Whatsapp এর নাড়িভুড়ি (জেনে নিন সব তথ্য)

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ভিন্ন ধরনের টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি। তো আজকে আমি আপনাদের সাথে ওয়াটসআ্যপ সম্পর্কে যতকিছু আছে তা সব কথা বলব।

# সূচনাঃ

ওয়াটসআ্যপ হলো বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মোবাইল মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে একটি।বর্তমানে ওয়াটসআ্যপেত মালিক হচ্ছে মেটা অর্থাৎ ফেইসবুক। ফেইসবুকের মূল কয়েকটি আ্যপের মধ্যে একটি হচ্ছে ওয়াটসআ্যপ। বর্তমানে তাদের প্রায় ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটির মতো ব্যবহারকারী রয়েছে।

# ওয়াটসআ্যপের শুরুঃ

এখন থেকে প্রায় ১৩ বছর আগে ওয়াটসআ্যপ ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে ওয়াটসআ্যপ তৈরি হয়। ব্রায়ান একটন ও জান কউম নামক দুইজন ব্যক্তি যারা আগে Yahoo! তে চাকরি করতেন তারা ওয়াটসআ্যপ তৈরি করে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে তারা iPhone ক্রয় করে। সে সময় তারা বুঝতে পারেন আ্যপ স্টোরের ব্যবহারকারী কত ও কোনো একটি আ্যপ কতটা বিখ্যাত হতে পারে। কউম ২০০৯ সালে আ্যপটির নাম ওয়াটসআ্যপ রাখেন। প্রথমদিকের ভার্সনে ওয়াটসআ্যপ প্রায়ই ক্রাশ খেত। তাই কউম নতুন কোনো একটি জব খোঁজার চিন্তা ভাবনা শুরু করে সেসময় একটন তাকে আরো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে বলে। তার কয়েক মাস পরা তারা মেসেজিং সিস্টেম আ্যড করা হয়।

তারপর ভার্সন ২.০ লঞ্চ হওয়ার পরই হটাৎ করে ডাউনোড ২৫০০০০ এ গিয়ে পৌঁছায়। অক্টোবর ২০০৯ এ একটন তার অন্য কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দেন এবং সে তার অন্য ৫ জন বন্ধুদেরকে ওয়াটসআ্যপে ২৫০০০০ ডলার করে ইনভেস্ট করতে বলেন। সে ওয়াটসআ্যপের কো ফাউন্ডারে নিযুক্ত হয়। পরবর্তীতে ভেরিফিকেশন কোডের চার্জটি উঠানোর জন্য ওয়াটসআ্যপ ফ্রি সার্ভিস থেকে একটি পেইড আ্যপে পরিণত হয়। ২০১১ সালে ওয়াটসআ্যপ ইউএস আ্যপ স্টোরের সেরা ২০টি আ্যপের লিস্টে থাকে। ২০১১ সালে সিকুইয়া ক্যাপিটাল ওয়াটসআ্যপ ১৫% এর জন্য ৮ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করে।

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়াটসআ্যপের ২০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী ও ৫০ জন স্টাফ থাকে। পরবর্তীতে সিকুইয়া আরো ৫০ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করে ও ওয়াটসআ্যপের মূল্য ১.৫ বিলিয়ন ডলার ধরা হয়।
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ওয়াটসআ্যপ বলে তাদের ৪০০ মিলিয়নের বেশি মাসিক ব্যবহারকারী রয়েছে।
২০১৪ সালের ১৯ই ফেব্রুয়ারিতে ফেইসবুক ওয়াটসআ্যপকে ১৯ বিলিয়ন ডলাএ দিয়ে ক্রয় করে। ২০১৬ সালে কউম ঘোষণা করেন এখন আর ওয়াটসআ্যপ ব্যবহার করতে আর ১$ বাৎসরিক ফি দিতে হবেনা। ২০১৬ সালের জুন মাসে তারা বলেন তাদের আ্যপে প্রতিদিন ১০০ মিলিয়নের বেশি ভয়েস কল হয়।

# ওয়াটসআ্যপের অবস্থা ও জনপ্রিয়তাঃ

বর্তমানে ওয়াটসআ্যপ অনেক ভালো অবস্থাবে রয়েছে। ওয়াটসআ্যপ বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও ধনী মেসেজিং আ্যপ। বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরে ওয়াটসআ্যপের ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটিরও বেশি ডাউনলোড রয়েছে এবং ১৫৪ মিলিয়ন রিভিউ রয়েছে। প্লে স্টোরে ওয়াটসআ্যপ বিজনেস এর ৫০০ মিলয়নেরও বেশি ডাউনলোড রয়েছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মেসেজিং আ্যপ। বর্তমানে ওয়াটসআ্যপের ২ বিলিয়নেরও বেশি মাসিক আ্যক্টিভ ব্যবহারকারী রয়েছে। newswire.ca নামক এক ওয়েবসাইটের তথ্য মতে মোট ব্যবহারকারীদের প্রায় ২২% অর্থাৎ ৪০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী বাংলাদেশ থেকে। এর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। খ্যাতি লাভের পাশাপাশি তাদের অনেকবার সমালোচনার শিকার হতে হয়। অনেকবার তাদের প্রাইভেসি পলিসি নীতি নিচে সমালোচনা করা হয়। ওয়াটসআ্যপ ব্যবহারকারীদের ডাটা স্টোর ও ব্যবহার করে যাতে তারা আরো টার্গেটিং আ্যড দিতে পারে। এর জন্য তাদের অনেক সমালোচনার শিকার হতে হয়। অনেক ব্যক্তি একে ডাটা চুরির সাথে তুলনা করে৷ অনেক ব্যক্তি এই প্রাইভেসি পলিসির জন্য ওয়াটসআ্যপ ছেড়ে অন্যান্য মেসেজিং আ্যপের দিকে ধাবিত হতে থাকে।

# ওয়াটসআ্যপ কারা ব্যবহার করতে পারবেঃ

তারা প্রায় সকল দেশেই তাদের সার্ভিস চালায়ম বর্তমানে প্রায় ১৮০টি দেশে তাদের ব্যবহারকারী রয়েছে। যেসকল দেশে ওয়াটসআ্যপ রয়েছে এরকম যেকোনো দেশে ওয়াটসআ্যপ একাউন্ট খোলা যাবে ও তা ব্যবহার করা যাবে। বাংলাদেশ থেকেও ওয়াটসআ্যপ ব্যবহার করা যায়। ওয়াটসআ্যপ ব্যবহার করার জন্য আপনার একটি ভ্যালিড মোবাইল নাম্বার লাগবে। তারপর তারা আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠাবে। তাহলে আপনার একাউন্ট খোলা হয়ে যাবে।

# ওয়াটসআ্যপের ইনকামঃ

ওয়াটসআ্যপের মধ্যে আমরা কোনো আ্যড দেখতে পাইনা। কিংবা কোনো প্রকার পেইড কোনো সার্ভিস নেই সম্পূর্ণ আ্যপটি ফ্রী। অনেকের মতে ওয়াটসআ্যপ থেকে মেটা/ফেইসবুক সরাসরি কোনো ইনকাম করে না। তারা ওয়াটসআ্যপ ক্রয় করেছে শুধু ব্যবহারকারীদের ‘Behavioral Data’ কালেক্ট করার জন্য। তারা সেই ডাটা দিয়ে কি ওয়ার্ডের মাধ্যমে আরো বেশি টার্গেটেড আ্যডভার্টাইজিং করতে সাহায্য করে।

  • buissnessofapp এর মতে ২০১৪ সালে ওয়াটসআ্যপ থেকে মেটার বাৎসরিক ইনকাম ছিল প্রায় ১ মিলিয়ন ডলার বা ১০ লক্ষ ডলার।
  • ২০১৬ সালে ওয়াটসআ্যপ থেকে মেটার বাৎসরিক ইনকাম ছিল ০.৮ বিলিয়ন ডলার বা ৮০ কোটি ডলার।
  • ২০১৮ সালে ওয়াটসআ্যপ থেকে মেটার বাৎসরিক ইনকাম ছিল ১.৩ বিলিয়ন ডলার বা ১৩০ কোটি ডলার।
  • ২০২০ সালে ওয়াটসআ্যপ থেকে মেটার বাৎসরিক ইনকাম ছিল ৫.৫ বিলিয়ন ডলার বা ৫৫০ কোটি ডলার।

তো আজকের জন্য এতটুকুই। পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আবার আপনাদের সামনে নতুন কোনো টপিক নিয়ে হাজির হব। ততদিন পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন সেই কামনা নিয়ে আজকের জন্য বিদায় জানাচ্ছি। গ্রাথোরের সঙ্গে থাকুন।

Related Posts

27 Comments

মন্তব্য করুন