য মুহূর্তের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে এবং সহজলভ্য হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর বদলৌতে। এর ফলে অনবরত সকল আপডেট তথ্য চোখের সামনে আসতে থাকে, যা কিনা মানসিক অস্থিরতাকে বৃদ্ধি করে দেয় অনেক বেশি। এই সমস্যা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চাইলে প্রয়োজনে সকল সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিরতি নিতে হবে সাময়িক সময়ের জন্য। সেই সাথে আপনার ফোনের নোটিফিকেশন মিউট করে রাখতে পারেন।

কোভিড-১৯ অর্থাৎ করোনা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রধান ও প্রথম নিয়ম হলো হাত পরিষ্কার রাখা। সাবানের সাহায্যে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধোয়া। তবে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয়। সবকিছুই নিয়মের মধ্যে থেকে পালন করা উচিৎ। বিশেষ করে যাদের OCD (Obsessive compulsive disorder) এবং দুশ্চিন্তাজনিত সমস্যা আছে তাদের জন্য অতিরিক্ত মানসিক চাপ তৈরি করে এই নিয়মগুলো। এজন্য অতিরিক্ত আকারে চিন্তিত না হয়ে নিয়ম মেনে সময়ে সময়ে হাত ধোয়ার চেষ্টা করুন।

মানুষ জনের সঙ্গ থেকে দূরে থাকাকালীন সময়ে বাড়ির বাইরে বের হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। পাশাপাশি ঘরে মানুষদের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলার নির্দেশও দেওয়া হচ্ছে। এর কারণে একাকীত্ব বোধ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের সবার হাতেই আছে ফোন ও ইন্টারনেট। যা কিনা হাজার মাইল দূরে থাকা মানুষটিকেও কাছে এনে দিতে পারে। ভিডিও কল ও ভয়েস কলের বদৌলতে কেউই এখন আর দূরে নেই। এজন্য একা থাকার সময়টিকে তাই খুব ভালোভাবেই কাজে লাগাতে পারে প্রিয়জনরা, কাছের মানুষদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে। এই কাজটি করলে মন ভালো থাকবে এবং আপনার সময়ও ভালোভাবেই কেটে যাবে।

Related Posts

18 Comments

মন্তব্য করুন