শীত চলে এসেছে। দরোজায় কড়া নাড়ছে পৌষ-পার্বণ। পৌষ-পার্বণ মানেই পিঠা খাওয়ার মৌসুম। এই মৌসুমে বাঙালির খাবারের তালিকায় থাকবে নানা রকমারি পিঠের সম্ভার। বাঙালি জীবনে পিঠার স্থান হৃদয়ে। একটা সময় ছিলো যখন প্রতি শীতে কনের বাড়ি থেকে পিঠা পাঠানো হতো জামাই বাড়িতে। সেটা আবার এক পদের পিঠা নয়, বরং অনেক পদের। এলাকাভেদে অল্প কিছু পিঠা নাম ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকা হয়। বাকী সব পিঠার নাম সব যায়গাতেই একই।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, বর্তমান সময়ের শিশু-কিশোররা খাচ্ছে দোকান থেকে কিনে আনা পিঠা। যেকারণে মা কিংবা দাদিমা’র হাতে বানানো পিঠার অকৃত্রিম স্বাদের থেকে অনেকটাই বঞ্চিত নতুন প্রজন্ম। কিন্তু পিঠা ঘরে বানানো খুব শ্রমসাধ্য কিংবা সময়সাধ্য ব্যাপার নয়। কারণ, চাল তো এখন মেশিনেই ভাঙানো যায়। শুধু একটু নারিকেল কোড়ানোর কাজটা হেসে-খেলে করতে পারলেই হলো। তাই এই পৌষ-পার্বণে হারিয়ে যাওয়া পিঠার স্বাদ ফিরিয়ে আনতে বাড়িতেই বানাতে পারেন রাজকীয় ভাপা পিঠা। রেসিপিটি সংগ্রহে রাখলে চাকরিসূত্রে বাড়ি থেকে দূরে থাকা ব্যাচেলররাও বানাতে পারবেন এটি, উদযাপন করতে পারবেন ভাপা উৎসব!
উপকরণ:
১) সিদ্ধ চালের গুঁড়া: ২ কাপ
২) ভাজা বাদাম: আধ কাপ
৩) গোবিন্দভোগ চালের গুঁড়া: এক কাপ
৪) ভাজা তিল: ২ টেবিল চামচ
৫) লবণ: পরিমাণ মতো
৬) কিশমিশ: ২ টেবিল চামচ
৭) দুধ: আধ কাপ
৮) ক্ষীর: এক কাপ
৯) খেজুরের গুড়: এক কাপ
১০) নারকেল কোরা: এক কাপ
প্রণালী:
সিদ্ধ চালের গুঁড়া ও গোবিন্দভোগ চালের গুঁড়া প্রথমে ভাল করে মিশিয়ে নিন। মেশানোর পর হালকা পানিতে মিশিয়ে চালুনি দিয়ে চেলে নিন। কড়াই গরম করে তাতে নারকেল কোরা, গুড় ওও ক্ষীর, কিশমিশ মিশিয়ে ভাল করে নাড়াচাড়া করে ক্লাস্টার বা পুর বানিয়ে নিন। একটি পাতিলে অর্ধেক পানি ভরে তার উপর মাটির ঢাকনা বসিয়ে ভাল করে ঢাকনাটিকে আটা দিয়ে আটকে দিন। ঢাকনাটির মাঝখানে বেশ কয়েকটি ছিদ্র করতে হবে যাতে সহজে জলীয় বাষ্প বের হতে পারে।
এবার পাতিলটিকে উনুনে বসিয়ে পানি ফুটতে দিতে হবে। অন্যদিকে দুধ দিয়ে আঠালো করে মেখে রাখা চালের গুঁড়ার মণ্ডটিকে গোল করে তাতে নারকেলের পুর ভরে পিঠার আকারে গড়ে নিন। হাঁড়ির পানি ফুটে গেলে আগে থেকে বানিয়ে রাখা পিঠাগুলি পাতিলের মধ্যে দিয়ে দিন। কিছুক্ষণ পর ভাপে পিঠে সিদ্ধ হয়ে গেলে পাতিল থেকে নামিয়ে নিন। পরিবেশন করার আগে উপর থেকে নারকেল কোরা, নলেনগুড়ও ছিটিয়ে দিতে পারেন। ব্যাস, এবার মন ভরে খান রাজকীয় ভাপা পিঠা।